প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / দ্বিতীয় বিয়ে করতে কি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগবে?

দ্বিতীয় বিয়ে করতে কি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগবে?

প্রশ্ন

Shamim Hikmat

মোহতারাম মুফতি সাহেবের কাছে জানার বিষয় হলো।

দ্বিতীয় বিবাহ করার ক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে শরিয়ত কি বলে?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রথম স্ত্রীর অনুমতি জরুরী নয়। অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলেও তা শুদ্ধ হয়ে যাবে।

তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, ইসলাম একাধিক বিয়ের অনুমতি তখনি প্রদান করেছে, যখন উভয় স্ত্রীর হক সমানভাবে, কোন প্রকার বৈষম্য ছাড়া আদায় করতে পারবে, তখন।

সাম্যতা বজায় রাখতে না পারলে, কিংবা হক আদায় করতে না পারলে দ্বিতীয় বিবাহ করা জায়েজ নয়।

فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً [٤:٣]

সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই [সূরা নিসা-৩]

যদিও অনুমতি ছাড়াই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে অনুমতি নেয়াই বাঞ্ছনীয়। যেহেতু স্ত্রীকে খুশি রাখাও স্বামী একটি দায়িত্ব। নবীজী এ বিষয়ে খুবই গুরুত্ব প্রদান করেছেন।


وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا، فَإِنَّهُنَّ خُلِقْنَ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلاَهُ، فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আমার নিকট হতে নারীদের সাথে সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তাদেরকে পাঁজরের হাড় দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং হাড়ের মধ্যে সর্বাধিক বাঁকা হাড় হল উপরেরটি। [সেই হাড় হতেই নারীদের সৃষ্টি করা হয়েছে]। অতএব তুমি যদি তা সোজা করতে চাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। আর ঐভাবে ফেলে রাখলে সর্বদা উহা বাঁকাই থাকবে; সুতরাং তোমরা নারীদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে। {বুখারী, হাদীস নং-৫১৮৬}

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: “أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خلقا، وخياركم خياركم لنسائهم

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মধ্যে পূর্ণতর মুমিন সেই ব্যক্তি, যার আচার আচারণ উত্তম। আর তোমাদের মাঝে উত্তম সেই ব্যক্তি যে তার স্ত্রীদের কাছে উত্তম। {সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪১৭৬}

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ مِنْ أَكْمَلِ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا، أَحْسَنَهُمْ خُلُقًا، وَأَلْطَفَهُمْ بِأَهْلِهِ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মাঝে সেই ব্যক্তি অধিকতর পূর্ণ মুমিন, যে ব্যক্তি সদাচারী এবং নিজ পরিবারের জন্য কোমল এবং অনুগ্রহশীল। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪২০৪, তিরমিজী, হাদীস নং-২৬১২}

এসব হাদীসের আলোকে বুঝা যায় যে, দ্বিতীয় বিয়ের সময় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেয়াটাই উচিত।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

ভুলে আপন ভাগ্নির মেয়েকে বিয়ে করে সন্তান হয়ে গেলে করণীয় কী?

প্রশ্ন আসসালামুওয়ালাইকুম উস্তাজ, আমার আত্নীয় ২০১৮ সালে বিয়ে করেন। অজ্ঞতা বসত আপন ভাগ্নির মেয়েকে বিয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *