প্রচ্ছদ / নামায/সালাত/ইমামত / বিদেশে কর্মরত থাকার কারণে সুন্নত আদায় করা সম্ভব হয় না “শুধু ফরজ আদায় করা যথেষ্ট হবে?

বিদেশে কর্মরত থাকার কারণে সুন্নত আদায় করা সম্ভব হয় না “শুধু ফরজ আদায় করা যথেষ্ট হবে?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! আমার নাম সালমান জাকির আমি একজন প্রবাসী মুফতি সাহেবের কাছে আমার একটি প্রশ্ন যদি কোন ব্যক্তি শুধু ফরজ নামাজ আদায় করে এবং ওয়াজিব নামাজ আদায় করে কিন্তু সুন্নত নামাজ আদায় করেনা তার নামায হবে কি? আমি প্রবাসে শুধু ফরজ নামাজের সময় পাই সুন্নত নামাজের সময় পাইনা তাই মুফতি সাহেব দয়া করে আমাকে মাসআলাটি জানাবেন।

From: salman zakir [email protected]

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উত্তর:

“সুন্নতে মুআক্কাদা আদায় করা ওয়াজিবের খুব কাছাকাছি একটি দায়িত্ব। কোনো ওজর বা বৈধ কারণ ছাড়া সুন্নতে মুআক্কাদা ত্যাগ করা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি অকারণে এ সুন্নতগুলো ছেড়ে দেয়, সে গুনাহগার হয়। ফরজ নামাজগুলোর মধ্যে মোট বারো রাকআত সুন্নতে মুআক্কাদা রয়েছে ফজরের আগে দুই রাকআত, যোহরের ফরজের আগে চার ও পরে দুই রাকআত, মাগরিবের পরে দুই রাকআত এবং এশার ফরজের পরে দুই রাকআত।

এ সম্পর্কে এক হাদীসে এসেছে — উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মে হাবীবা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি দিন ও রাতে বারো রাকআত সুন্নত নামাজ পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন— চার রাকআত যোহরের আগে, দুই রাকআত পরে, দুই রাকআত মাগরিবের পরে, দুই রাকআত এশার পরে এবং দুই রাকআত ফজরের আগে।”  (সুনান আত-তিরমিজি, হাদীস নং: ৪১৫)

সব সুন্নত নামাজের মধ্যে ফজরের দুই রাকআতের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে হাদীসসমূহে।হযরত আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ “ফজরের দুই রাকআত (সুন্নত) পুরো দুনিয়া ও দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদের চেয়েও উত্তম।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদীস নং: ৪১৬)”

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সময়ের অজুহাতে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ত্যাগ করার কোনো অবকাশ নেই। প্রয়োজনে ছোট সূরা দিয়ে হলেও সুন্নত আদায়ের চেষ্টা করা উচিত। তবে কেউ যদি শুধুমাত্র ফরজ নামাজ আদায় করে সুন্নত তরক করে, তবে সে গুনাহগার হবে। এতে ফরজ নামাজের আদায়ে কোনো ক্ষতি হবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে সবসময় সুন্নতে মুয়াক্কাদা ত্যাগ করা কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।

উল্লেখ্য, সুন্নতের কোনো কাজা নেই। যদি কোনো নামাজ কাজা হয়ে যায়, তখন সুন্নত আদায়ের বিধান প্রযোজ্য হবে না। বিশেষত ফজরের সুন্নতের গুরুত্বের কারণে উলামায়ে কেরাম তা আদায়ের প্রতি উৎসাহিত করেছেন।

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ البَغْدَادِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ التِّنِّيسِيُّ الشَّامِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا الهَيْثَمُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي العَلَاءُ بْنُ الحَارِثِ، عَنِ القَاسِمِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، قَالَ: سَمِعْتُ أُخْتِي أُمَّ حَبِيبَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ ﷺ تَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ: «مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا، حَرَّمَهُ اللهُ عَلَى النَّارِ».

(سنن الترمذي: ١/ ٤٥٢ (٤٢٨)أبواب الصلاة عن رسول الله ﷺ)

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ العَاصِ، قَالَ: جِئْتُ وَرَسُولُ اللهِ ﷺ قَاعِدٌ فِي أُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فِيهِمْ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ ، فَأَدْرَكْتُ آخِرَ الحَدِيثِ، ورَسُولُ اللهِ ﷺ يَقُولُ: «مَنْ صَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ قَبْلَ العَصْرِ لَمْ تَمَسَّهُ النَّارُ»، فَقُلْتُ بِيَدِي هَكَذَا – يُحَرِّكُ بِيَدِهِ -: إِنَّ هَذَا حَدِيثٌ جَيِّدٌ، فَقَالَ لِي عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ: لَمَا فَاتَكَ مِنْ صَدْرِ الحَدِيثِ أَجْوَدُ وَأَجْوَدُ، قُلْتُ: يَا ابْنَ الخَطَّابِ، فَهَاتِ، فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ أَنَّهُ: «مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ دَخَلَ الجَنَّةَ».

المعجم الاوسط للطبرانی:٣/ ٨٨ (٢٥٨٠)، وقال: لا يُروَى هذا الحديث عن عبد الله بن عمرو، عن عمرَ إلا بهذا الإسناد، تفرد به حجّاجٌ.)

وأورده الهيثمي في «المجمع» ١/ ١٦٨ (٣٧) كتاب الإيمان/ باب فيمن شهد أن لا إله إلا الله، وقال: رواه الطبراني في الأوسط، وفيه حجاج بن نصر، والأكثرون على تضعيفه.

الدر المختار: (12/2، ط: دار الفکر)

(قوله وسن مؤكدا) أي استنانا مؤكدا؛ بمعنى أنه طلب طلبا مؤكدا زيادة على بقية النوافل، ولهذا كانت السنة المؤكدة قريبة من الواجب في لحوق الإثم كما في البحر، ويستوجب تاركها التضليل واللوم كما في التحرير: أي على سبيل الإصرار بلا عذر۔

رد المحتار: (388/6، ط: دار الفکر)

“وما في الزيلعي موافق لما في التلويح حيث قال: معنى القرب إلى الحرمة أنه يتعلق به محذور دون استحقاق العقوبة بالنار؛ وترك السنة المؤكدة قريب من الحرمة يستحق حرمان الشفاعة اه. ومقتضاه أن ترك السنة المؤكدة مكروه تحريما لجعله قريبا من الحرام، والمراد سنن الهدى كالجماعة والأذان والإقامة فإن تاركها مضلل ملوم كما في التحرير والمراد الترك على وجه الإصرار بلا عذر”.

والله أعلم بالصواب

উত্তর লিখনে
মুহা. শাহাদাত হুসাইন , ছাগলনাইয়া, ফেনী।

সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী দা.বা.

পরিচালক তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা

উস্তাজুল ইফতা জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

0Shares

আরও জানুন

কৃত গোনাহ থেকে মুক্ত হতে করণীয় কী?

প্রশ্ন আসসালামুআলাইকুম। আমার বয়স ১৯। আমি একবার অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক করেছি (১বার)। তারপর আমি একটি …

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস