প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / সুন্নাহসম্মত বিবাহ করার পদ্ধতি কী?

সুন্নাহসম্মত বিবাহ করার পদ্ধতি কী?

প্রশ্ন

আস্সালামু আলাইকুম,
হুজুর আমি ইন্টারনেটে বিবাহ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে আপনার মেইল এড্রেসটি পেয়েছি।
আমার বর্তমান বয়স ২৯+। কিছু দিনের মধ্যে বিবাহ করার ইচ্ছে পোষণ করছি। ইতিমধ্যেই আমি সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছি যে বিবাহ করতে গিয়ে আমি কোনো প্রকার যৌতুক নিবনা। এতদিন আমি জানতাম যে এটা একটা সামাজিক ব্যাধি, কিন্তু আজ জানলাম ইসলাম ও যৌতুকের বিপক্ষে।
বর্তমানে আমাদের সমাজে বিবাহের ক্ষেত্রে যে সকল নিয়ম কানুন মানা হয় (কনে দেখা থেকে শুরু করে কনে ফিরাফিরী যাওয়া পর্যন্ত) মেহেদী অনুষ্ঠান, ক্লাব এ বিবাহ অনুষ্ঠান, এগুলো অত্যন্ত বাড়াবাড়ি পর্যায়ের বলেই আমার মনে হয়। আমার নিজের বিবাহতে আমি এসব লৌকিকতা বর্জন করার চিন্তায় আছি। আবার এটা ভেবেও চিন্তিত যে সমাজ ব্যপারটা কিভাবে নিবে।
তাই হুজুরের পরামর্শের প্রয়োজন অনুভব করছি। দয়া করে আমাকে বিবাহের নিয়ম কানুন, আদব, কর্তব্য, করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয় সমূহ কুরান, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

১ দ্বীনদার পরিবারের দ্বীনদার পাত্রী খুঁজে বের করা।

২ বিয়ের আগে শুধুমাত্র বর পাত্রীকে দেখবে।অন্য পুরুষ আত্মীয়দের দেখা নিষেধ।

৩ উভয় পরিবারে মুরব্বী শ্রেণীর আত্মীয়গণ মাশওয়ারা করে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা।

৪ সামাজিক প্রথা ও রুসুম পরিহার করে সাধাসিধাভাবে সম্ভব বলে মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করা।

৫ কনে পরিবারকে বেশি পরিমাণ ব্যক্তিদের দাওয়াত খাওয়ানোর জন্য জবরদস্তি করা যাবে না।

৬ নিজের সামর্থ অনুপাতে মোহর নির্ধারণ করবে।

৭ সম্ভব হলে জুমআর দিন বিয়ে করা।

৮ নেককার কোন ব্যক্তির মাধ্যমে বিয়ে পড়ানো।

১০ বিয়ের আগে খুতবা পড়া।

১১ ন্যায়পরায়ন উত্তম ব্যক্তিদের সাক্ষী বানিয়ে বিয়ে করা।

১২ কনে বয়সে, বংশ মর্যাদায় ও সম্পদে কম হওয়া উত্তম।

১৩ সকলকে জানিয়ে বিয়ে করা।

১৪ কম খরচে বিয়ে করা।

১৫ বিয়ের পর বাসর হয়ে যাবার পর কনেপক্ষের আত্মীয়দের দাওয়াত দিয়ে ওলীমা করা।

এছাড়া সামাজিক যেসব রুসুম রেওয়াজ আছে যেমন হলুদের অনুষ্ঠান, নারীপুরুষের বেপর্দা অনুষ্ঠান, গানবাদ্য এসব কিছুই বর্জন করা আবশ্যক।

عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال: تنكح المرأة لأربع: لمالها، ولحسابها، ولجمالها، ولدينها، فاظفر بذات الدين تربت يداك (صحيح البخارى، النسخة الهندية-2\762، رقم-4899، ف: 5090، صحيح مسلم، النسخة الهندية-1\474، رقم-1466)

عن عائشة رضى الله عنها قال النبى صلى الله عليه وسلم: إن اعظم النكاح بركة أيسره مؤنة (شعب الإيمان للبيهقى-5\245، رقم-6566)

وَيُنْدَبُ إعْلَانُهُ وَتَقْدِيمُ خُطْبَةٍ وَكَوْنُهُ فِي مَسْجِدِ يَوْمِ جُمُعَةٍ بِعَاقِدٍ رَشِيدٍ وَشُهُودٍ عُدُولٍ، وَالِاسْتِدَانَةُ لَهُ وَالنَّظَرُ إلَيْهَا قَبْلَهُ، وَكَوْنُهَا دُونَهُ سِنًّا وَحَسَبًا وَعِزًّا، وَمَالًا وَفَوْقَهُ خُلُقًا وَأَدَبًا وَوَرَعًا وَجَمَالًا (رد المحتار-4\66-67، كرتاشى-3\78)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

 

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *