প্রশ্ন
From: আব্দুল্লাহ আল ফারুক
বিষয়ঃ রাফউল ইয়াদাইন
প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাই কুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
মাননীয়,
আমার প্রশ্ন হল কথিত আহলে হাদিসের এক অনুসারি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু পর্যন্ত রাফা ইদাইন প্রমান করতে গিয়ে একটা দলিল পেশ করে ওয়াইল বিন হুজুর থেকে (বাইহাকি) সে বলে এটা দশম হিজরিতে বর্ণিত যেহেতু নাবি (সাঃ) এর ইন্তেকাল এগার হিজরিতে তাই সে উক্ত হাদিস কে প্রমান হিসাবে পেশ করছে। উক্ত হাদিস সন্মন্ধে আপনার মতামত কি? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
লা মাযহাবী বন্ধুরা ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ এর রফউল ইয়াদাইন সম্পর্কিত হাদীসের অর্ধেক উল্লেখ করে। পূর্ণটা উল্লেখ করে না।
আমরা পূর্ণ হাদীসটা একটু দেখে নেইঃ-
عَنْ أَبِي وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ ” إِذَا كَبَّرَ رَفَعَ يَدَيْهِ، قَالَ: ثُمَّ الْتَحَفَ، ثُمَّ أَخَذَ شِمَالَهُ بِيَمِينِهِ وَأَدْخَلَ يَدَيْهِ فِي ثَوْبِهِ قَالَ: فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ أَخْرَجَ يَدَيْهِ ثُمَّ رَفَعَهُمَا، وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَ يَدَيْهِ ثُمَّ سَجَدَ وَوَضَعَ وَجْهَهُ بَيْنَ كَفَّيْهِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ أَيْضًا رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ “
আবূ ওয়ায়েল ইবনু হূজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে নামায আদায় করি তাকবীর বলার সময় নিজের দুই হাত উঠাতেন পরে তিনি তার হাত কাপড়ের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন। রাবী বলেন, অতঃপর যখন রুকূর ইরাদা করেন, তখন স্বীয় হাত দু’খানা বের করে উপরে উঠাতেন। তিনি রুকু হতে মাথা উঠানোর সময়ও দুই হাত উপরে উঠান। অতঃপর তিনি সিজদায় যান এবং স্বীয় চেহারা দুই হাতের তালুর মধ্যবর্তী স্হানে স্হাপন করেন। অতঃপর তিনি সিজদা হতে মাথা উঠাবার সময়ও স্বীয় হাত দুইখানা উত্তোলন করেন। এভাবে তিনি তাঁর নামায শেষ করেন। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৭২৬, ইফাবা-৭২৩]
এ হাদীসে ২টি বিষয় পাওয়া গেল। যথা-
১- রুকুতে যেতে আসতে রফউল ইয়াদাইন।
২- সেজদা থেকে উঠার সময়ও রফউল ইয়াদাইন।
যদি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ দশ হিজরীতে এসে থাকেন। সেই হিসেবে তিনি যা দেখেছেন, সেটাকেই নবীজীর শেষ জীবন পর্যন্তের আমল সাব্যস্ত করা হয়।
তাহলে ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদীসে যে হাদীসে রুকুর রফউল ইয়াদাইনের কথা উদ্ধৃত হয়েছে, ঠিক সেখানেই সেজদার রফউল ইয়াদাইনের কথাও উদ্ধৃত হয়েছে।
তাহলে সেজদার রফউল ইয়াদাইনটাও নবীজীর শেষ জীবন পর্যন্তের আমল সাব্যস্ত হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হল, সেজদায় যাবার রফউল ইয়াদাইন করা কেন লা মাযহাবীরা করে না? অথচ তাদের যুক্তি অনুপাতে এটাও নবীজীর আজীবনের আমল!
যে হাদীসের উপর তাদের নিজেদেরই আমল নেই। সেই হাদীস দিয়ে দলীল পেশ করার সুযোগইতো নেই।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]