লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
কাশফের পরিচয়ঃ
কাশফের পরিচয় দিতে গিয়ে গায়রে মুকাল্লিদ শায়েখ আব্দুল্লাহ নাসির রাহমানী সাহেব লিখেছেন
কাশফ মানে হল, বান্দা এমন কোন কথা শুনে যা, অন্য কেউ শুনেনি, এমন কিছু দেখতে পায়, যা অন্য কেউ দেখতে না পায়, কিংবা এমন ইলম যা অন্য কারো কাছে নেই। এটাকেই কাশফ বলা হয়। [আকীদাতু ফিরক্বাতুন নাজিয়্যাহ-৩৩৫]
আমরা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকিদা হল, কাশফ ও ইলহামের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কখনো কখনো তার কোন প্রিয় বান্দার কাছে গায়েবের কোন কিছু প্রকাশ করে দেন।
উক্ত গায়েবের বিষয় প্রকাশিত হবার মূল কর্তা হলেন আল্লাহ তাআলা। কিন্তু মাধ্যম হয়ে থাকেন বান্দা। এতে বান্দার কোন হাত থাকে না। কোন ক্ষমতা থাকে না। সম্পূর্ণই আল্লাহর ক্ষমতা।
সুতরাং আমাদের আকীদা হল, বুযুর্গানে দ্বীন, আল্লাহর ওলীদের কখনো কখনো কাশফ হতে পারে। এটি সত্য। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এটাই আকীদা।
কাশফের প্রমাণ কুরআন ও তাফসীরে কুরআন দ্বারা
১
আল্লামা খাযেন রহঃ সূরা হিজর এর في ذلك لآيات للمتوسمين এর তাফসীর করতে গিয়ে লিখেনঃ
ইমাম মুজাহিদ রহঃ বলেন, মুতাওয়াসসিমীন দ্বারা উদ্দেশ্য হল, ফিরাছাতওয়ালা। এ ব্যাখ্যাটি মজবুত করছে হাদীসে নববী সাল্লাাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। হাদীসে এসেছে, হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মুমিনের ফিরাছাতকে ভয় পাও। কেননা, সে আল্লাহর দেয়া বাতিনী আলো দিয়ে দেখে থাকে। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কথার প্রমাণ স্বরূপ উপরোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করেন। [তাফসীরে খাজেন-৩/৬০, সূরা হিজর]
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ এর উপরোক্ত হাদীসে মুবারক এ কথাই প্রমাণ করে যে, ফিরাছাতে ঈমানী, বাতেনী নূর। যা আল্লাহ তাআলা তার খাস বান্দাদের দিলে ঢেলে দেন। যার মাধ্যমে কারামত হিসেবে তাদের থেকে মাঝে মাঝে আশ্চর্য ধরণের ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে।
২
আল্লামা আলূসী রহঃ লিখেছেনঃ
কখনো কখনো আল্লাহ তাআলা তার খাস বান্দাদের কাছে এমন কিছু হালাত প্রকাশিত করে দেন, ফলে উক্ত বস্তুটি আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তিটি দেখেন, যা সাধারণ লোকেরা দেখতে পায় না।[রূহুল মাআনী-২২/৩৮, সূরা সাজদা]
উপরোক্ত বক্তব্য প্রমাণ করে যে, আল্লামা আলুসী রহঃ বুযুর্গানে দ্বীনের কাশফকে সমর্থন করেন।
৩
এমনিভাবে আল্লামা আলুসী রহঃ সূরা তাহরীমের ১১ নং আয়াতের অধীনে হযরত আয়শা রাঃ এর এর দুআ رَبِّ ابْنِ لِي عِنْدَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ অধীনে লিখেনঃ
فكشف الله لها عن بيتها في الجنة
আল্লাহ তাআলা আয়শা রাঃ এর জান্নাতের ঘর কাশফের মাধ্যমে দেখিয়ে দেন। [তফসীরে রূহুল মাআনী-২৮/৪৯৫]
৪
ইবনুল জাওযী রহঃ লিখেছেনঃ
فكشف الله لها عن بيتها في الجنة حتى رأته قبل موته
আল্লাহ তাআলা তার জন্য খুলে দিলেন তর জান্নাতের ঘর। এমন কি তিনি মৃত্যুর আগেই তার জান্নাতের ঘর দেখে নিয়েছেন। [যাদুল মাছীর-৮/৮৫]
ইবনে কাছীর রহঃ ও একই বক্তব্য নকল করেন। [তাফসীরে ইবনে কাছীর-৮/১৯৮]
মুফাসসিরীনে কেরামের তাফসীর দ্বারা বুঝা যায় যে, তাদের মতানুসারে বুযুর্গানে দ্বীনের কাশফের বিষয়টি কুরআনে কারীম দ্বারা প্রমাণিত।
এ কারণেই লা-মাযহাবী আলেম আবু হামযা আব্দুল খালেক লিখেছেনঃ
যেমনিভাবে কারামাত কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, তেমনি কাশফ ও কুরআন ও সুন্নাত থেকেই প্রমাণিত। যে ব্যক্তি এটাকে অস্বিকার করবে, সে যেন কুরআন ও হাদীসকেই অস্বিকার করে। [আউলিয়াআল্লাহদের পেহচান-৪২৭]
স্মর্তব্য যে, উক্ত কিতাবটির ভূমিকা, তাখরীজ, লিখনীতে আরো তিনজন লা-মাযহাবী আলেম শরীক হয়েছে। তাদের মাঝে রয়েছেন লা-মাযহাবী আলেম শায়খুল হাদীস আব্দুল্লাহ নাসীর রাহমানী সাহেব, হাফিজ হামীদ মাহমূদ সাহেব, হাফিজ আবু বকর সাহেব।
সুতরাং উপরোক্ত চারজন লা-মাযহাবী আলেমের ফাতওয়া অনুপাতে কাশফ অস্বিকারকারীগণ কুরআন ও হাদীস অস্বিকারকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবেন।
হাদীসের আলোকে কাশফের প্রমাণ
حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، أَوْ غَيْرِهِ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ بِالْعَبَّاسِ قَدْ أَسَرَهُ، فَقَالَ الْعَبَّاسُ: يَا رَسُولَ اللهِ، لَيْسَ هَذَا أَسَرَنِي، أَسَرَنِي رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَنْزِعُ مِنْ هَيْئَتِهِ كَذَا وَكَذَا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلرَّجُلِ: ” لَقَدْ آزَرَكَ اللهُ بِمَلَكٍ كَرِيمٍ “
সনদঃ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ, তিনি আবু আহমাদ যুবায়রী থেকে, সুফিয়ান সাওরী থেকে, তিনি আবু ইসহাক থেকে, তিনি বারা বিন আযেব রাঃ থেকে।
অনুবাদঃ আনসারী এক ব্যক্তি হযরতকে আব্বাসকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসল। [হযরত আব্বাস রাঃ তখনো ইসলাম গ্রহণ করেননি]
তখন আব্বাস বলেন, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এ আনসারী আমাকে বন্দী করেনি! আমাকে বন্দী করেছে এমন ধরণের এক ব্যক্তি! যার মাথার চুল কামানো ছিল, আর যার আকৃতি এমন এমন ছিল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাকে মহান ফেরেশতা দর্শন করিয়েছেন। [মুসনাদে আহমাদ-১৪/১৯২, হাদীস নং-১৮৪৯৯}
সনদের রাবীদের পরিচয়ঃ
১
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ।
তিনি সিক্কা, ইমাম এবং হুজ্জত। [তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং-৯৬]
২
ইমাম আবু আহমাদ যুবায়েরী রহঃ।
তিনিও সিক্বা এবং মজবুত রাবী। [তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং-৬০১৭]
৩
সুফিয়ান সাওরী রহঃ।
তিনি বুখারী মুসলিমের রাবী। সিক্কা, হাফিজ এবং হুজ্জত। [তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং-২৪৪৫]
৪
আবু ইসহাক রহঃ। তার পূর্ণ নাম হল, আমার বিন আব্দুল্লাহ বিন উবায়েদ রহঃ।
তিনি বুখারী ও মুসলিমের রাবী। সিক্কা রাবী। [তাকরীতু তাহযীব, রাবী নং-৫০৬৫]
৫
বারা বিন আযেব রাঃ।
প্রসিদ্ধ সাহাবী ও বড় ফক্বীহদের অন্তর্ভূক্ত। [সিয়ারু আলামিন নুবালা-৩/১৪৯]
সনদের রাবীদের অবস্থা আমাদের পরিস্কার জানাচ্ছে যে, এ বর্ণনাটি সহীহ এবং দলীলযোগ্য।
এমনিভাবে এ বর্ণনাটি আরেকটি সনদ দ্বারাও প্রমাণিত। সেই সনদ হল,
حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ مُضَرِّبٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: لَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ أَصَبْنَا مِنْ ثِمَارِهَا
ইমাম আহমাদ হাজ্জাজ থেকে, তিনি ইসরাঈল থেকে, তিনি আবু ইসহাক থেকে, তিনি হারেছা বিন মুযাররাব থেকে, তিনি হযরত আলী রাঃ থেকে। [মুসনাদে আহমাদ-২/১৭]
সনদের রাবীদের পরিচয়ঃ
১
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ।
২
হাজ্জাজ রহঃ। যার পূর্ণ নাম হল, হাজ্জাজ বিন মুহাম্মদ আলমাছায়েছী রহঃ। [মৃত্যু ২০৬ হিজরী]
তিনি কুতুবে সিত্তা এর রাবী এবং সিক্বা ও মজবুত রাবী। [তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং-১১৩৫]
৩
ইসরাঈল বিন ইউনুস বিন ইসহাক রহঃ। মৃত্যু ১৬০ হিজরী।
তিনিও কুতুবে সিত্তার রাবী এবং সিক্বা। [তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং-৪০১]
৪
আবু ইসহাক রহঃ। যার পূর্ণ নাম হল, আমর বিন আব্দুল্লাহ বিন উবায়েদ রহঃ।
তার কথা পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে।
৫
হারিছা বিন মুযাররাব রহঃ।
তিনি সুনানে আরবাআর রাবী। সিক্কা রাবী। [তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং-১০৬৩]
৬
আলী রাঃ।
বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি ইসলামের ইতিহাসের চতুর্থ খলীফা, প্রসিদ্ধ সাহাবী।
তাহলে সনদের দিক থেকে উভয় বর্ণনা শক্তিশালী। কোন দাগ নেই। এ সহীহ বর্ণনায় পরিস্কার প্রমাণিত যে, ফেরেশতা গায়েবের বিষয়। কিন্তু হযরত আব্বাস রাঃ এর সামনে সেই গায়েব তথা অদৃশ্যের বিষয় প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল।
আমরা শুরুতেই জেনেছি, গায়েবের কোন কিছু কোন উম্মতীর সামনে প্রকাশিত হওয়াকে কাশফ বলা হয়।
তাহলে পরিস্কার সহীহ হাদীস দ্বারা কাশফ প্রমাণিত।
কাশফ ও কারামত খুলাফায়ে রাশেদীন থেকেই প্রমাণিত!
হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাঃ এর কাশফ!
ইমাম গাযালী রহঃ [মৃত্যু ৫০৫ হিজরী] হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাঃ এর একটি কাশফের ঘটনা উল্লেখ করে দলীল পেশ করে বলেনঃ
وقال أبو بكر الصديق رضي الله عنه لعائشة رضي الله عنها عند موته إنما هما أخواك وأختاك وكانت زوجته حاملاً فولدت بنتاً فكان قد عرف قبل الولادة أنها بنت
হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাঃ তার কন্যা আয়শা রাঃ মৃত্যুর সময় বললেন, তোমার ভাই এবং তোমার দুই বোন। [অথচ সে ময় বোন ছিল একজন] সে সময় আবু বকর রাঃ এর স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। [আবু বকর সিদ্দীক রাঃ এর ইন্তেকালের পর] তারপর তার স্ত্রী কন্যা সন্তান প্রসব করেন। অথচ জন্ম গ্রহণের আগেই আবু বকর রাঃ কন্যা সন্তান হবার বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন। [ইহয়াউ উলুমিদ্দীন-৩/২৩]
মুসনিদুল হিন্দ শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ লিখেছেনঃ
হযরত সিদ্দিকে আকবর রাঃ হযরত আয়শা রাঃ কে বললেন, যে সম্পদ আমি তোমাকে দিয়েছি, যদি তুমি তা হাসিল করে থাকো, তাহলে ঠিক আছে, নতুবা আমার মৃত্যুর পর তোমার সাথে তোমার দুই এবং দুই বোনও মিরাছের মাঝে শরীক হবে।
একথা শুনে হযরত আয়শা রাঃ বললেন, আমার বোনতো হল, একজন আসমা, দ্বিতীয় বোনটা কে? তখন আবু বকর সিদ্দীক রাঃ বললেন, বিনতে খারেজা গর্ভবতী। আমার মনে হচ্ছে সে কন্যা সন্তান প্রসব করবে।
শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ বলেন, সিদ্দিকে আকবর রাঃ এর মৃত্যুর পর হযরত আয়শা রাঃ এর বোন উম্মে কুলসুম জন্ম গ্রহণ করেন।
শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ উক্ত ঘটনাকে কাশফের দলীল হিসেবে উপস্থাপন করে বলেন, “এ ঘটনা হযরত সিদ্দিকে আকবর রাঃ এর কাশফ। যার দ্বারা আল্লাহ তাআলা তাকে লুকানো বিষয়কে তার কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন। [ইযালাতুল খাফা-৩/৭৭]
আবু বকর সিদ্দীক রাঃ এর উক্ত ঘটনা ইমাম মালিক রহঃ তার বিখ্যাত গ্রন্থ “মুয়াত্তা মালিক” এর মাঝেও সনদসহ নকল করেছেন। দেখুন মুয়াত্তা মালিক-৩১৪, ভিন্ন ছাপা, হাদীস নং-২৭৮৩]
সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১১৯৪৮।
লক্ষ্য করুন!
উক্ত ঘটনায় হযরত আবু বকর রাঃ এর স্ত্রীর গর্ভে থাকা সন্তানের কন্যা সন্তান হবার সংবাদ কিভাবে জানতে পারলেন? তার কাছে কি ওহী আসতো? নিশ্চয় নয়। তাহলে তিনি কিভাবে জানলেন?
তাহলে লা-মাযহাবী বন্ধুদের দাবী অনুপাতে আবু বকর রাঃ ইলমে গায়েবের অধিকারী ছিলেন?
নিশ্চয় নয়। আমরা পরিস্কার বলি যে, এটি কাশফের মাধ্যমে আবু বকর রাঃ কে জানানো হয়েছিল।
হযরত উমর রাঃ এর কাশফ
লা-মাযহাবী বন্ধুদের নিজস্ব প্রকাশনী “তাওহীদ পাবলিকেশন্স” থেকে আক্বিদা বিষয়ক একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। যার মূল লেখক হাফেজ বিন আহমাদ বিন আল-হাকামী। আর অনুবাদ করেছেন লা-মাযহাবী শায়েখ আব্দুল্লাহ শাহেদ মাদানী। বইটির নাম হল, ‘কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে দুই শতাধিক প্রশ্নোত্তরসহ নাজাতপ্রাপ্ত দলের আকীদাহ’।
উক্ত বইয়ে কারামত সত্য হবার প্রমাণ দিতে গিয়ে ২৮২ নং পৃষ্ঠায় ৩২২ নং টিকায় আনা হয়েছে “সারিয়ার সাথে উমার রাঃ এর কারামাতের বিস্তারিত বিবরণ এই যে, উমার রাঃ একদল সৈনিক পাঠালেন এবং সারিয়া নামক এক ব্যক্তিকে সেনাবাহীনীর আমীর নিযুক্ত করলেন। উমার রাঃ মদীনার মিম্বরে খুৎবারত অবস্থায় ইয়া সারিয়া! আল জাবাল! বলে উচ্চসরে ডাক দিলেন। সৈনিকদের দূত মদীনায় এসে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আমরা শত্রুদের মুকাবিলা করতে গেলে তারা আমাদেরকে পরাজিত করে ফেলে। তখন আমরা একজন লোককে চিৎকার করে বলতে শুনলামঃ ইয়া সারিয়া! আল জাবাল! অর্থাৎ হে সারিয়া পাহাড়ে আশ্রয় নাও। এতে আমরা সতর্কতা অবলম্বন করে পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করলাম। শত্রুদের আক্রমণের কবল হতে নিরাপদ হলাম। আল্লাহ তাআলা শত্রুদেরকে পরাজিত করলেন। [মাজমূআয়ে ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-১১/২৭৮]
খেয়াল করুন। শত মাইল দূরে সাহাবাগণ যুদ্ধ করছেন। সেই যুদ্ধ ময়দানে সাহাবাগণ পরাজিত হয়ে গেছেন। কি করবেন? বুঝতে পারছিলেন না। যুদ্ধের এ হালাত শত মাইল দূরে মসজিদের মিম্বরে বসা হযরত উমর রাঃ এর কাছে কাশফ হয়ে গেল। আর তিনি সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেন। তা আবার যুদ্ধরত সাহাবীগণ শুনে কার্যকরও করলেন।
এ ঘটনা আমাদের লা-মাযহাবী বন্ধুগণ তাদের নিজেদের প্রকাশনী থেকে আকিদার কিতাবে নকল করেছেন। সেই সাথে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াও উক্ত কাশফের ঘটনাটি নকল করেছেন মর্মে পরিস্কার জানিয়েছেন।
কি বুঝা গেল? হযরত উমর রাঃ থেকে কাশফ প্রমাণিত। সাক্ষ্যিতো লা-মাযহাবী বন্ধুদের নিজেদের আকিদার বই।
হযরত উসমান রাঃ এর কাশফ
ইমাম নববী রহঃ, ইমাম ইবনে কাইয়্যিম রহঃ, ইমাম কুরতুবী রহঃ, ইমাম রাজী রহঃ, ইমাম গাযালী রহঃ এ ৫ জন ইমাম হযরত উসমান রাঃ এর একটি ঘটনা নকল করেছেন।
قال دخلت على عثمان رضي الله عنه وكنت قد لقيت امرأة في طريقي فنظرت إليها شزراً وتأملت محاسنها فقال عثمان رضي الله عنه لما دخلت يدخل علي أحدكم وأثر الزنا ظاهر على عينيه أما علمت أن زنا العينين النظر لتتوبن أولأعزرنك فقلت أوحي بعد النبي فقال لا ولكن بصيرة وبرهان وفراسة صادقة
তিনি বলেন, আমি হযরত উসমান রাঃ এর নিকট আসলাম। পথিমধ্যে আমি এক নারীর সাথে সাক্ষাৎ হল। তখন আমি তার দিকে আড়চোখে তাকালাম। আর তার সৌন্দর্যতা গভীরভাবে নিরীক্ষণ করলাম। এরপর হযরত হযরত উসমান রাঃ এর খিদমাতে উপস্থিত হলে, তিনি আমাকে বললেন, তোমাদের কেউ কেউ আমার কাছে আগমন করে এমতাবস্থায় যে, তার চোখে মুখে যিনার চিহ্ন থাকে। তোমার কি জানা নেই যে, কুদৃষ্টি করা হচ্ছে চোখের যিনা? তুমি তওবা কর। নতুবা তোমাকে সাজা দেব। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরেও ওহী আগমন করে কি? তিনি বললেন, না, কিন্তু অন্তর্দৃষ্টি ও দূরদর্শীতার মাধ্যমে জানা যায়।
উক্ত ঘটনাটি বিভিন্ন শব্দে নিম্ন বর্ণিত গ্রন্থগুলোতে বিদ্যমানঃ
১
ইহয়াউ উলুমিদ্দীন-৩/২৩-২৪।
২
তাফসীরে কুরতুবী-১২/২৩৬।
৩
তাফসীরে রাজী-২১/৮৯।
৪
কিতাবুর রূহ-২৮৯, ভিন্ন ছাপা-৬৭৫।
৫
বুস্তানুল আরেফীন-৩৮৮
হযরত আলী রাঃ এর কাশফ
ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ হযরত আলী রাঃ এর বিষয়ে একটি ঘটনা নকল করেন। যাতে এসেছেঃ
হারছামা বিন সালমা রহঃ বলেন, আমরা হযরত আলী রাঃ এর সাথে সফরে বের হলাম। তিনি চলতে চলতে কারবালায় গিয়ে পৌঁছলেন। সেখানকার এক গাছের নিচে গিয়ে নামলেন। তারপর নামায পড়লেন। নামায শেষে জমিন থেকে কিছু মাটি হাতে নিয়ে ঘ্রাণ নিলেন। তারপর বললেন, ‘হে মাটি! তোমার জন্য আফসোস! তোমার উপর এমন কিছু লোককে হত্যা করা হবে, যারা বিনা হিসেবে জান্নাতে গমণ করবে।’
এরপর রাবী নিজেই বলেন যে, আমি নিজে দেখেছি যে, উক্ত স্থানেই হযরত হুসাইন রাঃ শহীদ হয়েছিলেন। [তাহযীবুত তাহযীব-২/২০২, ভিন্ন ছাপা-২/৩৪৮]
এখানে খেয়াল করুন। যে জমিনে হযরত হুসাইন রাঃ শহীদ হবেন। জান্নাতী মানুষ শহীদ হবেন, তা হযরত আলী রাঃ কিভাবে মাটির ঘ্রাণ নিয়ে বলে দিলেন? এটি কি ইলমে গায়েব? নাকি কাশফ?
নিশ্চয় কাশফ।
এখন প্রশ্ন হল, যারা কাশফকে ইলমে গায়েব বলেন। যারা এসব ঘটনা বর্ণনাকারীকে শিরকের অপবাদ আরোপ করে থাকেন। তারা হযরত আলী রাঃ কে কী বলবেন? তিনি কি ইলমে গায়েব জানতেন? আর হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ উক্ত ঘটনা নকল করে কি শিরক করেছেন? তাহলে তাহযীবুত তাহযীব কি শিরকী কিতাব?
একবার ভেবে চিন্তে জবাব দিতে অনুরোধ ফাযায়েলে আমালের উপর অপবাদ আরোপকারীদের কাছে।
শুধু তাই নয়, এরকম ঘটনা সাহাবায়ে কেরাম থেকে আরো অসংখ্য বর্ণিত।
দেখুন- তাফসীরে কাবীর-২১/৭৫]
ইমাম কুরতুবী রহঃ বলেন, এমন ঘটনা সাহাবী ও তাবেয়ীগণ থেকে প্রচুর পরিমাণ বর্ণিত। [তাফসীরে কুরতুবী-৫/৩৩]
ইমাম ইবনে কাসীর রহঃ ও বলেন, হাদীস ও আছারে এসব [কাশফ ও কারামত] এর ঘটনা বহু রয়েছে। [তাফসীরে ইবনে কাসীর-৬/২২৯]
মোটকথা!
উপরোক্ত বিশুদ্ধ প্রমাণ পেশ করার উদ্দেশ্য হল, যেন আমাদের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় যে, কাশফ প্রকাশিত হওয়া মানে ইলমে গায়েব নয়। বরং এটি একটি কারামত। যা আল্লাহ তাআলা যখন ইচ্ছে, যার দ্বারা ইচ্ছে প্রকাশ করেন। আবার ইচ্ছে হলে প্রকাশ করেন না।
কাশফ ও ইলমে গায়েবের মাঝে পার্থক্য
আমাদের কতিপয় ভাইয়েরা ইলমে গায়েব এবং কাশফ ও কারামতের মাঝে পার্থক্য বুঝতে পারেন না। দু’টিকে একই মনে করে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন।
অথচ ইলমে গায়েবের সাথে কাশফের ন্যুনতম কোন সম্পর্ক নেই।
ইলমে গায়েব এবং কাশফ কারামাত দু’টি আলাদা জিনিস। যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ, সাহাবা যুগ, তাবেয়ীগণের যুগ এবং উম্মতের সালাফ থেকেই চলে আসছে যে, তারা কোন বুযুর্গ ব্যক্তির মাধ্যমে অস্বাভাবিক, অভ্যাসের বিপরীত, গায়েবী বিষয় প্রকাশিত হওয়াকে কাশফ ও কারামত হিসেবে হক মনে করেন। এটাকে কেউ ইলমে গায়েব বলে শিরকের ফাতওয়া দেননি।
কিন্তু আজকালকের লা-মাযহাবী বন্ধুরা কাশফকে ইলমে গায়েব সাব্যস্ত করে বুযুর্গানে দ্বীনের উপর কুফরীর ফাতওয়া আরোপ করা শুরু করে দিয়েছে।
অথচ কাশফ প্রকাশিত হওয়ার বিষয়ে বান্দার কোন দখল নেই। কাশফ আল্লাহ তাআলারই কর্ম। এটা আল্লাহরই হুকুম। কিন্তু প্রকাশিত হয় যে বান্দাকে তিনি নির্বাচিত করেন সেই পছন্দনীয় বান্দার মাধ্যমে।
আর ইলমে গায়েব হল, যিনি নিজের ক্ষমতায় বর্তমানে ঘটমান সকল অদৃশ্যের বিষয়বালী জানতে পারেন।
কেউ জানিয়ে দিলে জানাকে ইলমে গায়েব বলে না। বরং নিজের ক্ষমতায়, বর্তমানে ঘটমান, বা অতীত ভবিষ্যতের সংবাদ নিজের ক্ষমতায় যিনি জানতে পারেন, তিনি হলেন ইলমে গায়েবের অধিকারী। আর একমাত্র ইলমে গায়েবের অধিকারী হলেন আল্লাহ তাআলা।
অথচ কাশফ বিষয়টি এমন নয়। কাশফ সংশ্লিষ্ট বুযুর্গ ব্যক্তি নিজের ক্ষমতায় জানতে পারেন না। বরং আল্লাহ তাআলা যখন ইচ্ছে, যার মাধ্যমে ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছে তিনি প্রকাশ করে থাকেন। যার মাধ্যমে প্রকাশ করেন, উক্ত বিষয়ে তার কোন ক্ষমতা থাকে না।
তাহলে ইলমে গায়েব ও কাশফ এক হবে কিভাবে?
দেখুন এ বিষয়টিই পরিস্কারভাবে লা-মাযহাবী বন্ধুদের প্রকাশিত আকীদার কিতাবে তাদের আকীদাহ হিসেবেই উদ্ধৃত করা হয়েছে।
“আউলীয়াদের কারামত সত্য। আল্লাহ তাআলা তাদের হাতে অলৌকিক ও সাধারণ নিয়মের বিপরীত এমন ঘটনা প্রকাশ করে থাকেন, যাতে তাদের কোন হাত নেই। তবে কারামত চ্যালেঞ্জ আকারে প্রকাশিত হয় না। বরং আল্লাহ আল্লাহই তাদের হাতে প্রকাশ করেন।” [নাজাতপ্রাপ্ত দলের আকীদাহ, অনুবাদক-আব্দুল্লাহ শাহেদ আলমাদানী, প্রকাশক-তাওহীদ পাবলিকেশন্স]
তাহলে কী বুঝা গেল?
কাশফ কারামত প্রকাশে সংশ্লিষ্টদের কোন হাত নেই। এটি আল্লাহর ক্ষমতাধীন। তিনি যখন ইচ্ছে প্রকাশ করেন। যখন ইচ্ছে প্রকাশ করেন না।
উপরোক্ত আকীদাহ বইয়ের বক্তব্য অনুপাতে আরেকটি প্রশ্নের জবাব বুঝে আসে। তাহল, অনেক লা-মাযহাবী বন্ধুরা প্রশ্ন করেন যে, যদি কাশফ সত্য হইতো, তাহলে হযরত উমর রাঃ, হযরত উসমান রাঃ, হযরত আলী রাঃ, হযরত হুসাইন রাঃ তাদের শাহাদতের বিষয়টি কেন কাশফের মাধ্যমে জানতে পারলেন না?
