প্রচ্ছদ / অজু/গোসল/পবিত্রতা/হায়েজ/নেফাস / সারাক্ষণ পায়ুপথে বাতাস বের হবার সন্দেহ হলে করণীয় কি?

সারাক্ষণ পায়ুপথে বাতাস বের হবার সন্দেহ হলে করণীয় কি?

প্রশ্ন

From: ফয়সাল আহমেদ
Subject: নামাজ ভঙ্গ  হবে কখন বুঝার উপায়?
Country : বাসাবো, ঢাকা, বাংলাদেশ
Mobile : 01914390831
Message Body:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

আমরা যখন নামাজ পড়ি, তখন অনেক সময় মনে হয় পিছনের রাস্তা দিয়ে বায়ু বের হয়েছে, তবে কোন আওয়াজ বা গন্ধ বের হয় নাই,অথবা হালকা আওয়াজ আসছে যাকিনা মনে হচ্ছে ভিতর থেকে আসছে, এক্ষেত্রে
1. নামাজ না ভেঙ্গে নামাজ পড়তে থাকলে কি হতে পারে?
2. অথবা কখন বুঝবো নামাজ ভাংতে হবে?
3. আর যদি সেদিন পেট সারাদিন ঘুট ঘুট করে অসুস্থতার কারনে, বার বার অজু ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় জামাতে নামাজ/একা নামাজ পড়তে থাকলে কি সমস্যা হতে পারে?
4. অন্য কোন সমাধান আছে যদি নামাজে মনে হয় বার বার বায়ু বের হচ্ছে, পেটে যদি সমস্যা থাকে।

5. কি করতে পারি যখন মনে হয় পিছনে দিয়ে বায়ু বের হচ্ছে জামাত অথবা নামাজ ছেড়ে দিবো কিনা?

সমাধান দিলে উপকৃত হবো

জবাব

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ওয়া আলাইকুম আস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

মৌলিকভাবে আপনার প্রশ্নটি হল ৩ টি। যথা-

১-আওয়াজ ও গন্ধ না হয়ে পিছনের রাস্তা দিয়ে বাতাস বের হলেও কি অযু ভাঙ্গবে?

২-যদি কারো অনবরত এমনটি হতে থাকে তাহলে তার ক্ষেত্রে বিধান কি?

৩-নামাযের মাঝে এমন হলে করণীয় কি?

উত্তরগুলো খেয়াল করুন উত্তরের শুরুতে প্রশ্ন বিন্যাস অনুযায়ী-

১ নং এর উত্তর

আওয়াজ বা গন্ধ বের হওয়া জরুরী নয়, বরং যদি নিশ্চিত ধারণা হয় যে, পিছনের রাস্তা দিয়ে বায়ু বের হয়েছে তাহলে অযু ভেঙ্গে যাবে। শুধুমাত্র ধারণা বশতঃ হলে অযু ভাঙ্গবে না। {ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ-১/১৪৭}

فى رد المحتار-  وينقضه خروج نجس الخ___  ( و ) خروج غير نجس مثل ( ريح أو دودة أو حصاة من دبر لا ) خروج ذلك من جرح ، ولا خروج ( ريح من قبل ) الخ___لو خرج ريح من الدبر وهو يعلم أنه لم يكن من الأعلى فهو اختلاع فلا ينقض، (الفتاوى الشامية، كتاب الطهارة، مطلب نواقض الوضوء-1/260-264

২ নং এর উত্তর

যে ব্যক্তির অনবরত বায়ু বের হয় পিছনের রাস্তা দিয়ে বা রক্ত ঝরে বা প্রশ্রাব ঝরে, বা এ জাতীয় কোন রোগে আক্রান্ত যার কারণে এতটুকু সময় পাক থাকা সম্ভব নয়, যাতে সে সময়ের ফরজ নামাযটি আদায় করা যায়। শরীয়তের পরিভাষায় উক্ত ব্যক্তি মাজুর। এরকম মাজুর ব্যক্তির হুকুম হল নামাযের সময় হয়ে গেলে অযু করবে আর সে অযু দিয়ে সামনের নামাযের সময় শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত নামায পড়তে পারবে। নামায ভাঙ্গবে না। কিন্তু পরের নামাযের সময় হয়ে গেলেই অযুটি ভেঙ্গে যাবে। আবার নতুন করে অযু করে নামায পড়তে হবে। এভাবে মাজুর ব্যক্তি নামায আদায় করবে।

فى حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-وتتوضأ المستحاضة ومن به عذر كسلس بول واستطلاق بطن لوقت كل فرض ويصلون به ما شاءوا من الفرائض والنوافل

 ويبطل وضوء المعذورين بخروج الوقت فقط  متى يثبت العذر 

 ولا يصير معذورا حتى يستوعبه العذر وقتا كاملا ليس فيه انقطاع بقدر الوضوء والصلاة وهذا شرط ثبوته

 وشرط دوامه وجوده في كل وقت بعد ذلك ولو مرة

 وشرط انقطاعه وخروج صابحه عن كونه معذورا خلو وقت كامل عنه

 (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ، كتاب الطهارة، باب الحيض والنفاس والاستحاضة-148-151)

তথ্যসূত্র

১-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-১৪৮-১৫১

২-ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫০৪-৫০৫

৩-মাজমাউল আনহুর-১/৮৪

৪-ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-১০/২৬১

৩ নং প্রশ্নের জবাব

নামাযের মাঝে অযু ভেঙ্গে গেলে নামায ছেড়ে দিয়ে আবার অযু করে এসে পূর্ব নামাযের উপর বেনা করতে পারবে। তথা যেমন ফজরের দুই রাকাত নামাযের এক রাকাত পড়ার পর অযু ভেঙ্গে গেছে, তাহলে কথাবার্তা না বলে নিকটবর্তী অযুখানা থেকে অযু করে এসে নামাযে শরীক হয়ে যাবে। তাহলে নতুন করে নামায শেষে প্রথমে আদায় করা এক রাকাত নামায আর দ্বিতীয়বার আদায় করতে হবে না। ধরা হবে মূলত নামায ভঙ্গই হয়নি হুকুমের দিক থেকে। আর যদি এসে দেখা যায় যে, ইমাম সাহেব আখেরী বৈঠকে বসে গেছে, তাহলে নিজে নিজে রুকু সেজদা দিয়ে ইমাম সাহেবের সাথে তাশাহুদে বসে যাবে। এবং ইমামের সাথে সালাম ফিরাবে। নামায হয়ে যাবে। কোন সমস্যা নেই।

فى الفتاوى الهندية- من سبقه حدث توضأ وبنى كذا في الكنز والرجل والمرأة في حق حكم البناء سواء (الفتاوى الهندية، كتاب الصلاة، الباب السادس في الحدث في الصلاة-93، والبحر الرائق، كتاب الصلاة، باب الحدث فى الصلاة-1/642

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *