প্রশ্ন
সালাম। মুফতী সাহেব!
এক মহিলার স্বামী ইন্তেকাল করেছে। তারপর উক্ত মহিলা তার স্বামী থেকে সন্তানবতী হবার তীব্র ইচ্ছে থাকায় সে তার মৃত স্বামী থেকে বীর্য সংগ্রহ করেছে। তারপর সেটিকে তার জরায়ুতে ডাক্তারদের মাধ্যমে প্রেরণ করে গর্ভবতী হয়েছে। এভাবে সে সন্তানও জন্ম দিয়েছে টেষ্টটিউব পদ্ধতিতে।
এখন প্রশ্ন উক্ত কর্মটি শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হয়েছে কি না?
দ্বিতীয়তা উক্ত সন্তানটির পিতা মৃত পুরুষটিকে বলা যাবে কি না?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামী শরীয়তে মৃত্যু ও ঐ সকল কারণগুলোর অন্তর্ভূক্ত যদ্বারা স্বামী স্ত্রীর মাঝের সম্পর্ক শেষ কর্তিত হয়ে যায়। তাই যখনি পুরুষটি ইন্তেকাল করেছে, তখনি উক্ত মহিলা এক হিসেবে পুরুষটির স্ত্রী হওয়া থেকে বেরিয়ে গেছে। এখন তারা একে অপরের জন্য অপরিচিত ব্যক্তির মতই। এজন্য স্বামী তার মৃত স্ত্রীর গোসল দিতে পারে না। সেই সাথে একে অন্যের লুকায়িত অঙ্গ দেখাও জায়েজ নয়। হারাম। তাই এখন উক্ত পুরুষটির বীর্যের মাধ্যমে কোন ফায়দা নেয়া মানে হল বেগানা কোন পুরুষের বীর্য দ্বারা ফায়দা নেয়া। আর একাজটি নাজায়েজ ও গোনাহ হবার মাঝেতো কোন সন্দেহই নেই।
তাছাড়া এটি সন্তান ধারণের স্বাভাবিক পদ্ধতির খেলাফ। তাই এটি এমনিতেই অপছন্দনীয় বিষয়।
দ্বিতীয় অংশ
শিশুর নসব ঐ ব্যক্তির সাথে প্রমাণিত হয়, যার সাথে শিশুটির মা একই বিছানায় থাকেন। যখন মৃত্যুর মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রীর বন্ধন শেষ হয়ে গেল। তখন মৃত স্বামীর জন্য স্ত্রীটি আর “ফিরাশ” তথা সয্যাসঙ্গী আর বাকি নেই। তাই একথাতো পরিস্কার যে, উক্ত মহিলার গর্ভ থেকে প্রসব হওয়া সন্তানের নসবও ঐ মৃত ব্যক্তি থেকে প্রমাণিত হবে না। যেমন জিনার দ্বারা কারো নসব প্রমাণিত হয় না। যদিও উভয় স্থানে বীর্যধারী পুরুষটিকে শনাক্ত করাও যায়। নতুবাতো তারা উক্ত পুরুষ থেকে মিরাস পাবারও হকদার হয়ে যেতো।
সুতরাং বুঝা গেল যে, এর দ্বারা উক্ত মৃত পুরুষটি পিতা বলে স্বীকৃতি পাবে না।
عن ابى هريرة رض الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الولد للفراش وللعاهر الحجر (الجامع للمرمذى، رقم الحديث-1157)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।