প্রশ্ন
আমি একজন ভারতীয় মুসলিম, এখানে বেশ কিছু আহলে আছে যারা সবকিছুকেই জাল ও জয়ীফ বলে আমাদের বিভ্রান্ত করে । ওদের প্রতি বিশ্বাস না থাকলেও আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওদের মাসায়েল গুলো জেনে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আলিমদের থেকে জেনে নিই ।
১) জিলক্বদ মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদীস গুলো জানতে চাই ।
২) বিভিন্ন মাসের আমাল ও ফজিলত সম্পর্কে উলামায়ে দেওবন্দের কোন কিতাবের নাম জানালে উপকৃত হই।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
জিলক্বদ মাস কুরআন বর্ণিত উত্তম মাসসমূহের মাঝে একটি মাস। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ ۚ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ [٩:٣٦
নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন। {সূরা তওবা-৩৬}
সেই পবিত্র চার মাস কোনগুলো? হাদীসে এ ব্যাপারে পরিস্কার করা হয়েছেঃ
عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّ الزَّمَانَ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللَّهُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا، مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ، ثَلاَثٌ مُتَوَالِيَاتٌ: ذُو القَعْدَةِ، وَذُو الحِجَّةِ، وَالمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ، مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى، وَشَعْبَانَ “
হযরত আবু বাকরা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ যেদিন আসমান যমীন সৃষ্টি করেন, সেদিন যেভাবে কাল [যমানা] ছিল তা আজও অনুরূপভাবে বিদ্যমান। বারমাসে এক বছর,তন্মধ্যে চার মাস পবিত্র। যার তিন মাস ধারাবাহিক যথা জিলকদ, জিলহজ্ব ও মুহাররম ও মুযার গোত্রের রজব,যা জামাদিউস সানী এবং শাবান মাসের মধ্যবর্তী। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৪৬৬২,৪৩৮৫,সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৭৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৯৪৭}
তাই কুরআন ও হাদীসের ভাষ্য অনুপাতে জিলক্বদ মাস একটি মহামান্বিত মাস। ফযীলতপূর্ণ মাস। আল্লাহর নির্ধারিত উক্ত মহান্বিত মাসসমূহে ইবাদত করলে যেমন সওয়াব হবে অধিক। তেমনি গোনাহ করলেও তা হবে মারাত্মক। তাই জিলক্বদ মাসে বেশি বেশি পূণ্যের কাজ করা উচিত। আর গোনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
عن ابن عباس: اختص الله أربعة أشهر جعلهن حرما وعظم حرماتهن وجعل الذنب فيهن أعظم وجعل العمل الصالح والأجر أعظم
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তাআলা চারটি মাসকে মহামান্বিত এবং সম্মানিত করেছেন। এতে গোনাহ করা মারাত্মক ও ভয়াবহ। আর সওয়াবের কাজ করার পুরস্কারও অনেক। [লাতায়েফুল মাআরিফ ইবনে রাজাব হাম্বলীকৃত-১/১১৫]
আপনি যেহেতু ভারতের অধিবাসী। সেই সাথে মুসলিম। আশা করি উর্দু বুঝবেন। আরবীমাস ও দিনসমূহের ফযীলতের উপর উর্দুতে লিখিত একটি চমৎকার কিতাব রয়েছে। যার নাম হল “ইসলামী মাহিনু কে ফাযায়েল ও আহকাম”। কিতাবটির লেখক “মাওলানা রুহুল্লাহ নকশবন্দী।
বইটির ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
আমাদের প্রকাশিত এ লেখাটিও পড়তে পারেন- ফযীলতপূর্ণ দিবস-রজনী : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com