প্রশ্ন: |
মুহতারাম, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতুহু ।
আল্লাহ আপনাকে, আমাকে এবং সকল মুসলমানকে দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণ দান করুন-আমীন । আমার মা, উনার পিতার নিকট থেকে বাড়ীর অংশ ৬ শতাংশ এবং পুকুর ২ শতাংশ আবার উনার মায়ের কাছ থেকে বাড়ীর অংশ ২ শতাংশ পেয়েছে সর্বমোট বাড়ী ৮ শতাংশ পুকুর ২ শতাংশ যাহা আমার মা, আমাকে খুশি হয়ে হেবা বা দানপত্র করে দিয়েছে । যেহেতু আমার থাকার জন্য অবশিষ্ট কোন বাড়ী ছিল না । কারণ আমার বাবার রেখে যাওয়া ১৪ শতাংশ বাড়ীর মধ্যে ১২ শতাংশ বাড়ী বিক্রি করে আমার বাবার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে আর বাকী ২ শতাংশ আমার দুই চাচাদের দান করা হয়েছে । এই পুরো বিষয়টিতে আমার মা এবং আমরা ভাই ও বোনেরা সম্মতি প্রদান করেছি । ২। এখন শুধু আমার মৃত বাবার নামে ফসলী জমি আছে ১৫ শতাংশ এগুলোর সহীহ বন্টন কিভাবে হবে ? আমার মায়ের নামে ফসলী জমি আছে ১০ শতাংশ যাহা আমার মা উনার পিতার থেকে পেয়েছে এখন এগুলোর সহীহ বন্টন কিভাবে হবে ? আমি আপনার উত্তরের আশায় অপেক্ষায় রহিলাম-জাঝাকাল্লাহ । উত্তর وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته بسم الله الرحمن الرحيم জীবিত সুস্থ্য ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় তার মালিকানাধীন সম্পদ যে কাউকে হিবা বা দান করে দিতে পারেন। এতে কারো কোন আপত্তি করার সুযোগ নেই। আর কারো জীবিত থাকা অবস্থায় তার সম্পদ মিরাছ হিসেবে বন্টন হয় না। বরং তার মৃত্যুর পর তা মিরাছী সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। তবে জীবিত অবস্থায় মালিক ব্যক্তি যেভাবে ইচ্ছে তা বন্টন বা দান করতে পারেন। উপরোক্ত কথাগুলো বুঝে থাকলে আপনার কাছে পরিস্কার হবার কথা যে, আপনার মায়ের হিবা করা সম্পদের বিষয়ে শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। দ্বিতীয়ত তার বর্তমান সম্পদ বিষয়ে আপনার মা নিজের ইচ্ছেমত বন্টন বা হিবা করতে পারেন। বাকি রয়ে গেল ঋণ পরিশোধ ও চাচাদের দান করার থাকা আপনার বাবার অবশিষ্ট সম্পদের বন্টনের হুকুম। এক্ষেত্রে মূলনীতি হল, একজন পুত্র দুই কন্যা সমান সম্পদ পাবে। সেই হিসেবে আপনার বাবার ১৫ শতাংশ জমির হকদার হলেন, আপনার মা, আপনার তিন বোন এবং আপনি। সেই হিসেবে ইসলামী মিরাছ নীতি অনুপাতে আপনার পিতার রেখে যাওয়া মিরাছী সম্পদ ১৫ শতাংশ থেকে নিম্ন বর্ণিত সম্পদ আপনারা প্রাপ্ত হবেনঃ মা পাবেন ১.৮৭৫ শতাংশ। তিন কন্যা পাবেন মোট ৭.৮৭৫ শতাংশ। আলাদাভাবে প্রতি কন্যা পাবেন উক্ত ৭.৮৭৫ থেকে ২.৬২৫ শতাংশ। আর পুত্র পাবেন ৫.২৫ শতাংশ। يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ ۖ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۚ [٤:١١] আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান। [সূরা নিসা-১১] وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم ۚ مِّن بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۗ [٤:١٢] স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। [সূরা নিসা-১২] اذا كان بين التصحيح والتركة مباينة، فاضرب سهام كل وارث من التصحيح فى جميع التركة، ثم اقسم المبلغ على التصحيح (السراجى فى الميراث-56) والله اعلم بالصواب পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা। উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা। উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা। ইমেইল– [email protected] |
Tags ইসলামী আইন শাস্ত্র ইসলামী বন্টন আইন উত্তরাধিকার আইন উত্তরাধীকার উত্তারাধিকার বন্টন আইন মিরাছ মীরাছ আইন মীরাছ শাস্ত্র যৌথ পরিবার সম্মিলিত পরিবার
আরও জানুন
ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?
প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …