প্রশ্ন
From: ডাঃ খন্দঃ রেজাউল ইসলাম
বিষয়ঃ দাওয়াত ও তাবলীগ
প্রশ্নঃ
আস্সালামু আলাইকুম, হযরত আপনাদের এই প্রচেষ্ঠায় মানুষের অনেক উপকার হচ্ছে। যাযাকাল্লাহ। আমার প্রশ্ন হল, সুরাতুত্ তওবার ২ নং আয়াতের দ্বারা তাবলীগে চার মাস সফরের দলীল নেয়া যাবে কিনা? যদি না যায় তবে এই আয়াতের প্রকৃত তাফছির কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব ইনশাআল্লাহ।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আমরা প্রথমে আয়াতে কারীমাটি বাংলা অনুবাদসহ দেখে নেই-
فَسِيحُوا فِي الْأَرْضِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللَّهِ ۙ وَأَنَّ اللَّهَ مُخْزِي الْكَافِرِينَ [٩:٢]
অতঃপর তোমরা পরিভ্রমণ কর এ দেশে চার মাসকাল। আর জেনে রেখো,তোমরা আল্লাহকে পরাভূত করতে পারবে না,আর নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফেরদিগকে লাঞ্ছিত করে থাকেন। [সূরা তওবা-২]
চার মাস পরিভ্রমনের নির্দেশটি মূলত কাফেরদের দেয়া হয়েছে। কারণ, তাদের সাথে মুসলমানদের সন্ধিচুক্তি ছিল। সেটি চারমাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে মর্মে উক্ত আয়াতে ঘোষণা এসেছে। এরপর তাদের সাথে মুসলমানগণ যুদ্ধ করবেন মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়। চারমাস বলতে বুঝানো হয়েছে শাওয়াল, জিলক্বদ, জিলহজ্জ, মুহাররম।
দেখুন-
তাফসীরে ইবনে কাসীর-২/৪১২-৪১৩
তাফসীরে মাযহারী-৫/১২২
তাফসীরে আব্দুর রাজ্জাক, বর্ণনা নং-১০৪১
তাফসীরে কুরতুবী-৪/৪১৭
তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, ইদ্রিস কান্ধলবীকৃত-৩/৩৭৯-৩৮০
উপরোক্ত বিষয় জানার পর আশা করি পরিস্কার হয়ে গেছে যে, উক্ত আয়াতে বর্ণিত চারমাসকে দাওয়াত ও তাবলীগের চার মাসের সফরের দলীল হিসেবে পেশ করাটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও ভুল হবে। কারণ, নির্দেশনাটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে। তাছাড়া নির্দেশনাটি মুসলমানদের জন্য নয় বরং কাফেরদের জন্য বলা হয়েছে।
তবে, তাবলীগের তিন চিল্লা, চার মাস ইত্যাদিকে আলাদা ফযীলতপূর্ণ বলার কোন প্রয়োজন নেই। বরং পদ্ধতিটাকে ইন্তিজামী পদ্ধতি বলাই যৌক্তিক।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে পড়ুন, আমাদের প্রকাশিত “ফাযায়েলে আমাল ও উলামায়ে দেওবন্দঃ আপত্তি ও খণ্ডন” নামক বইটি। এতে তিন চিল্লা, চার মাস ইত্যাদি বিষয়ে দলীলের আলোকে আলোচনা করা হয়েছে। ঢাকা বাংলা বাজারের ইসলামিক টাওয়ারের রাহনূমা প্রকাশনীতে বইটি পাবেন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল বুহুসিল ইসলামী ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।