প্রশ্ন
মাননীয় মুফতি সাহেব হুজুর
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
“আমার মা খালা মামারা মোট ৪ ভাই বোন।
বড় মামার ৭ সন্তান, ৩ ছেলে ৪ মেয়ে।
আমার আম্মা মেঝ। আমরা ৩ ভাই ২ বোন।
আমার খালা, তার মাত্র ৩ মেয়ে।
ছোট মামার কেবল ২ মেয়ে, কোন পুত্র সন্তান নেই, তার সাড়ে ১৭ কাঠা জমি আছে।
বড় মামা প্রথমে ইন্তেকাল করেছেন পরে ছোট মামা ইন্তেকাল করেছেন। পরে আমার আম্মা ইন্তেকাল করেছেন। শুধু মাত্র খালাম্মা বেঁচে আছেন”।
মোটকথা হল, ছোট মামা যখন ইন্তেকাল করেন, তখন জীবিত ছিল তার স্ত্রী, দুই মেয়ে, আপন দুই বোন এবং বোনের সন্তানরা ও বড় ভাইয়ের সন্তানরা।
এখন আমাদের জানার বিষয় হল, ছোট মামার সম্পত্তি থেকে কে কতটুকু অংশ পাবে?
প্রশ্নকর্তা-
মুজিবুর রহমান
পুর্ব বানিয়া খামার
(লোহার গেট)
বি কে মেইন রোড, খুলনা-৯১০০
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
আপনার ছোট মামার ইন্তেকালের পর কাফন-দাফন ও তার ঋণ আদায়ের পর তার যত সম্পত্তি থাকে, তা প্রথমে ২৪ ভাগ করা হবে।
সেই ২৪ ভাগের ১৬ ভাগ সম্পদ পাবে তার দুই মেয়ে তথা আপনার মামাত বোনেরা।
সেই ২৪ ভাগের ৩ ভাগ পাবে তার স্ত্রী তথা আপনার মামী।
সেই ২৪ ভাগের ৫ ভাগ পাবে তার দুই বোন তথা আপনার মা এবং আপনার খালা।
তার বড় ভাইয়ের ছেলে-মেয়েরা তথা আপনার বড় মামার সন্তানরা কিছুই পাবে না।
তারপর ২৪ ভাগ থেকে আপনার মা ও খালার পাওয়া ৫ ভাগ আপনার মা এবং আপনার খালার মাঝে সমানভাবে বন্টন করা হবে। অর্থাৎ উভয় জন আড়াই ভাগ করে পাবেন ৫ ভাগ থেকে।
আর আপনার মা ইন্তেকাল করার কারণে আপনার মায়ের পাওয়া সেই আড়াই ভাগ সম্পদকে আপনাদের ৩ ভাই ও ২ বোনের মাঝে বন্টন করা হবে দুই মেয়ে সমান এক ছেলে মূলনীতির আলোকে। সেক্ষেত্রে উক্ত সম্পদকে ৮ ভাগে ভাগ করে ৬ ভাগ পাবেন আপনারা ৩ ভাই। আর ২ ভাগ পাবেন আপনার দুইবোন।
يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ فَإِنْ كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِنْ كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ[٤:١١
আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। কিন্তু কেবল কন্যা যদি দুয়ের অধিক হয়, তাহলে তাদের জন্য পরিত্যাক্ত সম্পত্তির দুই তৃতিয়াংশ, আর মাত্র এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধাংশ নির্ধারিত। {সূরা নিসা-১১}
وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم ۚ مِّن بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۗ [٤:١٢]
স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। {সূরা নিসা-১২}
يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلَالَةِ ۚ إِنِ امْرُؤٌ هَلَكَ لَيْسَ لَهُ وَلَدٌ وَلَهُ أُخْتٌ فَلَهَا نِصْفُ مَا تَرَكَ ۚ وَهُوَ يَرِثُهَا إِن لَّمْ يَكُن لَّهَا وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَتَا اثْنَتَيْنِ فَلَهُمَا الثُّلُثَانِ مِمَّا تَرَكَ ۚ وَإِن كَانُوا إِخْوَةً رِّجَالًا وَنِسَاءً فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۗ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ أَن تَضِلُّوا ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ [٤:١٧٦
মানুষ আপনার নিকট ফতোয়া জানতে চায় অতএব, আপনি বলে দিন, আল্লাহ তোমাদিগকে কালালাহ এর মীরাস সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেন, যদি কোন পুরুষ মারা যায় এবং তার কোন সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকে, তবে সে পাবে তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদি নিঃসন্তান হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। তা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। তোমরা বিভ্রান্ত হবে আল্লাহ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত। {সূরা নিসা-১৭৬}
واما للأخوات لاب وام، فاحوال خمس، النصف للواحدة، والثلثان للاثنتين فصاعدة، ومع الأخ لاب وام للذكر مثل حظ الأنثيين يصرن به عصبة لاستوائهم فى القرابة الى الميت، ولهن الباقى مع البنات او بنات الإبن لقوله عليه السلام- اجعلوا الأخوات مع البنات عصبة…….. وبنوا الأعيان والعلات كلهم يسقطون بالإبن وابن الإبن وان سفل (السرجى فى الميراث-15-17
وفىه ايضا- الاقرب فالاقرب يرجحون بقرب الدرجة اعنى اولهم بالميراث جزء الميت اى البنون ثم بنوهم وان سفلوا ثم اصله اى الأب، ثم الجد اى اب الأب وان على، ثم جزء ابيه اى الاخوة، ثم بنوهم ان سفلوا، ثم جزء جده اى الاعمام، ثم بنوهم وان سفلوا، ثم يرجحون بقوة القرابة (السراجى فى الميراث-32
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।