প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / মহিলাদের হজ্বের সফরের জন্য মাহরাম না থাকলে করণীয় কি?

মহিলাদের হজ্বের সফরের জন্য মাহরাম না থাকলে করণীয় কি?

প্রশ্ন

জনাব,

আসসালামুওালাইকুম । আমি সুমনা বলছি বাংলাদেশ থেকে, আমার মা ২০১৪ সালে হজ্জের উদ্দেশে  যাবার জন্য মনস্থির করেছেন কারন উনার শরীর সব সময়ে ভাল থাকে না, আমার বাবা ২০০৩ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন, আমরা তিন বোন,আমি একটি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকুরী করছি,. আমার মায়ের বা আমাদের এমন কোন পুরুষ নিকটাত্মীয় নেই যে হজ্জ করতে গেলে উনার সাথে মাহরাম হিসেবে যেতে পারে, আমি আমার মায়ের বড় সন্তান এবং অবিবাহিত মেয়ে, এই ক্ষেত্রে কি আমি আমার মায়ের সাথে হজ্জ পালন করতে যেতে পারি ? পুরুষ মাহরাম  নেই বলে কি আমার  মা হজ্জ করতে যেতে পারবেন না ! বলে রাখা ভাল যে, আমার মা একমাত্র সন্তান  এবং উনার কোন ভাই নাই ।

হজ্জের টাকা জমা নেয়ার  কার্যক্রম শুরু হয়েছে তাই আমার এই প্রশ্নের উত্তরটি জানা অনেক জরুরি ; আশা করি আমার প্রশ্নের উত্তর টি অতিসত্বর দিবেন।

সুমনা

ঢাকা, বাংলাদেশ

 

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

মাহরাম ছাড়া মহিলাদের জন্য সফর করা জায়েজ নয় বোন। এমনকি মহিলাদের মাহরাম না থাকলে তার উপর হজ্ব ফরজও হয় না।

সেই হিসেবে আপনার মায়ের মাহরাম না থাকায় তার উপর হজ্ব ফরজ হয়নি। সুতরাং তিনি হজ্ব না করলে গোনাহগার হবেন না।

তার যদি হজ্ব করানোর খুবই ইচ্ছে হয়ে থাকে, তাহলে বদলী হজ্ব করাতে পারেন। কিংবা আপনার বিয়ের পর আপনার স্বামী আপনার মায়ের মাহরাম হয়ে যাবে। তখন মেয়ে জামাইয়ের সাথে হজ্বে যেতে পারবেন।

হজ্ব ফরজ না হওয়া সত্বেও এবং মাহরাম ছাড়া হজ্ব করা নিষেধ হওয়া সত্বেও যদি তিনি হজ্ব করে ফেলেন মাহরাম ছাড়াই, তাহলে হজ্বটি মাকরূহের সাথে আদায় হয়ে যাবে।

আপনার ও আপনার মায়ের জন্য দুআ রইল। আপনার পিতাকে আল্লাহ পাক মাগফিরাতের নিয়ামত নসীব করে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন। আমীন।

عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখেএমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}

  يُشْتَرَطُ فِي حَجِّ الْمَرْأَةِ مِنْ سَفَرِ زَوْجٍ أَوْ مَحْرَمٍ بَالِغٍ عَاقِلٍ غَيْرِ مَجُوسِيٍّ وَلَا فَاسِقٍ مَعَ النَّفَقَةِ عَلَيْهِ وَأَطْلَقَ الْمَرْأَةَ فَشَمِلَ الشَّابَّةَ وَالْعَجُوزَ لِإِطْلَاقِ النُّصُوصِ (البحر الرائق، كتاب الحج-2/552، المحيط البرهانى، كتاب الحج، الفصل الأول-3/394

وَلَوْ حَجَّتْ بِلَا مَحْرَمٍ جَازَ مَعَ الْكَرَاهَةِ الخ- (قَوْلُهُ مَعَ الْكَرَاهَةِ) أَيْ التَّحْرِيمِيَّةِ لِلنَّهْيِ فِي حَدِيثِ الصَّحِيحَيْنِ «لَا تُسَافِرْ امْرَأَةٌ ثَلَاثًا إلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ» زَادَ مُسْلِمٌ فِي رِوَايَةٍ «أَوْ زَوْجٌ» (رد المحتار، كتاب الحج، مطبع كراچى-2/465

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

আরও জানুন

মুসলমানদের জন্য হিন্দু পরিচয় দিয়ে ইসকনের মিছিলে শরীক হওয়ার হুকুম কী?

প্রশ্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক মিছিলে যেসব মুসলমান শরীক হয়, নিজেদের হিন্দু পরিচয় দেয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *