দেশঃ বাংলাদেশ
আমার কয়েকটি প্রশ্ন আছে।
ভবিষ্যতে যখন ইমাম মাহদি ও ঈসা (আঃ) আসবেন, তখন তারা কি সালাফি হয়ে আসবেন নাকি হানাফি, হাম্বলি, শাফেয়ী, মালেকী? তারা কোন মাজহাবের ফিকহ অনুসরন করবেন?
আমি আপনাদের ওয়েবসাইট এর একজন নিয়মিত পাঠক। আপনাদের সাইটের প্রশ্নের উত্তর পড়ায় মনে হয় ফিতনাবাজ আহলে হাদিস, লা-মাজহাবিদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।তাছাড়া মনের সন্দেহ দূর করার জন্য আপনাদের শরনাপন্ন হলাম। আল্লাহ আপনাদের মেহনত কবুল করুন।
আরেকটা প্রশ্ন, ঠিক প্রশ্ন না। আপনারা কি উত্তর প্রকাশের পর প্রশ্নকারীকে ইমেইল করেন? নাকি করেন না? এর আগে আমি কিছু প্রশ্ন পাঠিয়েছিলাম। তার উত্তর পাইনি,ওয়েবসাইটেও খুজে পাইনি।এবার আমাকে উত্তরটা মেইল করলে খুশি হবো।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মুজতাহিদের জন্য কোন মাযহাবের অনুসারী হতে হয় না। হযরত ঈসা আঃ এবং হযরত মাহদী আঃ মুজতাহিদ হবেন। তাই তাদের জন্য কারো মাযহাবের তাকলীদ করা জায়েজ নয়। তবে অনেকের মতে তাদের ইজতিহাদ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ইজতিহাদের সাথে মিলে যাবে। এটি পুরোটাই অনুমান নির্ভর কথা। মূল কথা হল, তারা মুজতাহিদ হবেন। আর মুজতাহিদের জন্য কারো তাকলীদ করা জায়েজ নয়। যেমন ইমাম আবু হানীফা রহঃ মুজতাহিদ হওয়ায় তার জন্য কারো তাকলীদ করা জায়েজ নয়।
তাকলীদ করবে গায়রে মুজতাহিদ। আর মুজতাহিদ করবে ইজতিহাদ। এ কারণে গায়রে মুকাল্লিদদের অভিযোগ যে, আমাদের ইমাম গায়রে মুকাল্লিদ। আমরা বলি যে, ইমাম গায়রে মুকাল্লিদ মানে হল, তিনি মুজতাহিদ। তাই তার মুকাল্লিদ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আর তোমরা গায়রে মুকাল্লিদ মানে হল, তোমরা মুজতাহিদও নয়, আবার তাকলীদও করো না, এর নাম গায়রে মুকাল্লিদ।
এক ব্যক্তি হয়তো ইমাম হবে, নতুবা মুক্তাদী। যে ব্যক্তি ইমাম ও নয়, মুক্তাদী নয়। সে সুনিশ্চিতভাবে ফাসাদকারী। হয়তো ব্যক্তি রাজা হবে, নয়তো প্রজা। উভয়ের কোনটি না হলে হয় বিদ্রোহী। তেমনি গায়রে মুকাল্লিদ হল দ্বীনের বিদ্রোহীর নাম। আর ইমাম আবু হানীফা রহঃ হলেন রাজাওয়ালা, আর ইমামওয়ালা। আমরা মুকাল্লিদরা হলাম প্রজা ও মুক্তাদী। আর গায়রে মুকাল্লিদরা হল, ফাসাদকারী আর বিদ্রোহী।
মুসলমান হওয়ার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য নবীর কালিমা পড়া জরুরী। নবীজী সাঃ নিজেও মুসলমান। কিন্তু তিনি কার কালিমা পড়েছেন? কোন নবীর কালিমা পড়েন নি। বরং তিনি তার নিজের কালিমাই পড়েছেন। তারপরও তিনি সাচ্চা মুসলমান। কারণ তিনি নিজেই নবী। তার জন্য অন্য কারো কালিমা পড়ার প্রয়োজনই নেই।
তেমনি ইমাম আবু হানীফা রহঃ মুজতাহিদ। তাই তার জন্য অন্য কারো তাকলীদ করার প্রয়োজনই নেই। ঠিক একইভাবে হযরত ঈসা আঃ এবং হযরত ইমাম মাহদী আঃ হবেন মুজতাহিদ। তাই তাদের জন্য কারো তাকলীদ করার প্রয়োজনই নেই।
যেমন মুক্তাদী ইমামের ইত্তেবা করে বা জামাআত নামায পড়ে। আর ইমামও বা জামাআত নামায পড়ছে যদিও তিনি কারো ইত্তেবা করছে না। কেননা, তিনি নিজেই ইমাম। এমনিভাবে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর অনুসারীরা তার তাকলীদ করে থাকে, কিন্তু তিনি কারো তাকলীদ করেন না। কারণ তিনি নিজেই ইমাম। একই অবস্থা হবে হযরত ঈসা আঃ এবং হযরত ইমাম মাহদী আঃ এর। তারা মুজতাহিদ হবেন। তাই মুকাল্লিদ হবার প্রয়োজন তাদের হবে না।
##
প্রশ্নোত্তরটি প্রকাশের পর, যদি প্রশ্নকারীর মেইল এড্রেস দেয়া থাকে, তাহলে ফিরতি মেইলে প্রশ্নের লিংকসহ জানিয়ে দেয়া হয়।
লোকবলের কমতি ও ব্যস্ততার কারণে উত্তর দিতে দেরী হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আপনার আরেকটি প্রশ্নের উত্তরটি অচিরেই প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল- [email protected]