রাসূল ﷺ কে আন্তঃধর্মীয় ঐক্যের মত কুফরি মতবাদের আহ্বায়ক প্রমাণে কুরআনের আয়াতের অপব্যবহার
আল্লাহর শেষ রাসূল মুহাম্মদ (স.) সকল জাতির উদ্দেশে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন,”গ্রন্থের অধিকারী সকল সম্প্রদায়,একটি বিষয়ের দিকে এসো যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক,তা হলো- আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারও ইবাদত করব না,তাঁর সাথে কোন অংশীদার সাব্যস্ত করব না,আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে প্রভু বলে মানব না(সূরা ইমরান-৬৪)”।[সবার ঊর্ধ্বে মানবতা-১০]
উক্ত আয়াত দ্বারা হিযবুত তাওহীদ রাসূল ﷺ কে আন্তঃধর্মীয় ঐক্যের মত কুফরি মতবাদের আহ্বায়ক হিসেবে প্রমাণের অপচেষ্টা করেছে।
কিন্তু হাদীসের ভাষ্য এক নিমিষেই তাদের এই অপচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।( আলহামদুলিল্লাহ)
আল্লাহর রাসূল ﷺ দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের নিকট যে চিঠি প্রেরণ করেছিলেন তাতে লিখা ছিলঃ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ. مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ. سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ{يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ}
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
(পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ -এর পক্ষ হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি। – শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সকল প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে।
‘‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করি , কোন কিছুকেই যেন তাঁর শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।’’ (সূরা আল-ইমরান-৬৪)[সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭]
বিজ্ঞ পাঠক! রাসূল ﷺ হিরাক্লিয়াসকে চিঠির মাধ্যমে ধর্মহীনতার দাওয়াত দেন নি।বরং তাকে ইসলাম গ্রহণ করতে বলেছেন এবং ইসলাম গ্রহণ না করার ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন করেছেন।
এক্ষেত্রে দলিল হিসেবে রাসূল ﷺ সূরা আল ইমরানের সেই আয়াতই ব্যবহার করেছেন যে আয়াত দিয়ে হিযবুত তাওহীদ আন্তঃধর্মীয় ঐক্যের দিকে আহ্বান করছে।
যেখানে হিযবুত তাওহীদ কোনো বিশেষ ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করাকে গুরুত্বহীন মনে করে , সেখানে রাসূল ﷺ একমাত্র ইসলামের দিকেই দাওয়াত দিতেন।
রাসূল ﷺ এর দাওয়াত ও হিযবুত তাওহীদের দাওয়াতের এমন বিপরীতমুখী অবস্থান দেখে আশা করি বিজ্ঞ পাঠকের নিকট ইসলাম ও হিযবুত তাওহীদের পার্থক্য এখন দিবালোকের ন্যয় স্পষ্ট ।
আল্লাহ তা’য়ালার কুরআনের আয়াতের এমন অপব্যবহার এবং রাসূল ﷺ কে আন্তঃধর্মীয় ঐক্যের আহ্বায়ক হিসেবে প্রচার করার ধৃষ্টতা দেখানোর পরও এ কথা বলার আর কোন সুযোগ আছে কি যে, হিযবুত তাওহীদ ইসলামী দল বা এটি তাওহীদের দাওয়াত দেয়?