এসব প্রশ্নের আশা করি জবাব দেবার প্রয়োজন নেই। উপরোক্ত প্রশ্নটি করা হয় কাশফ ও কারামতের হাকীকত না বুঝার কারণে। কাশফ ও কারামততো ব্যক্তির নিজের ক্ষমতাধীন বিষয় নয়। যখন প্রয়োজন তখনি জানতে পারবেন। বরং এটি সম্পূর্ণই আল্লাহর কর্ম। তার ক্ষমতাধীন। তিনি যখন ইচ্ছে, যেখানে ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু ইচ্ছে হলে প্রকাশ করেন না।
আল্লাহর যখন ইচ্ছে হল, তখন শত মাইল দূরের যুদ্ধরত সাহাবীদের হালাত মদীনার মসজিদে থাকা অবস্থায় হযরত উমর রাঃ এর সামনে কাশফ বা প্রকাশ করে দিলেন। আবার যখন ইচ্ছে হল, তখন তার মিম্বরের পাশে লুকানো ঘাতকের বিষয়টি কাশফ করা হল না।
এটিই কাশফের হাকীকত। এটি সংশ্লিষ্ট বুযুর্গের কর্ম নয়। তাই যখন ইচ্ছে তা প্রকাশিত হয় না। আল্লাহর কর্ম। তিনি যখন ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
কাশফ ইলমে গায়েব নয়। সমস্ত মুহাক্কিক উলামা ও তাফসীরবীদ একমত। দেখুন-
১
আল্লামা আলূসী রহঃ। তাফসীরে রূহুল মাআনী-২১/১১২, সূরা লুকমান-৩৪।
২
মোল্লা আলী কারী রহঃ। [মিরকাতুল মাফাতীহ-১/১২৩-১২৪]
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রহঃ। [কিতাবুর রূহ-৬৭০, ভিন্ন ছাপা ]
এ সমস্ত মুফাসসির ও মুহাদ্দিসগণ পরিস্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, কাশফ ও ইলমে গায়েব এক জিনিস নয়। বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস।
এরপরও যারা উভয়টি এক বলবে, তাদের মুর্খ অথবা জ্ঞানপাপী ছাড়া আর কী’ বলতে পারি?
কাশফ দ্বারা বুযুর্গ ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উপরে চলে যান?
এমন প্রশ্নও আমাদের সমাজের কিছু ভাইয়েরা করে থাকেন। তাদের উদ্ভট সমঝ হল, কোন বুযুর্গের কাশফ হওয়া মানে হল, তিনি এমন মর্যাদা অর্জন করেছেন যে, যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হয়নি। তাহলে এ কাশফ মেনে নিলে উম্মতী নবী থেকে বড় মর্যাদাবান হয়ে যাচ্ছে।
এ মুর্খতাসূচক বক্তব্যের জবাব লা-মাযহাবী বন্ধুদের লিখিত আকীদার বই থেকে দেয়াই নিরাপদ মনে করছি। দেখুন লা-মাযহাবী শায়েখ আব্দুল্লাহ শাহেদ মাদানী তার অনূদিত আকীদাহ গ্রন্থে কী লিখেছেন?
“এছাড়া আরো অনেক কারামত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে, তারপর সাহাবী, তাবেয়ীদের যুগে প্রকাশিত হয়েছে। এমনিভাবে কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। এ কারামতগুলো তাদের পরবর্তী যুগে এবং বর্তমান যুগেও অব্যাহত রয়েছে। এমনিভাবে কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে।
এ সমস্ত কারামত মূলত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুজিযা। কেননা, তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণের মাধ্যমেই কারামত অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।” [নাজাতপ্রাপ্ত দলের আকীদাহ, অনুবাদক-আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী, প্রকাশনী-তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা-২৮৩]
কি বুঝা গেল?
কাশফ কারামত। এসবের মাধ্যমে বুযুর্গ উম্মতী নবীজী থেকে বড় হয় না। এর দ্বারা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদাই বৃদ্ধি পায়। এসবই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ অনুসরণের বরকতে অর্জিত হয়েছে। তাই এসব নবীজীর মুজিযা হিসেবেই ধর্তব্য হবে।
পৃথিবীর কোন বুযুর্গ আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মর্যাদায় বড় হতেই পারে না।
ঠান্ডা মাথায় কোন বিবেকবান ব্যক্তি উপরোক্ত আলোচনা পড়ার দ্বারা আশা করি কাশফ ও কারামতের পার্থক্য বুঝতে পারবেন। সেই সাথে লা-মাযহাবী বন্ধুরা কিভাবে কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত একটি বিষয়কে ছল চাতুরী আর বাক চতুরতায় অস্বিকার করে উলামা ও বুযুর্গানে দ্বীনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মনে বিদ্বেষের বিষ উগড়ে দিচ্ছে তাও পরিস্কার হবার কথা।
আল্লাহ তাআলা আমাদের লা-মাযহাবী ফিতনা থেকে হিফাযত করুন। আমীন।