প্রশ্ন
আস্ সালামো আলাইকুম
হজরত আমার একটি প্রশ্ন ছিল প্রশ্নটি হল আমাদের সমাজ যেমন চরিত্রহীন লোকে পরিপূর্ণ ঠিক তেমনি আমাদের মসজিদ , মাদরাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় বিষয়ে এই সমস্ত মানুষদের প্রভাব ,প্রতিপত্তি প্রবল।
এদের দ্বারাই ধর্মীয় বিষয়গুলি পরিচালিত হচ্ছে ,এমনকি আলেম দের উপরেও তাদের নিয়ন্ত্রন |অতত্রব হজরত শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি এই বিষয়গুলির ওপর কেমন , সেগুলি বিস্তারিতভাবে জানালে উপকৃত হব |
From,
Sultanul arefin,westbengal,india
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এটি আমাদের সামাজিক অবক্ষয়ের একটি নির্মম চিত্র। সমাজ রাষ্ট্র এবং দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বা কমিটি বা দায়িত্বশীল হবেন যোগ্য আল্লাহওয়ালা খোদাভীরু ব্যক্তিরা। এটাই শরীয়তের নির্দেশনা।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সমাজের বাস্তব চিত্র ঠিক এর উল্টো। অধিকাংশ স্থানেই বেনামাজী এবং দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিরাই দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হয়ে বসে আছে।
এসব ক্ষেত্রে সংস্কার করা প্রয়োজন।
ولا يولى إلا أمين قادر بنفسه أو بنائبه لأن الولاية مقيدة بشرط النظر وليس من النظر تولية الخائن لأنه يخل بالمقصود، وكذا تولية العاجز لأن المقصود لا يحصل به، (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى شروط المتولى-6/578-579، البحر الرائق-5/378)
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَمَنْ تَوَلَّى مِنْ أُمَرَاءِ الْمُسْلِمِينَ شَيْئًا فَاسْتَعْمَلَ عَلَيْهِمْ رَجُلًا وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّ فِيهِمْ مَنْ هُوَ أَوْلَى بِذَلِكَ وَأَعْلَمُ مِنْهُ بِكِتَابِ اللهِ وَسُنَّةِ رَسُولِهِ، فَقَدْ خَانَ اللهَ وَرَسُولَهُ وَجَمِيعَ الْمُؤْمِنِينَ، وَمَنْ تَرَكَ حَوَائِجَ النَّاسِ لَمْ يَنْظُرِ اللهُ فِي حَاجَتِهِ حَتَّى يَقْضِيَ حَوَائِجَهُمْ وَيُؤَدِّي إِلَيْهِمْ بِحَقِّهِمْ،
অনুবাদ- হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মুসলমানদের পক্ষ থেকে কোন বিষয়ে যিম্মাদার নিযুক্ত হয়, তারপর সে তাদের উপর কোন ব্যক্তিকে [কোন কাজের] কর্মকর্তা নিযুক্ত করে, অথচ সে জানে যে, মানুষদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও আছে, যে তার চেয়েও অধিক যোগ্য এবং কুরআনও হাদীসের অধিক জ্ঞান রাখে, তবে সে অবশ্যই আল্লাহ ও তার রাসূল এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে খেয়ানত করল। আর যে ব্যক্তি মানুষের প্রয়োজনকে পূর্ণ করল না, আল্লাহ তাআলা উক্ত ব্যক্তির প্রয়োজনও পূর্ণ করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত না উক্ত ব্যক্তি মানুষের প্রয়োজন পূর্ণ করে এবং তাদের হক আদায় করে দেয়। {আলমুজামুল কাবীর লিততাবারানী-১১২১৬}
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَلَا تَسْتَعْمِلُنِي؟ قَالَ: فَضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى مَنْكِبِي، ثُمَّ قَالَ: «يَا أَبَا ذَرٍّ، إِنَّكَ ضَعِيفٌ، وَإِنَّهَا أَمَانَةُ، وَإِنَّهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِزْيٌ وَنَدَامَةٌ، إِلَّا مَنْ أَخَذَهَا بِحَقِّهَا، وَأَدَّى الَّذِي عَلَيْهِ فِيهَا»
হযরত আবু জর গিফারী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূল সাঃ এর কাছে আরজ করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে কোন স্থানে হাকীম বা ওলী কেন বানিয়ে দেন না? রাসূল সাঃ [মোহাব্বতের সাথে] তার স্বীয় হাত আমার কাঁধের উপর রাখলেন। আর বললেন, আবু জর! তুমি নরম মনের মানুষ। আর এটি হল একটি বড় আমানত। [যা আদায় করা খুবই জরুরী।] নতুবা কিয়ামতের দিন তা লজ্জায় ফেলে দিবে। তবে যে ব্যক্তি এটি পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করতে পারে এবং তা আদায় করতে পারে তার বিষয়টি ভিন্ন। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৫২৫}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]