প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / বিবাহিত মেয়েকে বিবাহে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিয়ে দেয়ার হুকুম কি?

বিবাহিত মেয়েকে বিবাহে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিয়ে দেয়ার হুকুম কি?

প্রশ্ন

আসালামু আলাইকুম ।

আমার নাম মোঃ আল আমিন ।

গৌরনদী , বরিশাল ।

হুজুর আমি জানতে চাই যে , কোন মেয়ের একবার বিয়ে হওয়ার পর যদি মেয়ের পরিবার মেয়েকে দ্বিতীয় বার বিবাহ দেয়, অতঃপর পরিবার জানতে পারলো যে প্রথম স্বামি তালাক না দিলে দিতীয় বার বিবাহ দেওয়া যায় না । আর এই মাসআলা তারা ১বছর পর জানতে পারলো । এখন তাদের করণীয় কী ? ।  জানালে অনেক উপকার হয় ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যে মেয়েটির বিবাহ হয়েছে তাকে যখন দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া হচ্ছিল, তখন তার জন্য জরুরী ছিল তার বিবাহের কথা জানিয়ে দেয়া। কারো বিবাহে থাকা অবস্থায় অন্য কারো সাথে বিবাহ করলে তা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে সহীহ হয় না। তাই মেয়েটি ইচ্ছেকৃত তা প্রকাশ না করে স্বামী ছাড়া আরেকজনের সাথে রাত্রি যাপনের কারণে কঠিন গোনাহগার হয়েছে। মেয়েটি আরেকজনের বিবাহে আছে জেনেও যদি পরিবারের লোকজন দ্বিতীয় বিবাহ দিয়ে থাকে, তাহলে পরিবারের লোকজন ও মারাত্মক গোনাহের কাজ করেছে। এর জন্য সবাইকে তওবা করতে হবে।

এক্ষেত্রে যেহেতু দ্বিতীয় বিবাহই শুদ্ধ হয়নি। তাই দ্রুত দ্বিতীয় স্বামী থেকে স্ত্রীকে আলাদা করতে হবে। উক্ত মহিলাকে প্রথম স্বামীর কাছেই ফেরত পাঠাতে হবে। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রথম স্বামী থেকে তালাক নেয়ার পর ইদ্দত পালন শেষে অন্য কারো সাথে বা যার সাথে দ্বিতীয়বার পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়েছিল তার সাথে বিবাহ দিতে পারবে।

প্রথম স্বামীর কাছে ফেরত যাবার ক্ষেত্রে স্মরণ রাখতে হবে যে, যদি প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ হয়েছে একথা না জেনে দ্বিতীয় স্বামী বিবাহ করে থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিবাহ হয়নি জানার পর প্রথম স্বামীর কাছে যখন স্ত্রী ফেরত যাবে, তখন প্রথম স্বামীর জন্য বিবাহ করা জরুরী নয়। কিন্তু উক্ত মহিলার ইদ্দত পালন করে প্রথম স্বামীর কাছে যাওয়া জরুরী। ইদ্দত পালনের আগে যাওয়া জায়েজ নয়।

তবে যদি দ্বিতীয় স্বামী জেনে-শুনেই বিবাহ করে থাকে। অর্থাৎ উক্ত মহিলা আরেকজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে একথা জেনেই বিবাহ করে থাকে। তাহলে উক্ত মহিলার প্রথম স্বামীর কাছে ফেরত যাওয়ার জন্য ইদ্দত পালনের কোন প্রয়োজন নেই। এমনিতেই ফেরত চলে যাবে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর জন্য মহিলার সাথে সহবাস করা জায়েজ নয়। হারাম হবে।

فى الفتاوى الهندية- لَا يَجُوزُ لِلرَّجُلِ أَنْ يَتَزَوَّجَ زَوْجَةَ غَيْرِهِ وَكَذَلِكَ الْمُعْتَدَّةُ، كَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ. (الفتاوى الهندية، كِتَابُ النِّكَاحِ وَفِيهِ أَحَدَ عَشَرَ بَابًا، الْبَابُ الثَّالِثُ فِي بَيَانِ الْمُحَرَّمَاتِ وَهِيَ تِسْعَةُ أَقْسَامٍ، الْقِسْمُ السَّادِسُ الْمُحَرَّمَاتُ الَّتِي يَتَعَلَّقُ بِهَا حَقُّ الْغَيْرِ-1/280، بدائع الصنائع، كتاب النكاح عدم جواز منكوحة الغير-2/547، زكريا، البحر الرائق، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/108

وفى رد المحتار- اما نكاح منكوحة الغير ومعتدة لم يقل احد بجوازه فلم ينعقد اصلا (رد المحتار، كتاب النكاح، باب العدة، مطلب فى النكاح الفاسد والباطل-5/197، 4/274، قاضى خان على الهندية-1/366)

فى الفتاوى الهندية-وَلَوْ تَزَوَّجَ بِمَنْكُوحَةِ الْغَيْرِ وَهُوَ لَا يَعْلَمُ أَنَّهَا مَنْكُوحَةُ الْغَيْرِ فَوَطِئَهَا؛ تَجِبُ الْعِدَّةُ، وَإِنْ كَانَ يَعْلَمُ أَنَّهَا مَنْكُوحَةُ الْغَيْرِ لَا تَجِبُ حَتَّى لَا يَحْرُمَ عَلَى الزَّوْجِ وَطْؤُهَا، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ.. (الفتاوى الهندية، كِتَابُ النِّكَاحِ وَفِيهِ أَحَدَ عَشَرَ بَابًا، الْبَابُ الثَّالِثُ فِي بَيَانِ الْمُحَرَّمَاتِ وَهِيَ تِسْعَةُ أَقْسَامٍ، الْقِسْمُ السَّادِسُ الْمُحَرَّمَاتُ الَّتِي يَتَعَلَّقُ بِهَا حَقُّ الْغَيْرِ-1/280، قاضى خان على هامش الهندية1/366، خلاصة الفتاوى، كتاب الطلاق، الفصل الثامن فى العدة-2/118

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *