প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / ‘পর পুরুষের সাথে কথা বললে তুমি তালাক’ বলার পর স্ত্রী যদি প্রয়োজনীয় কথা বলে তাহলেও তালাক পতিত হবে?

‘পর পুরুষের সাথে কথা বললে তুমি তালাক’ বলার পর স্ত্রী যদি প্রয়োজনীয় কথা বলে তাহলেও তালাক পতিত হবে?

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম  মুহতারাম আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।

হুজুর আমি একটা বিপদে পরে আজকে বিগত পাঁচ মাস পর্যন্ত মিজানুর রহমান সাইদ হুজুরের মাদ্রাসা, জামিয়া রহমানিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেছি কিন্তু এই গুনাহগার এখন পর্যন্ত কোন ফয়সালা পাইনি নিরূপায় হয়ে আপনার কাছে ফয়সালা কামনা করছি।

আশাবাদী খুব শিঘ্রই ফায়সালা দিয়ে গুনাহগারকে উপকৃত করবেন।

হুজুর আমি আমার স্ত্রী কে পর্দার জন্য একদিন মোবাইল ফোনে  অনেক গাল মন্দ করে এক পর্যায় বলে ফেলি যাদের সাথে দেখা দেওয়া ইসলামি শরীয়তে যায়েয নেই এমন কার সাথে যদি তুমি একটা কথা বল তাহলে এক তালাকম  দুইটা কথা বল দুই তালাক তিনটা কথা বল তিন তালাক।

তার পর আমার রাগ কমার পরে আমার স্ত্রী অনেক কান্নাকাটি করে এবং আমাকে বলে আপনি আপনার কথা উঠিয়ে নিন তখন আমি বললাম আমি যাহা বলেছি তাহাতো অন্যায়ভাবে অযৌক্তিক বলেছি। জরুরী প্রয়োজনে তো কথা বলতে হবে। তাছাড়া প্রয়োজনে কথা বলাতো ইসলাম জায়েজ করেছেন।

আমি বললাম আমি আমার কথা উঠিয়ে নিলাম। আমার স্ত্রী একটা কওমি মাদ্রাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন।

একদিন সে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে যাবেন। আমাকে বলল আমি এখন কিভাবে যাব? গাড়িওলার সাথে তো কথা বলতে হবে। তখন আমি বললাম প্রয়োজনীয় কথা বললে কিচ্ছু হবেনা।

তারপর তিনি বাড়িতে যাওয়ায় একটা অটো গাড়িতে তিনি একা হয়ে যান। তখন গাড়িওলা তাকে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কোথায় যাবেন? তিনি স্থানের কথা বলেন।  আবার  গাড়িওয়ালা জিজ্ঞেস করলেন আপনি কোথায় থাকেন?

এভাবে  গাড়িওয়ালা তাকে চার পাঁচটা প্রশ্ন করেন আমার স্ত্রী গাড়িতে একা হওয়ার কারণে ভয়ে সব প্রশ্নের উত্তর  দিয়েছেন।

এক কথায় তাতে তিনটা কথার বেশি হয়েছে।  এখন আমাদের শরিয়তের বিধান কি? জানালে চির কৃতজ্ঞ হব।

অনেক মুফতী সাহেবদের কাছে ঘুরেছি। কেউ বলে তালাক হয়ে গেছে আবার কেউ বলে হয়নি।

কেউ আমাকে সম্পূর্ণভাবে ফয়সালা দেয়নি। শেষ ভরসা করে আপনার কাছে ফয়সালা কামনা করছি।

আশাবাদী আপনি আমাদের ফয়সালা জানাবেন ওয়াসসালাম।

প্রশ্নকর্তা- আবদুল্লাহ

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবেন এমন কোন কথা যেহেতু আপনার নিয়তেও ছিল না এবং আপনার উচ্চারিত শব্দেও ছিল না। তাই উক্ত তা’লীকটি প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় উভয় কথার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয়ে যাবে। সেই হিসেবে আপনার স্ত্রী যখন ড্রাইভারের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলেছে, তখন তার উপর তিন তালাকই পতিত হয়ে গেছে।

তাই উক্ত স্ত্রীর সাথে আপনার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। তাই তার সাথে সংসার করা আপনার জন্য জায়েজ হবে না।

عَنْ يُونُسَ قَالَ: كَانَ الْحَسَنُ يَقُولُ: ” لَوْ أَنَّ رَجُلًا قَالَ: إِنْ دَخَلْتُ دَارَ بَنِي فُلَانٍ، فَامْرَأَتِي طَالِقٌ، فَيَنْسَى فَيَدْخُلُهَا أَوْ دَخَلَهَا وَهُوَ لَا يَعْلَمُ، قَالَ: كَانَ يَجْعَلُهُ مِثْلَ الْعَهْدِ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَ فَيَقُولُ: إِلَّا أَنْ أَنْسَى ” (مصنف ابن ابى شيبة-10/156، رقم الحديث-19388)

عَنِ الْحَسَنِ، فِي رَجُلٍ قَالَ: إِنْ دَخَلْتِ دَارَ فُلَانٍ فَأَنْتِ طَالِقٌ وَاحِدَةً، فَدَخَلَتْ وَهُوَ لَا يَشْعُرُ قَالَ: «إِنْ كَانَ غَشِيَهَا فِي الْعِدَّةِ فَغِشْيَانُهُ لَهَا مُرَاجَعَةٌ، وَإِلَّا فَقَدْ بَانَتْ مِنْهُ بِوَاحِدَةٍ» (مصنف ابن ابى شيبة-9/519، رقم الحديث-18086)

ولا أضافه إلى شرط وقع عقيب الشرط مثل أن يقول لإمرأته أن دخلت الدار فأنت طالق (هداية-2/385)

وتنحل اليمين بعد وجود الشرط مطلقا لكن إن وجد فى الملك طلقت (الدر المختار مع رد المحتار-4/609، تبيين الحقائق-3/118

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামী ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …