প্রশ্ন
আস-সালামু আলাইকুম।
নামাজে কিবলামুখী হওয়ার ব্যাপারে একটা মাসআলা জানা দরকার।
১। নামাজে কিবলামুখী হওয়ার গুরুত্ত কতটুকু?
২। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত সঠিকভাবে কিবলামুখী নাহওয়ে একটু দানে/বামে মুখ করে দাঁড়ায় তাহলে কি গুরুতর সমস্যা হবে?
৩। জামাতে নামাজের ক্ষেত্রে ইমাম সাহেবের একা কিবলামুখী হওয়া মুক্তাদীদের জন্য যথেষ্ট হবে কিনা।।
কোরআন হাদিসের আলোকে উত্তর দিলে বড়ই কৃতার্থ হব…
উত্তর
وعليكم السلام ورحنة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায সহীহ হবার জন্য শর্ত। কিবলামুখী না হলে নামায শুদ্ধই হবে না। যারা সরাসরি কিবলা দেখতে পায় না, তাদের জন্য যেহেতু সরাসরি বাইতুল্লামুখী হওয়া সম্ভব নয়। তাই তাদের জন্য আবশ্যক হল জিহাতে কিবলা তথা কিবলামুখী হওয়া। আর যারা সরাসরি বাইতুল্লাহ দেখে তাদের জন্য সরাসরি বাইতুল্লাহমুখী হওয়া আবশ্যক।
উলামায়ে কেরাম কিবলামুখী হবার একটি মূলনীতি বের করেছেন, তা হল বাইতুল্লাহ থেকে উভয় পাশ হিসেবে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেলে নামায হবে না। ডান পাশে ৪৫ ডিগ্রি ও বাম পাশে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘুরে যাবার আগ পর্যন্ত নামায শুদ্ধ হবে। তবে এর চেয়ে বেশি ঘুরে গেলে নামায হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-১/২৪২-২৪৪}
নামাযে কিবলামুখী হওয়া আবশ্যকীয় বিষয়। এটি ছাড়া নামাযই শুদ্ধ হয় না। তাই নামায পড়ার সময় ভাল করে কিবলা দিক ঠিক করে নেয়া জরুরী।
ইমাম ও মুক্তাদী সবার জন্যই কিবলামুখী হওয়া জরুরী। যার কিবলা ঠিক হবে না, তারই নামায শুদ্ধ হবে না। ইমামের ঠিক থাকা অবস্থায় যদি মুক্তাদীর কিবলা ঠিক না থাকে, তাহলে মুক্তাদীর নামায শুদ্ধ হবে না। তাই সবারই কিবলা ঠিক করে নামায শুরু করতে হবে।
قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ [٢:١٤٤]
নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}
وَسَيَأْتِي فِي الْمَتْنِ فِي مُفْسِدَاتِ الصَّلَاةِ أَنَّهَا تَفْسُدُ بِتَحْوِيلِ صَدْرِهِ عَنْ الْقِبْلَةِ بِغَيْرِ عُذْرٍ، فَعُلِمَ أَنَّ الِانْحِرَافَ الْيَسِيرَ لَا يَضُرُّ، وَهُوَ الَّذِي يَبْقَى مَعَهُ الْوَجْهُ أَوْ شَيْءٌ مِنْ جَوَانِبِهِ مُسَامِتًا لِعَيْنِ الْكَعْبَةِ أَوْ لِهَوَائِهَا، بِأَنْ يَخْرُجَ الْخَطُّ مِنْ الْوَجْهِ أَوْ مِنْ بَعْضِ جَوَانِبِهِ وَيَمُرَّ عَلَى الْكَعْبَةِ أَوْ هَوَائِهَا مُسْتَقِيمًا، (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب شروط الصلاة، مَطْلَبٌ فِي سَتْرِ الْعَوْرَةِ-1/430
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।