প্রচ্ছদ / আধুনিক মাসায়েল / সুদ ও হালাল টাকার সংমিশ্রণে নির্মিত বাড়িতে থাকা ও ভাড়া দেয়ার বিধান

সুদ ও হালাল টাকার সংমিশ্রণে নির্মিত বাড়িতে থাকা ও ভাড়া দেয়ার বিধান

প্রশ্ন

নাম – মোঃ আতাউল করিম

ঠিকানা – দাইয়াপাড়া , চৈমুহনী, চট্টগ্রাম , বাংলাদেশ।

আসসালামু আলাইকুম ,

আমার একটি জিজ্ঞাসা –>

আমার একজন আত্মীয় যিনি আর্থিক দিক দিয়ে মোটামুটি সামর্থবান । তিনি তার পরিবার ( বাবা , মা , ভাই ) সহ ভাড়া বাসায় থাকেন ।  তার বাবা ব্যাংকের টাকায় বাড়ি তৈরী করছেন ভাড়া দেবার জন্য [ থাকার জন্য নয় ] । অই আত্মীয় তার বাবাকে নিষেধ করেও বিরত করতে পারেননি । আবার তার বাবা বাড়ি তৈরী করার সময় তার ছেলে ( ওই আত্মীয় ) থেকে বেশ কিছু টাকা নিয়েছেন যা ওই বাড়ি তৈরী করার সময় কাজে লাগিয়াছেন । ওই আত্মীয় মোটামুটি দ্বীনের উপর চলার চেষ্টা করেন এবং সুদ থেকে বেচে থাকেন । তার জিজ্ঞাসা –

১। ওই বাড়ি থেকে প্রাপ্ত ভাড়া তিনি গ্রহণ করতে পারবেন কিনা ? ( তিনি মোটামুটি সামর্থবান)

২। তিনি কি ওই বাড়িতে থাকতে পারবেন ?  ( তিনি মোটামুটি সামর্থবান)

৩। তার বাবার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সুত্রে সেই বাড়ি থেকে অংশ পেলে তিনি কি তা গ্রহন করতে পারবেন ? যদি না পারেন  তবে তার অংশ তিনি কি করবেন ? ( তিনি মোটামুটি সামর্থবান)

৪। উপরের প্রশ্ন গুলোর উত্তরের ভিত্তিতে যদি – না পারেন  ,  তবে এই বাড়িতে ব্যবহৃত তার টাকা তিনি কি নিয়ে নিবেন ? বর্তমানে সেই টাকা বাড়ি তৈরীতে ব্যবহৃত হয়ে যাওয়ায় সে ক্ষেত্রে বাড়ি তৈরীর পর তার ভাড়া পাবার পরই তা সম্ভব ।

উত্তর জানালে উপকৃত হব ।

আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

সুদ, দেয়া ও নেয়া সবই গোনাহের কাজ। তাই সুদী অর্থে নির্মিত বা প্রস্তুতকৃত বস্তু থেকে দূরে থাকাই উচিত।

বাকি যেহেতু উক্ত বাড়ী নির্মাণে উক্ত ব্যক্তি নিজেও অর্থ প্রদান করেছেন। সেই অর্থ যেহেতু হালাল। তাই উক্ত অংশের টাকায় নির্মিত বাড়ির অংশও হালাল হবে।

তাই তার অংশের বাসায় থাকা বা ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করা সবই তার জন্য বৈধ হবে।

وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ.

আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৫

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ.

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা পরিত্যাগ করো। যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের সংবাদ জেনে নাও। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৮-২৭৯

হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. বলেন,

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদ ভক্ষণকারী, সুদ প্রদানকারী, সুদের লেখক এবং সাক্ষীগণকে অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, (গুনাহের ক্ষেত্রে) তারা সবাই বরাবর।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৯৮

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *