প্রচ্ছদ / আধুনিক মাসায়েল / ফেইসবুকে নারী বন্ধু বানানো ও তাদের সাথে কথা বলার হুকুম কী?

ফেইসবুকে নারী বন্ধু বানানো ও তাদের সাথে কথা বলার হুকুম কী?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।

অনুগ্রহপূর্বক নিচের মাসআলাটি জানাবেন।

ফেইসবুকে বেগানা মেয়েদের সাথে ফ্রেন্ডশীপ করা জায়েজ আছে? যদি কেউ দ্বীনী দাওয়াতের উদ্দেশ্যে ফেইসবুকে মেয়েদের সাথে ফ্রেন্ডশীপ করে তাহলে সেটা কেমন হবে?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ফ্রেন্ডশীপ মানে বন্ধুত্ব। যা একে অপরের প্রতি মোহাব্বত ও ভালবাসার নিদর্শন। কিন্তু ফেইসবুকের যে ফ্রেন্ডশীপ হয়ে থাকে, এর সাথে সত্যিকার বন্ধুত্বের মূলত কোন সম্পর্ক নেই। এটি কেবলি একটি বাহ্যিক বন্ধুত্ব।

তবে অনেক সময় তা সত্যিকার বন্ধুত্বেও রূপ নেয়।

আমাদের ফেইসবুককে দেখতে হবে অফলাইনের জীবনের অবস্থা অনুপাতে। যেমন অফলাইনে বেগানা নারীদের সাথে অহেতুক কথা বলা, তাদের সাথে দেখা করা, তাদের ছবি দেখা হারাম। তেমনি অনলাইনের বিধানও তা’ই হবে।

যেমন অফলাইনে বেগানা নারীদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলা জায়েজ, দ্বীনী দাওয়াত দেয়া জায়েজ, কিন্তু আকৃষ্ট হবার আশংকা থাকলে কথা বলা বৈধ নয়। তেমনি অনলাইনেও বেগানা নারীদের দ্বীনী দাওয়াত দেয়া, ও প্রয়োজনীয় কথা বলা জায়েজ আছে। কিন্তু ছবি দেখা অপ্রয়োজনীয় কথা বলা, আকৃষ্ট হবার শংকা থাকলে বন্ধুত্ব করা ও চ্যাটিং করা কোনটিই বৈধ হবে না।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

মুহাদ্দিস-জামিয়া উবাদা ইবনুল জাররাহ, ভাটারা ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

One comment

  1. ميزان الرحمن

    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান

Leave a Reply to ميزان الرحمن Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *