প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / ভাগ্য কী পরিবর্তিত হয়? নাকি অপরিবর্তিত থাকে?

ভাগ্য কী পরিবর্তিত হয়? নাকি অপরিবর্তিত থাকে?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম

মানুষের ভাগ্য কি পরিবর্তন হয় ? নাকি যা নির্ধারিত তা অপরিবর্তিত থাকে ? বিস্তারিত জানালে খুশি হব ।
আহালে হক মিডিয়ার প্রচার ও  প্রসার এর জন্য অনেক দুয়া ও শুভ কামনা রইল ।

মোহাম্মদ ফারুক
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ।
বাসা : খিলক্ষেত , তালের টেক,
ঢাকা – ১২২৯ ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ভাগ্য তথা তাকদীর দুই প্রকার। যথা-

১-তাকদীরে মুবরাম।

২-তাকদীরে মুআল্লাক।

তাকদীরে মুবরাম কখনোই পরিবর্তন হয় না।

আর তাকদীরে মুআল্লাক বান্দার আমল, দুআ ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়।

বাকি বান্দাকে আল্লাহ তাআলা স্বাধীনতা দিয়েছেন। সে যা ইচ্ছে করতে পারে। ভাল কাজও  করতে পারে। আবার মন্দ কাজও করতে পারে। কিন্তু আল্লাহ যেহেতু সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত। পূর্বাপর সব কিছুই তার জ্ঞানে রয়েছে। তাই তিনি জানেন বান্দা কোন কাজটি করবে।

একটি বিষয় খুব ভালভাবে জেনে রাখতে হবে যে, তাকদীর বিষয়ে আলোচনা করা ঠিক নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোরভাবে তাকদীর তথা ভাগ্য নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছেন।

তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা ও আলোচনা থেকে বিরত থাকা উচিত।

عَنْ سَلْمَانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ يَرُدُّ القَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ، وَلاَ يَزِيدُ فِي العُمْرِ إِلاَّ البِرُّ.

হযরত সালমান রাঃ থেকে বর্ণিত। কেবল দুআই খোদায়ী ফায়সালা পরিবর্তন করাতে পারে। আর নেক কাজই বয়সের বরকত বৃদ্ধি করাতে পারে। [তিরমিজী, হাদীস নং-২১৩৯]

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ، فَذَكَرَ لَهَا شَيْئًا مِنَ الْقَدَرِ، فَقَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ تَكَلَّمَ فِي شَيْءٍ مِنَ الْقَدَرِ سُئِلَ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِيهِ لَمْ يُسْأَلْ عَنْهُ»

হযরত ইয়াহইয়া বনি আব্দুল্লাহ বিন আবী মুলাইকা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি একদা হযরত আয়শা রাঃ এর নিকট গেলেন। তখন তিনি তাকদীর বিষয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করেন, তখন হযরত আয়শা রাঃ বলেন, আমি রাসুল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি তাকদীর বিষয়ে কথা বলে, কিয়ামতের ময়দানে এ কারণে সে জিজ্ঞাসিত হবে। আর যে এ বিষয়ে আলোচনা না করবে, তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৪}

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَتَنَازَعُ فِي القَدَرِ فَغَضِبَ حَتَّى احْمَرَّ وَجْهُهُ، حَتَّى كَأَنَّمَا فُقِئَ فِي وَجْنَتَيْهِ الرُّمَّانُ، فَقَالَ: أَبِهَذَا أُمِرْتُمْ أَمْ بِهَذَا أُرْسِلْتُ إِلَيْكُمْ؟ إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حِينَ تَنَازَعُوا فِي هَذَا الأَمْرِ، عَزَمْتُ عَلَيْكُمْ أَلاَّ تَتَنَازَعُوا فِيهِ.

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। একদা রাসূল সাঃ আমাদের কাছে আসলেন এমতাবস্থায় যে, আমরা তাকদীর বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। তখন রাসূল সাঃ প্রচন্ড রেগে গেলেন।রাগে চেহারা আনারের মত রক্তিম বর্ণ হয়ে গেল। তিনি বললেন, তোমরা এ এসব করতে আদিষ্ট হয়েছো? নাকি আমি এসবের জন্য আবির্ভূত হয়েছি? ইতোপূর্বের লোকজন এ বিষয়ে আলোচনা করে ধ্বংস হয়েছে, আমি তোমাদের দৃঢ়তার সাথে বলছি, তোমরা এ বিষয়ে বিবাদে লিপ্ত হয়ো না। {তিরমিজী, হাদীস নং-২১৩৩}

والقدر سر من أسرار الله تعالى، لم يطلع عليه ملكا مقربا ولا نبيا مرسلا، ولا يجوز الخوض فيه، والبحث عنه بطريق العقل، (مرقاة المفاتيح، كتاب الإيمان، باب الإيمان بالقدر-1/256

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …