প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম।
আপনাদের কাছে আমি একটা মেইল করেছিলাম গত ০৫/০৫/১৫ ইং তারিখে, প্রশ্নটি হচ্ছে মাযহাব মানা ওয়াজিব কেন?
কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি উত্তর পাইনি।
সুতারাং আমার মনে হচ্ছে আপনারা আমার উত্তরটা দিতে অক্ষম।
যদি অক্ষম না হয়ে থাকেন.. তাহলে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
আল্লাহ আপনাদের সহায়োক হোক।
আমীন।
প্রশ্নকর্তা– Abdul Karim Rasel
মেইল এড্রেস- [email protected]
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনার প্রশ্নটির ছোট করে জবাব হল, মাযহাব ছাড়া পূর্ণ দ্বীন মানা সম্ভব নয়, তাই চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা আবশ্যক।
যেমন দুই রাকাত নামায মাযহাবের অনুসরণ ছাড়া আদায় করা অসম্ভব।
উদাহরণতঃ
১
রুকু করা ফরজ কুরআন দ্বারা প্রমাণিত।
২
রুকুর তাসবীহ পড়া সুন্নত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
৩
রুকুতে গমণের সময় ইমাম জোরে তাকবীর বলে আর মুসল্লি আস্তে তাকবীর বলে। এ মাসআলা কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই। অথচ তা নামাযের মাসআলা। ইমাম যে জোরে তাকবীর বলে, আর মুসল্লি সর্বদা আস্তে আস্তেই তাকবীর বলে এভাবে আমল করার দ্বারা নামায শুদ্ধ হচ্ছে কি না? তা কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই।
এর সমাধান মাযহাবের ইমামদের ইজমা তথা ঐক্যমত্ব এর দ্বারা প্রমানিত হয়েছে।
৪
রুকুতে গিয়ে যদি কেউ ভুল তাকবীর না বলে, রুকুর তাসবীহের বদলে কেউ সেজদার তাসবীহ বলে ফেলল, তাশাহুদের বদলে সূরা ফাতিহা পড়ে ফেললো, জোরে কিরাতের স্থলে আস্তে কিরাত পড়ল, আস্তের স্থলে জোরে পড়ল এসব মাসআলার সমাধান ছাড়াতো সহীহ পদ্ধতিতে নামায পড়া সম্ভব নয়।
আর এসব মাসআলাসহ নামাযের অসংখ্য মাসায়েলের সমাধান না কুরআন দ্বারা প্রমাণিত, না হাদীস দ্বারা প্রমানিত। বরং এসব সমাধান মাযহাবের ইমামগণ কুরআন ও হাদীসের গভীর থেকে মূলনীতি বের করে এর আলোকে উদ্ভাবন করেছেন। আর তাদের উদ্ভাবিত সেসব মাসআলার নামই হল মাযহাব।
এইতো গেল শুধু নামাযের একটি ছোট্ট অংশের উদাহরণ। এমনিভাবে মানুষের জীবনঘনিষ্ট এমন অসংখ্য মাসআলার উপমা পেশ করা যাবে, যার সরাসরি কোন সমাধান কুরআন ও হাদীসে নেই। কিংবা অনেক স্থানেই বাহ্যিক বিরোধপূর্ণ।
তাই মাযহাব মানা ছাড়া সাধারণ মুসলমানদের কোন গত্যান্তর নেই। অন্তত দুই রাকাত ও পূর্ণ করে পড়ার জন্য প্রতিটি মুসলমান মাযহাবের প্রতি মুখাপেক্ষী।
তাই যেহেতু মাযহাব ছাড়া দুই রাকাত নামাযও পড়া যায় না, পূর্ণ দ্বীন মানাতো বহু দূরের কথা, তাই গায়রে মুজতাহিদ ব্যক্তিদের জন্য মাযহাব মানা ওয়াজিব।
বিঃদ্রঃ
আমাদের এখানে প্রায় সাড়ে পাঁচশত মেইল উতোমধ্যে জমা আছে। আমরা কোন প্রশ্নকেই এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি না। বা তু্চ্ছ মনে করি না ভাই। বাকি লোকবলের অভাব, সেই সাথে প্রশ্নের পাহাড়ের কারণে আমাদের প্রশ্নের জবাব দিতে দেরী হয়। আর যেহেতু সিরিয়াল অনুপাতে আমরা উত্তর দিতে চেষ্টা করি, তাই একটু দেরীতো হবেই। অনিচ্ছাকৃত ও অনীবার্য কারণবশতঃ দেরী হওয়া বিষয়কে দুর্বলতা মনে করা ঠিক হবে না। জাযাকাল্লাহ।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।