প্রচ্ছদ / আধুনিক মাসায়েল / সরকারের ঘোষণাকৃত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ কতটুকু শরীয়তসম্মত?

সরকারের ঘোষণাকৃত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ কতটুকু শরীয়তসম্মত?

প্রশ্ন

প্রশ্নকারীর নাম: Ashaduzzaman

ঠিকানা: Hazaribag, Dhaka

জেলা/শহর: Dhaka

দেশ: Bangladesh

প্রশ্নের বিষয়: সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সম্পর্কে

বিস্তারিত:
—————-
আসসালামু আলাইকুম, হযরত বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সরকারের যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করছে, এই বিষয়ে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন ধরনের হালাল/ হারাম বা কোন পরামর্শ আছে কি?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

সরকারের পক্ষ থেকে চালুকৃত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ এর সাথে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে হালালের কোন সম্পর্কই নেই। এটা পুরোটাই হারাম।

এটা মূলত সুদভিত্তিক ঋণ প্রদানের অন্তর্ভূক্ত।

কারণ, গ্রাহক যে টাকাগুলো জমা দিবে এর সাথে নির্দিষ্ট হারে সরকার সরকারী কোষাগার থেকে টাকা সংযুক্ত করে গ্রাহকের বয়স ৬০ বছর হলে তা ফেরত দিতে থাকবে। আসলে সরকারের নিজের পক্ষ থেকে নয়, বরং জনগণের উপর বিভিন্ন পণ্য ও সেবার উপর অতিরিক্ত করারোপ করে তা জনগণ থেকেই গ্রহণ করা হচ্ছে ও হবে। সেই টাকা নির্দিষ্ট হারে সুদ হিসেবে আবার প্রদান করা হবে।

যা মহাজনী সুদের চেয়েও মারাত্মক জুলুমী সুদের অন্তর্ভূক্ত।

এটা জায়েজের একটি পদ্ধতি আছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রচলিত ধারার কোন সরকারই জায়েজ পদ্ধতিটি অনুসরণ করবে বলে মনে হয় না। সেটা হলো, যদি মুদারাবা চুক্তিতে সরকার জনগণ থেকে উক্ত টাকা গ্রহণ করতো। তারপর সেই টাকা ইনভেস্ট করে সরকার ব্যবসা করে গ্রাহকদের লভ্যাংশ প্রদান করতো, তাহলে এটা জায়েজের পর্যায়ে আসতো।

কিন্তু এ প্রস্তাব দেয়া বর্তমানে অরণ্য রোদনের মতোই।

তাই এ সুদী কারবার থেকে বিরত থাকা প্রতিটি ঈমানদারদের উপর ঈমানী কর্তব্য।


عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا، أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ الرَّجُلُ أُمَّهُ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সুদের গুনাহর সত্তরটি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্তর হলো আপন মাকে বিবাহ (যেনা) করা। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২৭৪, শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫১৩১, মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-২২৫৯]

عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَكَاتِبَهُ

ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -সূদখোর, সূদ দাতা সূদের সাক্ষীদ্বয় ও সূদের (চুক্তি বা হিসাব) লেখককে অভিসম্পাত করেছেন। [সুনানে তিরমিজী-১/২২৯ হাদীস নং-১২০৬, সহীহ মুসলিম-২/৭২, হাদীস নং-১৫৯৮]

 
وكون الربح بينهما شائعا فلو عين قدرا فسدت وكون نصيب كل منهما معلوما عند العقد (رد المحتار، زكريا-8/433، كرتاشى-5/648)

ومن شرطها أن يكون الربح بينهما مشاعا لا يستحق أحدهما منه دراهم مسماة (مختصر القدورى، كتاب المضاربة-188، هداية، اشرفى-3/258)

اذا شرطا الربح على قدر المالين متساويا، أو متفاضلا، فلا شك أنه يجوز ويكون الربح بينهما على الشرط (بدائع الصنائع، زكريا-5/83، كرتاشى-6/62، الفتاوى الهندية-2/320، جديد-2/326)

ويجوز مع ذلك أن يتساويا فى الربح، أو يختلفا فيوزع الربح بينهما حسب الشرط الذى اتفقا عليه (الفقه الإسلامى وأدلته-4/592، 606-610)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

তরজমাসহ কুরআন কি কুরআনের মতো সম্মানিত?

প্রশ্ন আসসালামু অলাইকুম। আমি জানতে চাই এক খন্ডের যেসব তাফসীর পাওয়া যায় সেগুলোতে পূর্ন আরবী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস