প্রশ্ন
From: Abdul
বিষয়ঃ Jakath
প্রশ্নঃ
যাকাত কাদেরকে দেয়া উচিত এবং যাকাতের পরিমাণ বর্তমান হিসেবে কত টাকা করে দিতে হবে বলবেন?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ [٩:٦٠]
যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। {সূরা তাওবা-৬০}
মোট ৮ ধরণের ব্যক্তিকে যাকাত দেয়ার কথা কুরআনে বর্ণিত। যথা-
১- গরীব। যার সম্পদ আছে কিন্তু নেসাব পরিমাণ মালের মালিক নয়।
২- মিসকিন। যার একদমই কোন সম্পদ নেই।
৩- ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য শরীয়ত নির্দিষ্ট যাকাত আদায়কারী আমেল। এটা ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত হতে হবে। নিজে নিজে মনে করে নিলে হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-৬/৬৯}
৪- নব মুসলিমদের ইসলামের প্রতি মোহাব্বত বাড়ানোর জন্য উৎসাহমূলক যাকাত প্রদান।
এ বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে কোন ধনী নওমুসলিমকে যাকাত প্রদান জায়েজ নয়। {হিদায়া-১/১৮৪, মাআরিফুল কুরআন-৪/১৭১, তাফসীরে মাযহারী-৪/২৩৫}
৫- দাসমুক্তির জন্য। যেহেতু বর্তমানে দাসপ্রথা নেই। তাই এ খাতটি বাকি নেই।
৬- ঋণগ্রস্তের জন্য।
৭- ফী সাবিলিল্লাহ। তথা আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য। এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রাস্তায় কারা আছে? ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেন এতে রয়েছেন-
জিহাদরত মুজাহিদরা। তাদের জিহাদের অস্ত্র ও পাথেয় ক্রয় করার জন্য যাকাতের টাকা গ্রহণ করবে। হজ্বের সফরে থাকা দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। ইলমে দ্বীন অর্জনকারী দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। {আদ দুররুল মুখতার-৩৪৩, হিদায়া-১/১৮৫, রূহুল মাআনী-৬/৩১৩}
৮- সফররত ব্যক্তিকে। যার টাকা পয়সা আছে বাড়িতে। কোন সফর অবস্থায় অসহায়। তাকে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ।
সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বয়ান্ন তোলা রূপা বা বর্তমান বাজারমূল্য অনুপাতে সাড়ে বয়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্য পরিমাণ টাকার মালিক হলে, তার উপর বছর অতিক্রান্ত হলে আপনার উপর যাকাত আবশ্যক।
যাকাতযোগ্য সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হয়।
যাকাত ওয়াজিব হলে শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত প্রদান করা আবশ্যক।
عَنْ عُبَيْدَةَ، قَالَ: سَأَلْتُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ رَجُلٍ لَهُ مِائَةُ دِرْهَمٍ وَعَشَرَةُ دَنَانِيرَ، قَالَ: «يُزَكِّي مِنَ الْمِائَةِ بِدِرْهَمَيْنِ، وَمِنَ الدَّنَانِيرِ بِرُبْعِ دِينَارٍ» وَقَالَ سَأَلْتُ الشَّعْبِيَّ فَقَالَ: «يُحْمَلُ الْأَكْثَرُ عَلَى الْأَقَلِّ، أَوْ قَالَ عَلَى الْأَكْثَرِ، فَإِذَا بَلَغَتْ فِيهِ الزَّكَاةُ زَكَّى (المصنف ابن ابى شيبة، كتاب الزكاة، فى الرجل تكون عندها مائة درهم وعشرة دنانير-6/393، رقم-9978)
وفى الخانية:فى كل مأتى درهم خمسة دراهم وفى كل عشرين مثقال نصف مثقال (تاتارخانية، كتاب الزكاة، زكاة المال-3/155، رقم-3977
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com