প্রশ্ন
জনাব, আসসালামু আলাইকুম ।
আমরা ছোট বেলা থেকেই রমজানের শেষের দশ দিনের বেজোড় রাত গুলোতে দুই রাকাত শবে কদরের নামাজ পড়ে আসছি, এবং সেটা তারাবি শেষে বিতর নামাজের আগে পড়ি ।
তো আমাদের মসজিদের বর্তমান ইমাম সাহেব তারাবি শেষে বিতর পড়ে ফেলেন এবং বলেন যে এইটা কোন নিয়ম না আর বিতরের পরেই শবে কদর পড়া উচিৎ ।
(আমি জানি যে, কেউ ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে বিতর পড়ে নিবে অন্যথায় শবে কদর বা তাহাজ্জুদ নামাজ শেষে বিতর পড়বে । যদিও এখানে কেউ ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল না তাই শবে কদরের নামাজ শেষেই সবাই বিতর পড়তে ইচ্ছুক ।)
এ নিয়ে অনেক মুসল্লি নাখোশ ।
আমি জানতে চাচ্ছি যে যদি বিতরের পরেই শবে কদরের নামাজ পড়া উচিৎ বা ভাল তাহলে বিগত ইমাম সাহেবরা বা আমাদের এলাকার কোন ইমাম,আলেম এ নিয়ে কিছু বলেন না কেন?
আর বিতরের আগে পড়াও যদি ঠিক হয় তাহলে আমাদের ইমাম সাহেব কেন মুসল্লিদের মাঝে দ্বিধার সৃষ্টি করছেন?
এমরান হাসান
সুনামগঞ্জ ।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
রমজান মাসে জামাতের সাথে বিতর নামায পড়ার বিষয়টি এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে প্রমাণিত।
কিন্তু এর মাঝখানে লাইলাতুল কদরের নামে দুই রাকাত সালাতের সুযোগ দেয়ার কোন কথা সাহাবাগণ থেকে প্রমাণিত নয়।
তাই এর উপর চাপাচাপি করা বা ইমাম সাহেব সুযোগ না দিলে অসন্তুটি প্রকাশ করা যাবে না। রমজান ছাড়া অন্য সময়ে রাতের শেষ ভাগে বিতর পড়া উত্তম। কিন্তু রমজান মাসে তারাবী শেষে জামাতে বিতর পড়া উত্তম।
এ কারণে তারাবী শেষে জামাতে বিতর না পড়ে আগে নফল নামায পড়ার জন্য বাধ্যবাধকতা করা যাবে না। এমনিতে পড়তে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না।
লাইলাতুল কদরের ফযীলত পাবার আশায় নফল নামায সারা রাতব্যাপীই পড়া যায়। তারাবীর সাথে সাথেই পড়তে হবে এমনটি মনে করার কোন সুযোগ নেই। তাই এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: ” دَعَا الْقُرَّاءَ فِي رَمَضَانَ فَأَمَرَ مِنْهُمْ رَجُلًا يُصَلِّي بِالنَّاسِ عِشْرِينَ رَكْعَةً “ قَالَ: وَكَانَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يُوتِرُ بِهِمْ “
হযরত আলী রাঃ রমজান মাসে কারীদের একত্র করে লোকদের বিশ রাকাত তারাবী পড়ার আদেশ দেন। তারপর তিনি নিজেই বিতর সালাত পড়ান। [সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৪২৯১]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com