প্রশ্ন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতল্লাহ
মাননীয়
মুফতি সাহেব সমীপে
বিষয় ; ব্যাবসা বাণিজ্য বিষয়ক একটি ফাতওয়া প্রাপ্তি প্রসঙ্গে।
জনাব
যথাবিহিত সম্মানপুর্বক বিনিত নিবেদন এই যে আমি মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান মিশরে অবস্থিত এক্সিলেন্ট সুয়েটার ফ্যাক্টরির মালিক (৪জন শেয়ার)। ফ্যাক্টরির এই মুহুর্তে বেশকিছু টাকার প্রয়োজন। বিধায় বাংলাদেশি এক ভায়ের নিকট থেকে বাংলাদেশী টাকায় ৫লাখ পরিমাণ টাকা নিতে চাচ্ছি। যা মিশরী টাকায় ৫০,০০০ টাকা। এই ভিত্তিতে যে আমার ফ্যাক্টরিতে এই মুহুর্তে ১০০০ পিছ সুয়েটার আছে, যা মিশরী ৫০টাকা পিছ মূল্যে টাকা প্রদানকারী ভদ্রলোক কিনে নিচ্ছে। টাকা প্রদানের ৪ মাস পর আমি আখতারুজ্জামান ঐ ১০০০ পিছ মাল ৬০ টাকা দরে বিক্রি করে দেয়ার শর্তে উনি আমাকে টাকা দিচ্ছে। উল্লেখ্য যে টাকা প্রদানকারী ভদ্রলোকের এত মাল রাখার জায়গা নেই বিধায় আমার ফ্যাক্টরিতে মাল রাখতে চায়।
মোটকথা এখন ১০০০ পিছ সুয়েটার ৫০,০০০ মিশরি পাউন্ড দিয়ে কিনে দিলে ৪ মাস পরে উনি ৬০,০০০ মিশরি পাউন্ড লাভ সহ পাবে।
অতএব হুজুর সমীপে আমার আকুল আবেদন এই যে আমাকে ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে জানাবেন যে,এইভাবে কি আমার টাকা নেওয়া জায়েজ হবে।যদি না হয় তবে জায়েজ তরিকা টা জানালে কৃতজ্ঞ হতাম।
মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
কায়রো-মিশর।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উল্লেখিত পদ্ধতির ক্রয়-বিক্রয়টি শরীয়ত সম্মত নয়। ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তিতে এমন শর্তারোপ করা যার দ্বারা ক্রেতা বিক্রেতার অতিরিক্ত কোন ফায়দা নিহিত তা জায়েজ নয়। এর দ্বারা উক্ত ক্রয় বিক্রয় চুক্তিটি অশুদ্ধ হয়ে যায়।
উক্ত ক্রয়-বিক্রয়ের জায়েজ পদ্ধতি হতে পারে নিম্নরূপঃ-
প্রথমে ১০০০ পিছ সুয়েটার ৫০টাকা হারে ৫০ হাজার মিশরী টাকায় ক্রেতা বা তার প্রতিনিধি কিনে নিবে। ক্রয় করার সময় কোন শর্ত জোড়ে দেয়া যাবে না। ক্রয় বিক্রয় সম্পন্ন হওয়ার পর ক্রেতা বা তার প্রতিনিধি উক্ত মাল নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিবে।
তারপর বিক্রেতা তথা আখতারুজ্জামান বা উক্ত কোম্পানীর কোন ব্যক্তিকে উক্ত ১হাজার পিছ সুয়েটার ৬০টাকা হারে ৪মাসের মধ্যে বিক্রি করে দেয়ার জন্য ওকীল নিয়োগ করবে ক্রেতা। ৪মাস পর বিক্রি হওয়া পণ্যের উসূলকৃত ৬০হাজার মিশরী টাকা ১ম ক্রেতা নিয়ে যাবে মর্মে চুক্তি করবে।
এ চুক্তি হবে প্রথম ক্রয় বিক্রয় সম্পন্ন করার পর। যা প্রথম ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে অন্তর্ভূক্ত ছিল না। দ্বিতীয় চুক্তিটি পালন করা ক্রেতা তথা কোম্পানী কর্তৃপক্ষের জন্য আবশ্যক নয়। তবে মুসলিম হিসেবে ওয়াদা রক্ষার্থে তা দায়িত্বশীলতার সাথে পালন করা কোম্পানী কর্তৃপক্ষের উপর নৈতিকভাবে আবশ্যক হবে।
এভাবে দু’টি ভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে উক্ত ক্রয়-বিক্রয় এবং ও ওকীল নিয়োগ করে কার্য সম্পাদন করলে উক্ত চুক্তিটি শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধতা পাবে।
لو ذكرا البيع بلا شرط ثم ذكرا الشرط على وجه العقد جاز البيع ولزم الوفاء بالوعد، إذ المواعيد قد تكون لازمة فيجعل لازما لحاجة الناس تبايعا بلا ذكر شرط الوفاء ثم شرطاه يكون بيع الوفاء؛ (رد المحتار، كتاب البيوع، مطلب فى البيع بشرط فاسد-7/281، 547، البحر الرائق، كتاب البيوع، باب خيار الشرط-6/8
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।