প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / আল্লাহ তাআলাকে খোদা বলে ডাকা জায়েজ নয়?

আল্লাহ তাআলাকে খোদা বলে ডাকা জায়েজ নয়?

প্রশ্ন

কিছু ভাই বলেন যে, আমরা যে আল্লাহ তাআলাকে খোদা বলে ডাকি, তা নাকি জায়েজ নয়। এ ব্যাপারে আপনাদের মতামত জানতে চাচ্ছি।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তাআলাকে অন্য ভাষায় এমন শব্দে ডাকা জায়েজ, যে শব্দে আর কাউকে ডাকা হয় না। সেই সাথে এটা অন্য কোন ধর্মের ধর্মীয় কোন নাম নয়। (আল ইয়াওয়াক্বীত ওয়াল জাওয়াহীর-৭৮, ফাতওয়া আলমগীরী-৬/৪৪৬}

এ মূলনীতির আলোকে খোদা শব্দটি আল্লাহ তাআলার নাম হিসেবে বাংলা, উর্দু, হিন্দিতে অনুবাদ হিসেবে বলাতে কোন সমস্যা নেই। কারণ খোদা শব্দটি ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের কোন ধর্মীয় শব্দ নয়। সেই সাথে এর দ্বারা আমরা কেবল আল্লাহকেই বুঝে থাকি। অন্য কোন সত্বাকে বুঝি না। পক্ষান্তরে বিষ্ণু অর্থ রব, এবং ব্রাহ্মণ অর্থ সৃষ্টিকর্তা হলেও এটা ইসলামি কোন শব্দ নয়। সেই সাথে এ শব্দ দু’টি হিন্দুদের ধর্মীয় প্রতিক। তাই এ শব্দে আল্লাহকে ডাকা জায়েজ নয়। পক্ষান্তরে খোদা শব্দটি। এটা নিরেট ইসলামি শব্দ। এর দ্বারা অন্য কোন ধর্মকে বুঝায় না। বুঝায় না আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন সত্বাকেও। তাই খোদা বলে আল্লাহকে বুঝাতে কোন সমস্যা নেই।

প্রথম দলিল ও তার খন্ডন

যারা খোদা বলা না জায়েজ বলে থাকেন তাদের দলিল হল-আল্লাহ আরবী শব্দ, তাই একে বাংলা উর্দুতে অনুবাদ করে খোদা বলা জায়েজ হবে না।

এর জবাব হল-যদি আরবী আল্লাহ শব্দকে অনুবাদ করে খোদা বলা না জায়েজ হয়, তাহলে আরবী সালাত শব্দকে বাংলা উর্দু-ফার্সিতে নামায বলা কিভাবে জায়েজ?

আরবী সওম শব্দকে বাংলা উর্দতে রোযা বলা জায়েজ কিভাবে?

যদি এসব জায়েজ হয়, তাহলে আল্লাহ শব্দের অনুবাদ খোদা বলাও জায়েজ।

দ্বিতীয় দলিল ও তার খন্ডন

তাদের আরেকটি দলিল হল-আল্লাহ শব্দের কোন বহুবচন নেই। নেই আল্লাহ সত্বারও কোন বহুবচন। অথচ খোদা শব্দটির বহুবচন হল খোদাওন্দ। তাই খোদা বলার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে বহুবচন সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তাই আল্লাহ শব্দের অনুবাদ খোদা শব্দ দিয়ে করা জায়েজ নয়।

এ যুক্তিটিও একটি অগ্রহণীয় যুক্তি। কারণ যদি তাই হয়, তাহলে রব শব্দ দিয়ে আল্লাহকে ডাকা জায়েজ হবে না। কারণ “রব” শব্দের বহুবচন“আরবাব” আছে। আল্লাহ তাআলাকে রহীম শব্দেও ডাকা জায়েজ হবে না, কারণ রহীম শব্দের বহুবচন “রুহামা” আছে, তেমনি আল্লাহ তাআলাকে ইলাহ ডাকাও জায়েজ হবে না, কারণ “ইলাহ” এর বহুবচন“আলিহাহ” আছে। এসব কথা বলা যেমন বোকামীসূলভ বক্তব্য হবে তেমনি খোদা শব্দের বহুবচন খোদাওয়ান্দ হওয়ায়, তা আল্লাহ শব্দের অনুবাদ হিসেবে হারাম হওয়ার ফাতওয়া দেয়াও বোকামী বৈ কিছু নয়।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সত্য সত্য হিসেবে বুঝার, ও মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামী ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

0Shares

আরও জানুন

আজানের সময় বা খানা খাওয়া ও বাথরুমে গমণ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় মাথায় কাপড় রাখার হুকুম কী?

প্রশ্ন আমার চারটি বিষয়ে জানার ছিলো : ________ ১, বাথরুমে অবস্থানকালীন সময়ে মাথায় কাপড় দেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *