প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / বাধ্য হয়ে তালাকনামায় সাইন করলে কি তালাক হয়?

বাধ্য হয়ে তালাকনামায় সাইন করলে কি তালাক হয়?

প্রশ্ন

তালাক বিষয়ে জানতে চাই।

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

বিষয়ঃ তালাক প্রদান বিষয়ক মাসআলা

মুহতারাম,

আমার এক রিলেটিভ বোন তার স্বামী কর্তৃক কাজী অফিসের মাধ্যমে তালাকপ্রাপ্তা হয়েছেন। আমি উক্ত বিষয়টাকে দুইটি সেকশনে বর্ণনা করছি।

প্রথম: তালাকনামায় উল্লেখিত বিষয়

শিরোনাম ছিল: তালাক প্রদানের নোটিশ। তারপর উভয়জনের ঠিকানা উল্লেখপূর্বক লিখা ছিল “বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর সাথে কোনভাবে বনিবনা না হওয়ায় আমি স্ত্রীকে তালাক দিলাম”। তারপর নিচে স্বাক্ষর।

উক্ত তালাকের সংখ্যা এবং তালাকের ধরণ নিরয়ে কাজী সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন এটা স্বামীর নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল সে কোন ধরণের তালাক বা কয়টি প্রদান করেছে। আমরা কেবল স্বাক্ষর গ্রহণ করে কার্যক্রম সম্পন্ন করি।

দ্বিতীয়: ছেলের বক্তব্য অনুপাতে তালাক দু’বার সংগঠিত হয়

“আমি মাসআলা সম্পর্কে জানি না আমার তালাক দেওয়ার কোন ইচ্ছা ছিল না”।

# প্রথমবার আমার মা এবং পরিবার কোনকিছু খাইয়ে বশ করে আমার থেকে স্বাক্ষর নিয়েছেন কাগজে কী লিখা আছে বা নাই আমি সেটা জানতাম না। তখন মেয়ে সেখানে ছিল না বিষয়টা সকলের মধ্যে জানাজানি হলে একজন হুজুরের মাধ্যমে তাওবা ইস্তিগফার করে আবার আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।

# দ্বিতীয়বার বিবাহ হওয়ার পর মানুষ ভয় দেখাতে শুরু করলো কাজটি ঠিক হয়নি। এটা হারাম হয়ে গিয়েছে। এবং আমার মা প্রথমেই বিয়েতে রাজি না থাকায় তিনি সুযোগ পেয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে প্রেশার দিতে  থাকে তালাক দেওয়ার জন্য। তখনো আমার তালাক দেওয়ার কোন নিয়্যাত ছিলো না। কিন্তু আমার মায়ের বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করায় বাধ্য হয়ে দ্বিতীয়বার তালাকনামায় আবারো সাক্ষর করি তখনো আমি তালাকনামায় কী লেখা ছিল, তা না দেখেই সাক্ষর করি তবে আমি বুঝতে পারছিলাম আমি তালাক দিচ্ছি। কিন্তু ইসলামী শরীয়তে দু’ তালাক বা তিন তালাক এবং এ জাতীয় কোন মাসআলা আছে আমার জানা ছিল না। এবং আমার কোন নিয়্যাতও আমার ছিল না আমি তালাক দিচ্ছি এটাই জানি। দ্বিতীয়বার তালাকের পর বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করে কিছু বিষয় জানলাম।

এখন আমরা আবার একসাথে হতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী?

আশা করি মাসআলা জানিয়ে দ্বীনের অনুসরণে সহযোগিতা করবেন।

রফিক শিকদার

সাভার, ঢাকা।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি উপরোক্ত বক্তব্য সত্য হয়, তাহলে মুখে কোন তালাক না বলে থাকলে দুই সূরতের কোন সূরতেই তালাক এক তালাকও পতিত হয়নি। কারণ, জোরপূর্বক তালাকের সাইন নেবার দ্বারা কোন তালাক পতিত হয় না।

সুতরাং উক্ত মেয়ে আপনার স্ত্রী হিসেবেই বাকি আছে। তার সাথে ঘরসংসারে কোন সমস্যা নেই। নতুন করে কোন কিছুই করতে হবে না।

فلو اكره على ان يكتب طلاق امرأته فكتب لا تطلق (رد المحتار-4/440)

إذا كتب الطلاق واستثنى باللسان، أو عكس لا يقع الطلاق الخ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة، قديم-1/378، جديد-1/446)

وقيدنا بكونه على النطق، لأنه لو أكره على أن يكتب طلاق أمرأته، فكتب لا تطلق لأن الكتابة أقيمت مقام العبارة باعتبار الحاجة ولا حاجة هنا، وفى البزازية: أكره على طلاقها، فكتب فلانة بنت فلانة طالق لم يقع ( البحر الرائق-3/346)

رجل أكره بالضرب والحبس على أن يكتب طلاق امرأته، فكتب فلانة بنت فلانة امرأته، طالق… ولم يعبر بلسانه لا تطلق (تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى إيقاع الطلاق بالكتابة-4/532، رقم-6843، الهندية، قديم-1/379، جديد-1/446)

وكذا كل كتاب لم يكتبه بخطه ولم يمله بنفسه لا يقع الطلاق مالم يقر أنه كتابه (رد المحتار-4/456، تاتارخانية-4/531، رقم-6843، هندية، قديم-1/379، جديد-1/446

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *