লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
একতা আজ সময়ের দাবী
মুসলমনাদের অবস্থা এখন বড়ই খারাপ। কোথাও তারা নিরাপদ নয়। না দেশে, না বিদেশে। না মুসলিম রাষ্ট্রে, না বিধর্মী রাষ্ট্রে। গোটা পৃথিবীতে যখন ইসলামের শত্রুরা মুসলমানদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মুসলমান দেখলেই “সন্ত্রাসী” উপাধী দিয়ে হেনস্থা করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসী ধর্ম, অসাম্প্রদায়িক ধর্ম আখ্যা দেওয়ার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে উপর্যুপরিভাবে। মুসলমানদের ইসলামী শিক্ষালয়কে সন্ত্রাসীকেন্দ্র আখ্যা দেবার হিন কর্মকান্ডে লিপ্ত। ঠিক এমনি সময় মুসলমানরা আজ শতধা বিভক্ত। মুসলমনদের মাঝে ধর্মীয় কোন্দলের সয়লাব।
অথচ এখন সবচে’ প্রয়োজন হল মুসলমানদের মাঝে একতা সৃষ্টি করা। ঐক্যমত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। নবীজী সাঃ এর কালিমায়ে তায়্যিবার প্লাটফর্মে এক হওয়া আজ সময়ের আবশ্যকীয় দাবি।
যখন মুসলমানদের দুশমনরা মুসলমানদের উপর হামলা করে, তখন তারা এটা দেখেনা যে, সে কি দেওবন্দী না বেরেলবী? সে কি মুকাল্লিদ না গায়রে মুকাল্লিদ? সে কি কিয়াম করে না করেনা? সে কি মাজারে যায় কি যায়না? সে ইমামের পিছনে কিরাত পড়ে না পড়েনা?
“লোকটি মুসলমান” কেবল এই অপরাধেই হত্যা করা হয়।
ইংরেজদের আগমনের আগে এই উপমহাদেশে ধর্মীয় বিভেদ ছিলনা
ইতিহাস সাক্ষ্য ইংরেজদের আসার আগে এই উপমহাদেশে কোন বাদশা ছিলনা যে মাযহাবের বিরোধিতা করত। কোন ধর্মীয় কোন্দল ছিলনা। টিপু সুলতান রহঃ, মোঘল সম্রাজ্যের সকল মোঘল বাদশা, শাহজাহান, ঘুরি, জাহাঙ্গীর, বাদশা যফরসহ সকলেই হানাফী মাযহাবী ছিল। আকবর সে নতুন ধর্ম উদ্ভাবন করার অপচেষ্টা করেছিল, সেও মাযহাবের ইমামদের বিরোধিতা করেনি। কাউকে গালি দেয়নি।
এ উপমহাদেশে যত মুসলিম হাকিম বংশীয়, যত গোলাম বংশীয় আর যত ঘুরি বংশীয়, আর যত খিলজী বংশীয়, সাদাত বংশীয়, তুঘলোক বংশীয়, আর সুরী অথবা মোগল বংশীয় বাদশা ছিল, সবাই ছিলেন সুন্নী হানাফী। এই দেশে ইসলাম, কুরআন-হাদিস আনয়নের ভাগ্য কেবল হানাফীদেরই ললাটেই আছে। সুতরাং নওয়াব সিদ্দীক হাসান খানও একথা স্বীকার করে লিখেন যে, “যখন থেকে ইসলাম এ এলাকায় আসে, তখন থেকে হিন্দুস্তানের মুসলমানদের সার্বিক অবস্থা হল এই যে, যেহেতো অধিকাংশ লোক বাদশার মত-পথ এবং মাযহাবের অনুসরণকেই পছন্দ করে, একারণেই সূচনা থেকে এখন পর্যন্ত তারা হানাফী মাযহাবেই প্রতিষ্ঠিত। আর এখানে এই মাযহাবের আলেম এবং ফারেগীনরাই বিচারক আর মুফতী ও হাকিম হয়ে থাকে”। (তরজুমানে ওহাবিয়্যাহ-১০)
৫৮৯ হিজরীতে সুলতান মুয়িজুদ্দীন সাম ঘুরী আসলেন। আর দিল্লী পর্যন্ত পদানত করেন। সে সময় থেকে নিয়ে ১২৭৩ হিজরী পর্যন্ত আপনারা এই দেশের ইতিহাস পড়ে দেখুন। মাহমুদ গজনবী রহ. থেকে নিয়ে আওরঙ্গজেব পর্যন্ত, এমনকি সাইয়্যিদ আহমাদ শহীদ বেরলবী রহ. পর্যন্ত কোন গায়রে হানাফী গাজী, বিজেতা অথবা মুজাহিদ পাওয়া যাবেনা।
কাশ্মীরের ব্যাপারে ঐতিহাসিক ফেরেস্তা লিখেন-“আমি দেখেছি এই দেশের সবাই ছিলেন হানাফী মাযহাবপন্থী”।(তারীখে ফেরেস্তা-৩৩৭) আর এর পূর্বে রাশেদী এর বরাতে তিনি লিখেন-“হযরত শায়েখ আব্দুল হক সাহেব মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. বলেন-“اهل الروم وما وراء النهر والهند كلهم حنفيون،ط” অর্থাৎ মা ওরাউন নাহার এবং হিন্দের সবাই ছিলেন হানাফী”। (তাহসীলুত তায়াররুফ-৪৬) আর হযরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহ. বলেন-“আহলে ইসলামের বড় অংশ ইমাম আবু হানীফা রহ. এর অনুসারী ছিল”। (মাকতুবাত-২/৫৫) শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. বলেন-“সকল শহরের আর সকল দেশের বাদশা ছিল হানাফী। আর কাযী, অধিকাংশ শিক্ষক ও অধিকাংশ সাধারণ মানুষ ছিল হানাফী” (কালিমাতে তায়্যিবাত-১৭৭) এছাড়াও তিনি লিখেন যে, অধিকাংশ দেশ এবং প্রায় শহরেই আবু হানীফা রহ. এর মাযহাব অনুসারী ছিল। (তাফহীমাতে ইলাহিয়া-১/২১২) অর্থাৎ অধিকাংশ ইসলামী রাষ্ট্র এবং দুনিয়াব্যাপী অধিকাংশ মুসলমান ছিল হানাফী। ইসলামী দুনিয়ার অধিকাংশ অংশ হানাফী অনুসারী ছিল। আর এই মাযহাবের বদৌলতে কমপক্ষে হাজার বছর পর্যন্ত সমগ্র ইসলামী দুনিয়ায় বিধান প্রয়োগিত হত। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. সত্য মাযহাবের পরিচয় এভাবে দিয়েছেন যে, “দ্বীন ইসলামের প্রসারের সাথে দ্বীনে ইসলামের উপর হামলা এবং ফিতনার প্রতিরোধ করা হবে”।
এটাইতো স্পষ্ট যে, পাক ও হিন্দে দ্বীনে ইসলামের প্রসারে হানাফীদের সাথে শরীক কেউ নাই। সারা দেশের মাঝে ইসলাম হানাফীরাই ছড়িয়েছে। আর কাফেররা ইসলামে প্রবিষ্ট হয়ে হানাফীই হয়েছে। এই দেশে ইসলামের উপর দু’টি কঠিন সময় এসেছে। একটি হল সম্রাট আকবরের নাস্তিকতার ফিতনা। দ্বিতীয় হল ইংরেজদের শাসন ও শোষণ।
আকবর যখন ইমামে আজমের অনুসরণ ছেড়ে দিয়ে নাস্তিকতার দাওয়াত দিতে শুরু করে, তখন মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহ. এবং শাইখ আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. এর প্রতিরোধে এই নাস্তিকতার ফিতনা মিটে যায়। আর ইংরেজদের শোষণের প্রতিরোধে হানাফীরাই এগিয়ে আসে। গায়রে মুকাল্লিদ নওয়াব সিদ্দীক হাসান লিখেন-“কেউ শোনেনি যে, কোন একেশ্বরবাদী, কুরআন ও সুন্নাতের অনুসারী ব্যক্তি ইংরেজদের সাথে বিদ্রোহ করার অপরাধে অপরাধী হয়েছে। অথবা ইবলীসী ফিতনা আর বিদ্রোহের উপর অগ্রসর হয়েছে। যত লোক খারাপ ও মন্দ করেছে, আর ইংরেজ ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, তারা সবাই হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিল। (তরজুমানে ওহাবিয়া-২৫)
কিন্তু যখন ইংরেজরা আসল। ওরা দেখল এদেশের মুসলমানরা তাদের ধর্মের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ। তাদের মাঝে কোন অভ্যান্তরীণ বিভেদ নাই। একতার এক স্বর্গীয় বাঁধনে তারা জড়িয়ে আছে। তাই ইংরেজরা তাদের বহুল প্রচলিত “ডিভাইট এন্ড রোলস” তথা “পরস্পরে বিভেদ সৃষ্টি করে তাদের উপর শাসন করা হবে” এই নীতি বাস্তবায়িত করতে উঠেপরে লেগে গেল। মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয় বিভেদ-কোন্দল সৃষ্টির জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে দিল। টাকা দিয়ে, অর্থ সম্পদ দিয়ে, বিত্ত-বৈভব দিয়ে কিছু দুনিয়ালোভি আলেমদের নির্বাচিত করে। অবশেষে ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের ফসল হয়-মীর্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী, বেরেলবী। তাদের শামসুল ওলামার উপাধী দেয়।
অথচ জেলে গেলেন, শাইখুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দী রহঃ, শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ কে যেতে হল মাল্টার জেলে। থানবী রহ. “ইংরেজদের পণ্য ক্রয় করা হারাম” হবার ফাতওয়া দিলেন। হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহঃ ও কাসেম নানুতবী রহঃ এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারী হল। রশীদ আহমাদ গঙ্গুহী রহঃ কে আদালতে ডাকা হল। যা স্পষ্টই প্রমাণ করে যে, তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে কতটা অগ্নিগর্ভ ছিলেন। আর ইংরেজরা তাদের কতটা ভয় পেত। স্বাধীনতার জন্য তারা কতটা উদ্বেগ নিয়ে কাজ করেছেন। আর কতটা মাথ্যাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারা ইংরেজদের।
“আহলে হাদীস” নাম রাণী ভিক্টোরিয়ার দেয়া নাম!
একদিকে হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ এর ফাতওয়া যে, “ইংরেজদের দলে ঢুকা হারাম”। আর আশরাফ আলী থানবী রহঃ এর ফাতওয়া যে, “ইংরেজদের পণ্য ব্যবহার হারাম”।
অপরদিকে ইংরেজদের পদলেহী, পা চাটা গোলাম একদল ঈমান বিক্রেতাদের ক্রয় করে নিল। তাদের মাঝে ছিল বাটালবী। তাদের মাঝে একজন কিতাব লিখল-“আল ইকতিসাদ ফি মাসায়িলিল জিহাদ”। যাতে সে লিখে যে, ইংরেজদের শাসন ইসলামী রাষ্ট্র। আর ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম।
এই বই লিখার পর তাকে শামসুল উলামা উপাধী দেয়া হয়, তাকে মেডেল দেয়া হয়। অনেক পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
যখন এদেশের মানুষ দেখল যে, ওরা ইংরেজদের দালাল। তখন তাদের “ওহাবী” বলে গালি দেয়া শুরু হয়। ওহাবী সেই যুগে তাদের বলা হত-যারা দেশের গাদ্দার। দেশদ্রোহী। ওরা যেখানেই যেত সাধারণ মানুষ তাদের দেখে বলত-এইতো ওহাবী চলে এসেছে। ওরা বাজারে গেলেও তাদের মানুষ বকা দিত-সবাই বলত বাজারে ওহাবী চলে এল।
যখন তাদের সবাই ঘৃণার চোখে দেখতে লাগল, তখন নিজেদের সম্মানিত করার জন্য ওরা রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে গিয়ে আবেদন করল যে, আমরাতো আপনাদের কথা অনুযায়ী কিতাব লিখে আপনাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম বলেছি, এখন আমাদের সবাই ধিক্কার দিচ্ছে। গালি দিচ্ছে “ওহাবী” বলে। আমাদের জন্য সম্মানজক কোন পদবীর ব্যবস্থা করুন। তখন তাদের নাম দেয় রাণী ভিক্টোরিয়া “আহলে হাদীস”। এই হল আহলে হাদীসদের প্রতিষ্ঠার প্রকৃত ইতিহাস।
নিজেদের সংগঠনের রেজিষ্টার করায় ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে। অথচ দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার জন্য ইংরেজদের কাছে যাওয়া হয়নি। হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহঃ ও আশরাফ আলী থানবী রহঃ এর খানকার অনুমোদনের জন্য ইংরেজদের কাছে যাওয়া হয়নি। কারণ তারাতো ইংরেজদের শাসন মানেন নি। তাদের শত্রু। তাদের থেকে অনুমোদন নেবার প্রশ্নই উঠেনা। দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠাই হয়েছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য।
কিন্তু ইংরেজদের দালাল কথিত আহলে হাদীস গ্রুপ নিজেদের দালালিপনা পূর্ণ করার জন্য ইংরেজদের কাছ থেকে অনুমোদনকৃত নাম নেয় “আহলে হাদীস”।
এই আহলে হাদীস নাম কুরআন সুন্নাহ থেকে প্রাপ্ত নাম নয়। এটা বুখারী থেকে প্রাপ্ত নয়, এটা সিহাহ সিত্তার কিতাব থেকে প্রাপ্ত নয়। এটা ইংরেজদের থেকে প্রাপ্ত নাম। ওরা সর্ব প্রথম ফিরক্বা আহলে হাদীস নামে আবির্ভূত হয়। ওদের মূল নমুনা দেখা যায় আব্দুল্লাহ বিন সাবার কর্মকান্ড থেকে। আব্দুল্লাহ বিন সাবা যেমন মুসলমনাদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে সুচারুভাবে। ঠিক একই কাজ করছে এই ইংরেজ প্রসূত দল গায়রে মুকাল্লিদ আহলে হাদীস গ্রুপ।
ওরা বলে যে, সে সময় ইংরেজ শাসন ছিল, তাই তারা তাদের থেকে রেজিষ্টার করেছে। ইংরেজদের দালালী করার জন্য নয়।
ইংরেজদের দালালদের আমরা বলি-যদি রেজিষ্টার করা এতটাই দরকার হত, কাসেম নানুতবী রহঃ কেন দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করতে ইংরেজদের থেকে রেজিষ্টার দরকার হয়নি কেন? রশীদ আহমাদ গঙ্গুহী রহঃ এর কেন দরকার হয়নি। কেন হাজী মুহাজেরে মক্কী রহঃ এর কেন দরকার হয়নি? কেন আশরাফ আলী থানবী রহঃ এর তার খানকার রেজিষ্টারের কেন দরকার হয়নি?
একটাই কারণ দেওবন্দী ওলামায়ে হযরাতের ইংরেজদের দালালী করার দরকার হয়নি। তাদের পা চাটতে তারা পারবেন না। তাই তাদের ইংরেজদের পদলেহন করে রেজিষ্টার করারও দরকার হয়নি। অপরদিকে গায়রে মুকাল্লিদরা সাধারণ মানুষের দালাল গালি শুনা থেকে বাঁচার জন্য ইংরেজদের বাচ্চা এই আহলে হাদীসদের নিজেদের সংগঠনের নাম আহলে হাদীস মঞ্জুর করাতে হল। ওদের স্থান কোথাও ছিলনা, কেউ তাদের আশ্রয় দেয়নি, না কোন মসজিদে। না কোন খানকায়, না কোন মাদরাসায়। আশ্রয় পেল কেবল রাণী ভিক্টোরিয়ার দরবারে।
যেখানে গোটা ভারত অগ্নিগর্ভ হয়ে আছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে। সেখানে ইংরেজদের পা চেটে নিজেদের মজবুত করে নেয় এই দালাল গোষ্ঠি।
“বিশেষজ্ঞ ছাড়াই নিজে নিজে সব বুঝে নিবে” এমন গাঁজাখুরী কথা ইংরেজদের আমলের আগে কেই বলেনি
ইংরেজদের আসার আগে এরকম কোন দল ছিলনা যারা ফুক্বাহায়ে কিরামকে গালি দিত। ফুক্বাহাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখত। ফিক্বহ সম্পর্কে মানুষকে বিভ্রান্ত করে পথভ্রষ্ট করেছে। মাযহাব বিরুদ্ধবাদী কেউ ছিলনা। কেউ একথা বলেনি যে, যে সকল লোক পাক-নাপাকের মাসআলা পর্যন্ত জানে না। নামাযের নিয়ম সঠিকভাবে বুঝেনা, সেই সকল লোক কোন ফক্বীহ এর অনুসরণ ছাড়াই সরাসরি কুরআন সুন্নাহ থেকে মাসআলা বের করে আমল করবে। এরকম গাঁজাখুরী কথা ইতোপূর্বে কেউ বলেনি।
যেমন সকল ব্যক্তির মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে, তেমনি কুরআনে কারীম এবং রাসূল সাঃ লাখ হাদীস থেকে যেটাকে মনে হবে সেটাকেই আমল করবে। কোন মুজতাহিদের দরকার নাই। কারো বুঝানোর দরকার নাই। কোন শিক্ষকের দরকার নাই। জন্ম থেকেই বগলে বুখারী নিয়ে জন্ম নিবে। বুখারী খুলে যা বুঝবে তাই আমল করবে।
এই গাঁজাখুরী দল ইংরেজ আসার আগে ছিলনা। রাণী ভিক্টোরিয়া থেকে রেজিষ্টার করে, অনুমোদিত করে এই বাতিল ফিরক্বা বিভ্রান্তির প্রসার শুরু করে।
“তোমরা মুহাম্মদী না হানাফী”? এই প্রশ্নটি কি যৌক্তিক? না হাস্যকর?
গোটা পৃথিবীর মুসলিম এলাকায় মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি-কোন্দল সৃষ্টি করার জন্য পায়তারা করে যাচ্ছে কথিত আহলে হাদীস দলটি। মুসলমানদের ঘরে ঘরে, এলাকায় এলাকায়, মসজিদে মসজিদে গিয়ে বলছে-“তোমরা মুহাম্মদী না হানাফী?”
সাহাবায়ে কিরামের মাঝে এ ব্যাপারে ঐক্যমত্ব ছিল যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. সবচে’ উত্তম ছিলেন। এজন্য কাউকে আবু বকরী বলা হয়না। তারপর হযরত ওমর রা. এর ব্যাপারেও কোন মতভেদ ছিলনা। এজন্য কাউকে ওমরী বলা হয়না। হযরত উসমান রা. এবং হযরত আলী রা. এর ব্যাপারে কিছু ইখতিলাফ ছিল।
জমহুর সাহাবীরা হযরত উসমান রাঃ কে হযরত আলী রা. থেকে উত্তম বলতেন। স্বাতন্ত্রতার জন্য হযরত উসমানকে উত্তম বলাকারীদের উসমানী বলা হয়। আর আলী রা. কে উত্তম বলাকারীদের আলিয়ী বলা হয়।
কিছু তাবেয়ীকে উসমানী এবং আলিয়ী বলার বর্ণনা বুখারী শরীফের ১ নং খন্ডের ৪৩৩ নং পৃষ্টায় আছে।
কুরআনে পাকের ক্বিরাতের মাঝে যখন ইখতিলাফ হয় তখন স্বাতন্ত্রতার জন্য ক্বারী আসেম রহ. এর ক্বিরাত এবং ইমাম হামযাহ রাহ. এর ক্বিরাত রাখা হল। এটাকে কেউতো এই উদ্দেশ্য নেয়নি যে, এটা আল্লাহর কুরআন নয়, বরং ক্বারী আসেমের বানানো! হাদিসের মাঝে মতভেদ হলে বলা হয় এটা আবু দাউদের হাদিস আর এটা বুখারীর হাদিস। এই কথার উপরও কেউ কুফরীর নিসবত করেনাতো!
ঠিক এমনি হাল ফিক্বহী বিষয়ে মতভেদের সময় ‘হানাফী” আর “শাফেয়ী” বলাটা। আমরা ঈসায়ীদের বিপরীতে নিজেকে মুসলমান বলি। আহলে বিদআতি খারেজী মুতাজিলীদের বিপরীতে নিজেদের আহলে সুন্নাত বলি। আর শাফেয়ীদের বিপরীতে নিজেদের হানাফী বলি।
যেমন আমরা ভারতীদের বিপরীতে নিজেদের বাংলাদেশী বলি। গাজীপুরের বিপরীতে এসে বলি নরসিংদী।নরসিংদী, গাজীপুরী, বাংলাদেশীকে মেনে বলা হয়। ছেড়ে নয়। ওদের এই প্রশ্নটিই একটা ধোঁকাবাজি। এরকম প্রশ্ন ফাইজলামী ছাড়া কিছু নয় যে, আজ শনিবার নাকি ৫ তারিখ? আজ নভেম্বর নাকি রবিবার? প্রশ্ন হবে আজ শনিবার নাকি রবিবার? আজ নভেম্বর নাকি ডিসেম্বর? সুতরাং এক্ষেত্রেও প্রশ্ন হবে-“তুমি মুহাম্মদী না ঈসায়ী? তুমি হানাফী না শাফেয়ী?” কিন্তু একথা বলা ভুল এবং হাস্যকর যে, “তুমি পাকিস্তানী না পাঞ্জাবী? আজ নভেম্বর না শনিবার? তুমি হানাফী না মুহাম্মদী?”
আমলের ক্ষেত্রে সন্দেহ সৃষ্টির এক ভয়ানক খেলায় মত্ত ওরা
গায়রে মুকাল্লিদরা আজ ব্যাপকভাবে বিভ্রান্তি ছড়াতে শুরু করেছে। ফাযায়েলে আমালের বিরুদ্ধে লেগেছে। যেই কিতাব যখন কোন এলাকায় ঢুকেছে সেই এলাকায় দাড়িহীন লোক দাড়ি রাখছে। সুদখোর সুদ ছাড়ছে। ঘুষখোর ঘুষ ছেড়ে দিচ্ছে। গোটা পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে ঢুকে মানুষকে হেদায়েতের আলোয় আলোকিত করছে। সেই কিতাবের বিরুদ্ধে লেগেছে ইংরেজদের দোসর এই বাতিল ফিরক্বা।
আজ নামের মুসলমানরা পাক-নাপাকের মাসআলা জানে না। নখপালিশ দিয়ে অযু করছে তাদের অযু হচ্ছেনা, গোসল হচ্ছেনা। যদি আহলে হাদীস গ্রুপ ইংরেজদের দোসর না হত, তাহলে তারা তাবলীগ জামাতের বিরুদ্ধে না লেগে মুসলমানদের আমল শিক্ষা দিত। কুরআন শিক্ষা দিত। পাক-নাপাকের মাসআলা শিক্ষা দিত। মুসলমানদের মদপান থেকে বিরত রাখতে কাজ করত। সুদ থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করত। কিন্তু তারা এসব কিছুই করছেনা। বরং যেই লোকগুলো নামায পড়ছে তাদের মনে ওয়াসওয়াসা তথা সন্দেহ সৃষ্টি করে দিয়ে বলছে যে, তোমাদের নামায হয়না। তোমাদের কালিমা হয়না ইত্যাদী। নামাযী মানুষের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে দিয়ে বলছে , তোমাদের নামায মুহাম্মদী নামায নয় হানাফী নামায। তোমাদের কালিমা মুহাম্মদী কালিমা নয় হানাফী কালিমা। তোমরা শিরক করছ। এভাবে আমলকারী মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য ওদের কার্যক্রম জোরদার করছে। ওরা আমলকারীদের মনে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে দিচ্ছে সহীহ হওয়া না হওয়ার।
এই ওয়াসওয়া থেকেই আল্লাহ তায়ালা আশ্রয় চাইতে সূরা নাসে শিক্ষা দিয়েছেন যে,
الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ (5) مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ (6)
অর্থাৎ যারা মানুষের মনে ওয়াসওয়াসা তথা সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় মানুষ ও জিন জাতির মধ্য থেকে তাদের থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। {সূরা নাস-৫-৬}
ওরা আমলের মাঝে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। কুরআনের মাঝে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে, হাদীসের মাঝে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে। নামাযের মাঝে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে। ওরাই কুরআনে বর্ণিত সেই ওয়াসওয়াসা সৃষ্টিকারী দল। যাদের থেকে আশ্রয় চাওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা।
মক্বা-মদীনা নয়, কুরআন-সুন্নাহই অনুসরণীয়
ওরা মানুষের মনে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে যে, মক্কা থেকে দ্বীন এসেছে। মদীনা থেকে দ্বীন এসেছে। মক্কা মদীনায় নামাযে বুকের উপর হাত বাঁধে। ইমামের পিছনে কিরাত পড়ে। সুতরাং তোমরাও তাই কর। তোমরা যেই নামায পড়ছ এটা হচ্ছেনা। এটা মুহাম্মদী নামায নয়, এটা হানাফী নামায। মুহাম্মদী নামায সেটাই যা দ্বীন যেখানে নাজীল হয়েছে সেই এলাকার মানুষ করছে সেটাই হল দ্বীন। সুতরাং তোমরা মদীনার নামায রেখে কেন হিন্দুস্থানী নামায, কুফাবাসীর নামায কেন পড়?
এই আহমকদের আমরা বলি বর্তমান আরবের শায়েখদের আমলই যদি শরীয়ত হয়, তাহলে আরবের অনেক শায়েখ এক সাথে ১৪জন বিবি রাখছে। তোমরা এটাকেও অনুসরণ করবে? ওদের সিডি দেখিয়ে মানুষকে বল যে, একসাথে ১৪ বিবি রাখা যায়! কারণ সেখানেতু দ্বীন এসেছে মক্কা-মদীনা থেকে তাই ওখানের লোকেরা যা করে সেটাই শরীয়ত!
ওরা একদিকে বলে যে, কুরআন সুন্নাহ ছাড়া কোন কিছুই দলিল নয়, তারাই আবার আরবের শায়েখদের নামাযের বর্ণনা দিয়ে বলে যে, ওরা যেহেতু বুকে হাত বাঁধে তাই আমাদেরও বাঁধতে হবে। আরবের লোকেরা যেহেতু আামীন জোরে পড়ে তাই আমাদেরও জোরে পড়তে হবে! ওদের একাজ কোন দোষণীয় নয়?!
আর আমরা শুধু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর জ্ঞানের উপর নির্ভর করেছি। তার বিজ্ঞতার উপর নির্ভর করেছি, তাই আমরা হয়ে গেছি মুশরিক, আর ওরা আরবের লোকদের তাক্বলীদ করে খাঁটি মুমিন থাকে কি করে? অথচ আল্লাহর নবী ইরশাদ করেছেন যে,
تركت فيكم أمرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة نبيه
তথা আমি তোমাদের মাঝে দু’টি বিষয় রেখে গেলাম, তোমরা ভ্রষ্ট হবেনা যদি এ দু’টি আকড়ে ধরে রাখ। কিতাবুল্লাহ ও নবীর সুন্নত। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-১৫৯৪}
রাসূল সাঃ মক্কাকে আদর্শ বানাননি। মদীনাকে আদর্শ বানাননি। আদর্শ বানিয়েছেন কিতাবুল্লাহ ও নবীজী সাঃ এর সুন্নাতকে।
অথচ ইংরেজদের দালাল আহলে হাদীস গ্রুপ আরবের শায়েখদের ভিডিও দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে যে, ওরা বুকে হাত বাঁধে তাই আমাদেরও বাঁধতে হবে। ওরা জোরে আমীন বলে তাই আমাদেরও বাঁধতে হবে। যেই লোকগুলো ১৪টি ১৮টি স্ত্রী রাখে একসাথে। ওসব শায়েখদের আমল ওদের কাছে দলিল হতে পারে আমাদের কাছে নয়।
আমাদের ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর সময় একটি বকরী চুরি হয়ে গিয়েছিল, তাই তিনি একটি বকরী যতদিন জীবিত থাকতে পারে ততদিন পর্যন্ত কোন বকরীর গোস্ত খাননি। যাতে চুরিকৃত বকরীর গোস্ত তার পেটে না পৌঁছে। আমরা এমন মুত্তাকির ব্যাখ্যার উপর নির্ভর করি বলে আমরা হয়ে গেছি মুশরিক। আর ওরা ১৪টি ১৫টি স্ত্রী একসাথে রেখে হারামে লিপ্ত শায়েখদের নির্ভর করতে মানুষকে প্রলুব্ধ করছে। ওদের লজ্জা গেল কোথায়?
অধীনতাহীন কুকুর পদে পদে হয় লাঞ্ছিত
আমাদের আকাবীররা একটি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন যে, একটি পালিত কুকুর তার গলায় যখন মনীবের রশি থাকে, তখন সে অসুস্থ্য হয়ে গেলে তার মনীব তার চিকিৎসা করে। তাকে নিয়মিত খাবার দেয়। তার সর্বদিক দেখাশোনা করে। সে যেখানে ইচ্ছে মুখ দেয়না। তাই তাকে কেউ আঘাত করেনা। কিন্তু যখনই সে মনীব থেকে নিজের গলার রশি খুলে পালায়, যেখানে ইচ্ছে মুখ লাগায়, সকালে এখানে, বিকালে ওখানে, তাহলে বাচ্চারা পর্যন্ত এই কুকুরটিকে ঢিল ছুড়বে। লাঠি দিয়ে তাড়াবে। লাঞ্ছিত হবে সে পদে পদে।
ঠিক তেমনি ইংরেজদের ফরযন্দ আহলে হাদীসরা যখন ইমাম আবু হানীফা থেকে নির্ভরতার রশিকে ছাড়িয়ে নিয়েছে। ইমাম শাফেয়ী রহঃ থেকে নিজের রশিকে ছাড়িয়ে নিয়েছে, ইমাম মালেক রহঃ থেকে গলার রশি ছাড়িয়ে নিয়েছে, ইমাম আহমাদ রহঃ থেকে রশিকে ছাড়িয়ে নিয়েছে, আর সর্বজন বিদিত বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা রেখে সরাসরি দ্বীন বুঝতে চেয়েছে, তখন এক মাসআলায় হানাফী, এক মাসআলায় শাফেয়ী, এক মাসআলায়া মালেকী আরেক মাসআলায় হাম্বলী সেজেছে।তাই ওরাও স্বাধীন কুকুরের মত দিশাহীন বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একবার আরবের ভিডিও দেখায়, একবার বুখারী নিয়ে দৌঁড়ায়। একবার আলবানীর বই দেখায়, একবার ইবনে তাইমিয়ার কিতাব, একবার ইবনুল কায়্যিমের কিতাব দেখায়।
এই উন্মাদদের প্রশ্ন করি-কুরআন সুন্নাহ রেখে আলবানী আর ইবনে তাইয়মিয়া আর ইবনে বাজের ফাতওয়া দেখায় কেন? ভিডিও দেখায় কেন? মক্কার আমল দেখায় কেন? মদীনার আমল দেখায় কেন? ওরাতো সরাসরি শুধু কুরআন আর সহীহ হাদীস দেখাবে। এছাড়া অন্য কিছু দেখানোরতো ওদের কোন অধিকারই নেই। তাহলেতো তাক্বলীদ হয়ে যাবে। আর তাক্বলীদ ওদের ভাষায় শিরক।
আশ্চর্য লাগে-বাড়ি গড়ার জন্য যেতে হয় ইঞ্জিনিয়ারের কাছে, জুতা ঠিক করতে মুচির কাছে, চুল কাটতে নাপিতের কাছে, আইন জানতে হলে যেতে হয় আইনজিবীর কাছে, কিন্তু মুহাম্মদ সাঃ এর দ্বীন এতই সস্তা হয়ে গেছে যে, ওটা জানার জন্য কারো কাছে যাবার দরকার নাই। কোন বিশেষজ্ঞের শরাণান্ন হবার প্রয়োজন নেই। নিজে নিজে কুরআন হাদীস দেখেই দ্বীন বুঝে যাবে।
বাইতুল্লাহ ও মসজিদে নববীর ইমামগণ গায়রে মুকাল্লিদ নয়
মক্কা মদীনার মূল শায়েখ ও ওলামায়ে কিরাম গায়রে মুকাল্লিদ নয়। মদীনাবাসী মালেকী মাযহাবী। আর মক্কীরা হাম্বলী মাযহাব অনুসরণ করেন। হাম্বলী ও মালেকী মাযহাবে আমীন জোরে পড়ার বিধান, তাই তারাও আমীন জোরে বলেন। হাম্বলী ও মালেকী মাযহাবে বুকের উপর হাত রাখার বিধান, তাই মক্কা ও মদীনাবাসী বুকের উপর হাত বাঁধে। ইংরেজদের দালাল আহলে হাদীসদের মত গায়রে মুকাল্লিদ এজন্য নয়।
একথাটির সবচে’ বড় দলিল হল-মক্কা ও মদীনায় রমযান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ হয়, কিন্তু ইংরেজদের দালাল কথিত আহলে হাদীসরা পড়ে ৮ রাকাত। মক্কা ও মদীনার আলেমরা গায়রে মুকাল্লিদ হলে তারাও গায়রে মুকাল্লিদদের মত ৮ রাকাত তারাবীহ পড়ত। কিন্তু মালেকী ও হাম্বলী মাযহাবে তারাবীহ ২০ রাকাত হবার কারণে মক্কা মদীনার বাসিন্দারা তারাবীহ ২০ রাকাত পড়ে , গায়রে মুকাল্লিদদের মত ৮ রাকাত নয়। এটাই প্রমাণ করে যে, মক্কা মদীনার লোকেরা ইংরেজদের দালাল কথিত আহলে হাদীস গ্রুপ তথা গায়রে মুকাল্লিদ নয়।
বড়ই আশ্চর্যের বিষয় যে, রমযান এলে বেনামাযী নামাযী হয়ে যায়। ফরজ যারা পড়তেন তারা নফল পড়া শুরু করেন। সকল আমলকে বাড়িয়ে দেন। যে কুরআন পড়েনা, সেও কুরআন পড়তে শুরু করে। যে নফল দুই রাকাত পড়ত সেও ৪ রাকাত বা বেশি পড়তে থাকে। কিন্তু এই নাফরমান গায়রে মুকাল্লিদ গ্রুপ আমলকে ২০ রাকাত তারাবীহকে কমিয়ে ৮ রাকাত বানিয়ে দেয়।