প্রচ্ছদ / জায়েজ নাজায়েজ / সুদের টাকার বিধান, সুদের টাকা দিয়ে হজ্ব ও সাইয়্যেদ বংশীয়কে যাকাত দেয়া প্রসঙ্গে

সুদের টাকার বিধান, সুদের টাকা দিয়ে হজ্ব ও সাইয়্যেদ বংশীয়কে যাকাত দেয়া প্রসঙ্গে

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম,                                                                                                        একজন সরকারি চাকুরিজীবী মহিলা চাকুরি শেষে পেনশনের কিছু টাকা পান।যা দিয়ে তার হজ্জের নিয়ত ছিলো।কিন্তু তার অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসা,আগে তার ভাইয়েরা করালেও,দুই ভাইয়ের মৃত্যুর পর,অন্য্ এক ভাই ও বাকি বোনেরা ততটা সক্ষম নন।তাই তিনি পেনশনের টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে কেবল সুদের টাকাটা চিকিৎসা খরচ হিসেবে দেন। মহিলার মাতা সৈয়দ বংশীয়া।==========

প্রশ্ন–০১>এভাবে সঞ্চয়পত্রের সুদের টাকায় চিকিৎসা খরচ দেবার ব্যাপারে শরীয়ত কী বলে?

প্রশ্ন–০২>এই সঞ্চয়পত্র ভেঙে(মায়ের মৃত্যুর পর বা আগেই সমাধান হলে)হজ্জ করলে হবে কিনা?

প্রশ্ন–০৩>সৈয়দ বংশীয় লোকদের যাকাত/সদকা দেয়া যাবে কি?                                                  *মুহাম্মাদ নাহিয়ান                                                                                                       ময়মনসিংহ,বাংলাদেশ*

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

১ম প্রশ্নের জবাব

এভাবে সঞ্চয় পত্র ক্রয় করে সুদ খাওয়া গ্রহণ বৈধ নয়। তবে সূদের টাকার বিধান হল, যদি তা মূল মালিকের কাছে ফেরত দেবার পদ্ধতি না থাকে, যেমন ব্যাংকের সুদ, তাহলে উক্ত টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবকে দান করে দিতে হয়।

সেই হিসেবে কোন গরীব ব্যক্তির চিকিৎসার জন্যও দান করা যাবে।

فى معارف السنن- من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

২য় প্রশ্নের জবাব

মূল টাকা দিয়ে হজ্ব করলে হজ্ব হবে। কিন্তু সূদী টাকায় হজ্ব করলে ফরজের দায়িত্বমুক্ত হলেও সওয়াবও পাবে না।হজ্বও কবুল হবে না।

وَلَا تَنَافِي بَيْنَ سُقُوطِهِ، وَعَدَمِ قَبُولِهِ فَلَا يُثَابُ لِعَدَمِ الْقَبُولِ، وَلَا يُعَاقَبُ عِقَابَ تَارِكِ الْحَجِّ. اهـ.

أَيْ لِأَنَّ عَدَمَ التَّرْكِ يُبْتَنَى عَلَى الصِّحَّةِ: وَهِيَ الْإِتْيَانُ بِالشَّرَائِطِ، وَالْأَرْكَانُ وَالْقَبُولُ الْمُتَرَتِّبُ عَلَيْهِ الثَّوَابُ يُبْتَنَى عَلَى أَشْيَاءَ كَحِلِّ الْمَالِ وَالْإِخْلَاصِ كَمَا لَوْ صَلَّى مُرَائِيًا أَوْ صَامَ وَاغْتَابَ فَإِنَّ الْفِعْلَ صَحِيحٌ لَكِنَّهُ بِلَا ثَوَابٍ (رد المحتار، كتاب الحج، مطلب فيمن حج بمال الحرام-3/453-454،  الفتاوى الهندية، كتاب المناسك، الباب الاول-1/220)

 ৩য় প্রশ্নের জবাব

সাইয়্যেদ বংশীয় তথা রাসূল সাঃ এর বংশীয় কাউকে যাকাত ও সদকায়ে ফিতির দেয়া বৈধ নয়।তবে অন্যান্য সাধারণ দান করা যাবে।

তবে যদি নামকাওয়াস্তে সৈয়দ বংশীয় হয়। অর্থাৎ মূলত রাসূল সাঃ এর বংশীয় না হয়, তাহলে যাকাত গ্রহণ করতে পারে।

أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَخَذَ الحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، تَمْرَةً مِنْ تَمْرِ الصَّدَقَةِ، فَجَعَلَهَا فِي فِيهِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كِخْ كِخْ» لِيَطْرَحَهَا، ثُمَّ قَالَ: «أَمَا شَعَرْتَ أَنَّا لاَ نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ (صحيح البخارى، رقم الحديث-1491، صحيح مسلم، رقم الحديث-1069)

عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ قَالَ: أَتَيْتُ أُمَّ كُلْثُومٍ ابْنَةَ عَلِيٍّ بِشَيْءٍ مِنَ الصَّدَقَةِ فَرَدَّتْهَا وَقَالَتْ: حَدَّثَنِي مَوْلًى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يُقَالُ لَهُ: مِهْرَانُ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّا آلُ مُحَمَّدٍ لَا تَحِلُّ لَنَا الصَّدَقَةُ ” وَمَوْلَى الْقَوْمِ مِنْهُمْ (مسند احمد، رقم الحديث-15708

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *