প্রশ্ন
ফাযায়েলে আমাল সেই সময় লেখা হয় যখন শাইখুল হাদীস সাহেবকে ব্রেইন নির্ভর কোন কাজ করতে নিষেধ করেছেন। হযরত শায়েখ নিজেই লিখেছেন-“সফর ১৩৭৫ হিজরীতে এক অসুস্থতার কারণে কয়েক দিনের জন্য ব্রেইন নির্ভর কাজ করতে নিষেধ করা হয়। তখন আমি ভাবলাম-এ অবসর সময়ে এই বরকতপূর্ণ কাজে নিজেকে মগ্ন রাখি”।
ফাযায়েলে আমাল-৮, রেসালায়ে হেকায়েতে সাহাবা}
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
অভিযোগকারী ধোঁকা ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এ ইবারতটিকে পূর্ণ কিতাবের উপর চাপানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন। অথচ ফাযায়েলে আমাল বিভিন্ন ছোট্ট পুস্তিকার সংকলন। আর এ সকল পুস্তিকাগুলো ভিন্ন ভিন্ন সময়ে লেখা হয়েছে। যেমন-
১-হেকায়েতে সাহাবা-শাওয়াল ১৩৫৮ হিজরী।
২-ফাযায়েলে কুরআন-জিলহজ্ব ১৩৪৮ হিজরী।
৩-ফাযায়েলে নামায-মুহাররম ১৩৫৮ হিজরী।
৪-ফাযায়েলে জিকির-শাওয়াল ১৩৫৮ হিজরী।
৫-ফাযায়েলে তাবলীগ-সফর ১৩৫০ হিজরী।
৬-ফাযায়েলে রমাযান-রমযান ১৩৪৯ হিজরী।
হযরত শাইখুল হাদীস সাহেব অসুস্থ অবস্থায় শুধুমাত্র “হেকায়েতে সাহাবা” লিখেছেন। বাকি চারটি রেসালা সুস্থ্য অবস্থায় লিখেছেন। অথচ অভিযোগকারীরা চাতুরী ও মিথ্যার আশ্রয় একথা প্রমাণ করতে চাচ্ছেন যে, হযরত পুরো ফাযায়েলে আমাল অসুস্থ অবস্থায় লিখেছেন। এছাড়াও আরেকটি জগন্য মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে বলা হয়েছে যে, অসুস্থ্যতাও এমন অসুস্থ্যতা যেটা ব্রেইনের সাথে সম্পর্কিত। অথচ বিষয়টি এমন নয়। হযরতের ব্রেইন সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। কোন সমস্যা ছিল না। অসুস্থতা ছিল অন্য। যেদিকে হযরতের এই ইবারত সুষ্পষ্ট ইংগিত বহন করছ-“একটি অসুস্থতার কারণে”। সেই অসুস্থতাটি কি ছিল? তিনি নিজেই তা পরিস্কার ভাষায় বলেছেন-সেটি ছিল নাকসীর তথা নাক দিয়ে রক্তক্ষরণের অসুস্থতা।
দেখুন-হযরতের লেখা স্বীয় আত্মজীবনী-“আব বীতী”-১/১৭৬, কুতুবে ফাযায়েলে আমাল পর ইশকালাত আওর উনকা জাওয়াব-২৫}
অভিযোগকারীদের কাছে আমরা প্রশ্ন রাখি-হেকায়েতে সাহাবাতে এমন কি কথা আছে, যা কুরআন সুন্নাহের বিপরীত?যদি কুরআন সুন্নাহের বিপরীত কোন বক্তব্য দেখাতে না পারে, তাহলে মেনে নিতে হবে এটা আমাদের শাইখের একটি কারামাত। তিনি অসুস্থ অবস্থায়ও এত সুন্দরভাবে কিতাব লিখেছন। যদি সুস্থ্য থাকতেন, তাহলে কত সুন্দর করে লিখতেন?!
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com