প্রশ্ন
আস্ সালামু আলাইকুম। মুফতি সাহেবের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশ্ন আছে যা শরীয়া দলিল ভিত্তিক কুরআন ও হাদিসের আলোকে উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন..
খতম তারাবী পড়া কি সুন্নতে গায়ের মুয়াক্কেদা আর সূরা তারাবী পড়া কি সুন্নতে মুয়াক্কেদা ? মসজিদবার জামাতের সাথী বলছে যে খতম তারাবী সুন্নতে গায়ের মুয়াক্কেদা না পড়লে গুনাহ হবে না তাই আমরা সূরা তারাবী পড়ব (মসজিদের ইমাম মাওলানা সাহেব একথা বলেছেন )।
ইমাম সাহেব বলেছেন যদি খতম তারাবী পড়তে হয় তাহলে শানী হাফেজ রাখা ওয়াজিব, না রাখলে সমস্ত মহল্লাবাসী গুনাহগার হবে এত দিন আপনারা না জেনে করেছেন এখন জানার পরও করবেন ? মসজিদ কমিটি তিনটে ইমামের (ইমাম সাহেব, খতম তারাবীর দুই হাফেজ ) টাকা কী ভাবে দেবে ?
যদি একটা হাফেজ রাখা হয় তাহলে কী তারাবীর নামাজ হবে ?
খতম তারাবী পড়া কি সুন্নতে গায়ের মুয়াক্কেদা আর সূরা তারাবী পড়া কি সুন্নতে মুয়াক্কেদা ?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
৪টি মাসআলা ভাল করে বুঝুনঃ
১
তারাবীহ নামায পড়া প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নর নারীর উপর আলাদাভাবে সুন্নতে মুআক্কাদা।
২
তারাবীহ নামায জামাতের সাথে পড়া সুন্নতে মুআক্কাদা আলাল কিফায়া। অর্থাৎ একদল পড়ে নিলে অন্যরা জামাতের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু জামাতের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে।
৩
তারাবীতে একবার কুরআন খতম করাও সুন্নতে মুআক্কাদা।
হাফেজ থাকলে এ সুন্নত থেকে বিরত থাকা যাবে না। যদি হাফেজ না পাওয়া যায় তাহলে আল্লাহ মাফ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
৪
হাফেজ একজন হলেই চলবে। খতমে তারাবীহের জন্য একাধিক হাফিজ থাকা জরুরী নয়।
আমাদের দেশে একাধিক হাফিজ রাখা হয়, শুধু পড়ার সুবিধার্তে। এটি কোন জরুরী বিষয় নয়।
উপরোক্ত ৪টি মাসআলা বুঝে থাকলে আপনি নিজেই আপনার প্রশ্নের জবাবটি বুঝে যাবেন।
হাফেজ রাখার সামর্থ থাকলে হাফিজ রেখে তারাবীহ পড়া উচিত। কারণ তা সুন্নতে মুআক্কাদা। কিন্তু ওয়াজিব নয়। সামর্থ থাকা সত্বেও অলসতাবশত খতমে তারাবীহ না পড়লে গোনাহ হবে।
(قَوْلُهُ وَالْجَمَاعَةُ فِيهَا سُنَّةٌ عَلَى الْكِفَايَةِ إلَخْ) أَفَادَ أَنَّ أَصْلَ التَّرَاوِيحِ سُنَّةُ عَيْنٍ، فَلَوْ تَرَكَهَا وَاحِدٌ كُرِهَ، بِخِلَافِ صَلَاتِهَا بِالْجَمَاعَةِ فَإِنَّهَا سُنَّةُ كِفَايَةٍ، فَلَوْ تَرَكَهَا الْكُلُّ أَسَاءُوا؛ أَمَّا لَوْ تَخَلَّفَ عَنْهَا رَجُلٌ مِنْ أَفْرَادِ النَّاسِ وَصَلَّى فِي بَيْتِهِ فَقَدْ تَرَكَ الْفَضِيلَةَ، وَإِنْ صَلَّى أَحَدٌ فِي الْبَيْتِ بِالْجَمَاعَةِ لَمْ يَنَالُوا فَضْلَ جَمَاعَةِ الْمَسْجِدِ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب الوتر والنوافل، مبحث صلاة التراويح-2/495)
وفيه ايضا: (وَالْخَتْمُ) مَرَّةً سُنَّةٌ وَمَرَّتَيْنِ فَضِيلَةٌ وَثَلَاثًا أَفْضَلُ. (وَلَا يُتْرَكُ) الْخَتْمُ (لِكَسَلِ الْقَوْمِ) (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب الوتر والنوافل، مبحث صلاة التراويح-2/497)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]