প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / ওয়াসওয়াসাঃ ইমাম আবু হানীফা রহঃ কে মানার নির্দেশ কুরআন ও হাদীসের কোথায় আছে?

ওয়াসওয়াসাঃ ইমাম আবু হানীফা রহঃ কে মানার নির্দেশ কুরআন ও হাদীসের কোথায় আছে?

প্রশ্ন

সম্মানিত মুফতী সাহেব! কিছুদিন পূর্বে এক শায়েখ মুজাফফর সাহেবের একটি ভিডিও দেখছিলাম। তাতে তিনি বলেছেন, ইমাম আবু হানীফাকে মানার কথা কুরআন ও হাদীসের কোথায় এসেছে? এটি কে আবশ্যক করল?

এ বিষয়ে আপনাদের মতামত আশা করছি।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

চূড়ান্ত পর্যায়ের জাহিল ছাড়া এমন কথা কেউ বলতে পারে না। উক্ত আহমককে প্রশ্ন করুন।

ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিজী, ইমাম নাসায়ী, ইমাম ইবনে মাজাহ, ইমাম আবু দাউদের নাম কুরআন ও হাদীসের কোথায় আছে? যার কারণে তাদের সংকলিত হাদীস মানতে হবে? এটি কে ফরজ করল যে, তাদের কিতাবকে “সিহাহ সিত্তাহ” নামে অভিহিত করতে হবে?

কারী আসেম কুফী রহঃ এবং কারী আবু হাফস রহঃ এর কিরাতের কথা কুরআন ও হাদীসের কোথায় আছে? যার কারণে তাদের কিরাত অনুপাতে আজীবন কুরআন শরীফ পড়তে হবে? এটি  কে ফরজ করল যে, তাদের কিরাত অনুপাতেই আজীবন কুরআন পড়তে হবে?

মুজাফফর সাহেবের বংশ তালিকা কুরআন ও হাদীসের কোথায় আছে? তাহলে তিনি কিসের ভিত্তিকে বৈধ সন্তান পরিচয় দিয়ে থাকেন? এটি কে ফরজ করল যে, তার একটি বংশ তালিকা আছে আর তিনি বৈধ বংশেরই সন্তান?

ইমাম বুখারী মুসলিম ছিলেন একথা কুরআন ও হাদীসের কোথায় আছে?

এই সকল উদ্ভট প্রশ্নের যে জবাব জাহিল মুজাফফর সাহেব প্রদান করবেন তার কৃত প্রশ্নটির একই জবাব হবে।

এসব ক্ষেত্রে যেমন তিনি বলবেন [যদি মাথায় ঘিলু নামক কোন বস্তু থাকে] যে, সবার নাম কুরআন ও হাদীসে থাকা আবশ্যক নয়। বরং ইজমা ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতেও অনেক কিছু প্রমাণিত হয়।

তাই ছয় কিতাবকে সিহাহ সিত্তাহ বলা হয় ইজমার ভিত্তিতে।

আবু আসেম কুফী রহঃ এর কিরাতে সারা বিশ্বে কুরআন পড়া হয় ইজমার ভিত্তিতে।

আর তার বংশ বৈধ বংশ সাক্ষের ভিত্তিতে।

আর ইমাম বুখারী রহঃ মুসলিম ছিলেন তা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত।

তেমনি ইমাম আবু হানীফা রহঃ একজন মুজতাহিদ। আর মুজতাহিদ ব্যক্তিকে মানার নির্দেশ পবিত্র কুরআনে এসেছে। ঘোষিত হচ্ছে-

وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ [٣١:١٥

যে আমার অভিমুখী হয়,তার পথ অনুসরণ করবে। {সূরা লুকমান-১৫}

তাহলে ইমাম আবু হানীফা রহঃ যেহেতু একজন আল্লাহ অভিমুখী মুজতাহিদ তাই তার অনুসরণ করা হয়ে থাকে। সেই সাথে তিনি নবীর  জবানে বলা শ্রেষ্ঠ যুগের ব্যক্তিত্ব। সুতরাং তাকে মানা মানে, কুরআনের নির্দেশ মানাই।

আর মুজতাহিদকে মানা এটি ইজমা দ্বারাও প্রমাণিত। সুতরাং এমন অহেতুক প্রশ্ন কেবল আহমক ও জাহিল ব্যক্তিই উত্থাপন করতে পারে। আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব মুর্খ শায়েখদের মুর্খতা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন। আমীন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

 

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

No comments

  1. Ansar Ahmed Choudhury

    ইমাম আবুহানিফাকে মানি+সহিহ হাদিছকেও মানি।।।

Leave a Reply to Ansar Ahmed Choudhury Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *