প্রচ্ছদ / ওয়াকফ/মসজিদ/ঈদগাহ / কমিটির দুর্ব্যবহারের কারণে নতুন মসজিদ নির্মাণ করলে তাতে নামায পড়ার হুকুম কী?

কমিটির দুর্ব্যবহারের কারণে নতুন মসজিদ নির্মাণ করলে তাতে নামায পড়ার হুকুম কী?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ,আমাদের বাড়ি গফরগাঁও ময়মনসিংহ, আমাদের অনেক বড় এলাকা নিয়ে একটি মসজিদ তৈরী ১৯৮১ সালে এলাকার মানুষ কালেকশন করে এই মসজিদের নামে কয়েকটি জায়গা গ্রহণ করে।

তো যারা মসজিদে জমি দান করেছিল তারা খুবই প্রতাপশালী কমিটিতে তারাই থাকত এবং মসজিদ দেখবাল করত মসজিদের কোনো প্রয়োজনে তারা অন্যদের তারা পাত্তাই দিত না। তারা বলত এটা আমাদের মসজিদ তদের মাতব্বরি করার অধিকার কে দিছে এবং কুরুচিপুর্ণ কথা বলে  তখন তাদের মসজিদ দাবি করার পর যারা একটু দুরের মুছল্লি তারা বলল এটা আল্লাহর ঘর কিন্তু নিজেদের মসজিদ দাবি করে আমরা তাদের মসজিদে নামাজ পড়ব না। তারা একটি মসজিদ নির্মাণ করে সেখানে তারা নামাজ পড়ে মসজিদ দূরে থাকার কারণে এভাবে চলতে থাকে।

এর কিছুদিন পর যেটি পুরাতন মসজিদ সেটি পুনরায় একটু ভালো করে নির্মাণ করতে প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু মসজিদটি নদীর পাড়ে তাই ভাংগনের আসংখায় জায়গায় পরির্বতনের প্রস্তাব হয় তখন যারা পুরাতন মসজিদের জমির দাতা তারা বলে আমরা যেহেতু আগে জায়গা দিয়েছি এবং আমাদের মুরব্বিদের এখানে কবর আছে কাজেই আমরা পাশের জায়গাটি দিতে চাই।

এতে সবাই একমত পোশন করে এবং সেখানে মসজিদ তৈরী করতে প্রস্তুতি নেয় এবং টাকা সংগ্রহ করে কিন্তু জমি ওয়াকফ দিতে বিলম্ব করতে থাকে। ওয়াকফ করে দিতে বললে তারা সেই আগের আচরণ করে এবং বলে যে এটা আমাদের মসজিদ এখানে অন্যদের মাতব্বরি করার অধিকার নেই।

এক পর্যায়ে মসজিদের ৯০%+ মুছল্লি তাদের মসজিদ দাবি করার পর এই মসজিদ বাদ দিয়ে অন্য মসজিদে নামাজ পড়া আরম্ভ করে। এক পর্যায়ে মসজিদে যে কমিটি ছিল তাদের ১৫ জনের মধ্যে ১২ জনও বেরিয়ে আসে এবং সবার অনুদানে যে ওয়াকফ্ কৃত জমিন ছিল ওইখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করে।

সেখানে তারা নামাজ পড়তে শুরু করে এর কিছুদিন পর এলাকার চেয়ারম্যান আসে মিমংসা করার জন্য। যখন চেয়ারম্যান সব ঘটনা শুনে এবং পুরাতন মসজিদ ওয়ালাদের দোষ ক্রটি বেশি এবং যখন দেখল তাদের পক্ষে যাবেনা তখন তারা ওয়াক আউট হয়ে চলে যায়।

চেয়ারম্যান ও সাধারণ মুছল্লিদের পক্ষে রায় দেয়, এখন ওই নতুন মসজিদে নামাজ পড়া যায়েয কিনা অথবা এবং করনীয় কি একটু বিস্তারিত জানালে ভাল হয়।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

নতুন মসজিদে নামায পড়া জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই। এ মসজিদ যেহেতু প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। সুতরাং এটিকে আবাদ রাখতে হবে। মসজিদ নির্মাণ করে তা অনাবাদ রাখা মারাত্মক গোনাহের কাজ। বিঃদ্রঃ মসজিদ নির্মাণের পর তা নামাযের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দ্বারা উক্ত জায়গা ব্যক্তি মালিকানা থেকে বেরিয়ে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর যিম্মায় চলে যায়। নিজেদের মসজিদ দাবী করা অজ্ঞতা বৈ কিছু নয়। মসজিদে জায়গা দিয়ে এভাবে নিজেদের মালিকানা দাবী করা এবং খবরদারী করা জায়েজ নয়। তাই জমিদাতাদের এ বিষয়ে সতর্কতা কাম্য। কোন মতভেদ হলেই এক মসজিদের পাশে আরেক মসজিদ নির্মাণ করা যাতে করে প্রথম মসজিদের মুসল্লি ও আমদানীর ক্ষতি হয়, এমন নিয়তে মসজিদ নির্মাণ করা জায়েজ নেই। তাই মতভেদ হলেই নতুন মসজিদ বানানোর মানসিকতা পরিহার করা আবশ্যক।  

 

وأما لو تمت المسجدية، ثم أراد هدم ذلك البناء فإنه لا يمكن من ذلك (رد المحتار،  زكريا-6/548، كرتاشى-4/358)

ولو خرب ما حوله واستغنى عنه، يبقى مسجدا عند الإمام،  والثانى أبدا إلى قيام الساعة وبه يفتى (رد المحتار،  زكريا-6/548، كرتاشى-4/358، مجمع الأنهر، دار الكتب العلمية بيروت-2/595، مصرى قديم-1/748، البحر الرائق، زكريا-5/421، كويته-5/251)

فى الدر المختار: فإذا تم ولزم لا يملك ولا يملك ولا يعار ولا يرهن،

وفى رد المحتار: لا يكون مملوكا لصاحبه ولا يملك أى لا يقبل التمليك لغيره بالبيع ونحوه لاستحالة تمليك الخارج عن ملكه (رد المحتار، زكريا-6/539، كرتاشى-4/351-352)

فيزول ملك الواقف عنه إلى الله تعالى على وجه تعود منفعته إلى العباد فيلزم ولا يباع ولا يوهب ولا يورث (هداية-2/637)

وروى عن عطاء لما فتح الله الأمصار على عمر رضى الله عنه أمر المسلمين أن  يبنوا المساجد،  وأن لا يتخذوا فى مدينة مسجدين يضار أحدهما صاحبه (روح المعانى، زكريا-7/31، سورة التوبة، تحت رقم الآية-108)

إذا كان هذا مباهاة ورياء أو سمعة فهو أيضا مكروه بل بناء المساجد بهذه النية الفاسدة يكون مكروها أيضا (بذل المجهود،  كتاب الصلاة، باب فى بناء المساجد، مطبع سهارنبور-1/259، دار البشائر-3/158،  مصرى-3/278)

 

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

0Shares

আরও জানুন

‘সুন্দর সম্পর্ক কেন নষ্ট করে দিলা’ বলার দ্বারা কি স্ত্রী তালাক হয়ে যায়?

প্রশ্ন আস্সালামুআলাইকুম মুফতি সাহেব, এই প্রশ্ন কয়েকটা আগেও করেছিলাম, উত্তর না পেয়ে আবার করছি| ওয়াসওয়াসা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *