প্রচ্ছদ / ওয়াকফ/মসজিদ/ঈদগাহ / কাছাকাছি মসজিদ নির্মাণ ও জুমআ পড়ার হুকুম

কাছাকাছি মসজিদ নির্মাণ ও জুমআ পড়ার হুকুম

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম, প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই ‘আহলে হক বাংলা মিডিয়া সার্ভিস’-এর সাথে জড়িত সকলকে, আপনাদের মহতী উদ্যোগের জন্য। দীনি জ্ঞান অর্জন ও ছড়িয়ে দিতে এমন উদ্যোগ খুবই কার্যকরী হবে ইন-শা-আল্লাহ।
আমার প্রশ্ন:
আমাদের গ্রাম অনেকগুলো ছোট ছোট পাড়া মহল্লায় বিভক্ত (যেমন- সরকার বাড়ি, দেওয়ান বাড়ি, মুন্সীব বাড়ি)। প্রত্যেক বাড়িতেই আলাদা আলাদা মসজিদ আছে এবং প্রত্যেক মসজিদেই আলাদাভাবে ওয়াক্তিয়া নামাজ ও জুমার নামাজ পড়ানো হয়। সাধারণত ওয়াক্তিয়া নামাজে ৫/৬ জন এবং জুমার নামাজে ১২/১৩ জন মুসল্লি হয়ে থাকে। গ্রামের এক বাড়ির  লোক অন্য বাড়ির মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়াটা রীতিমতো অপছন্দ করে।

এভাবে বিক্ষিপ্তভাবে ওয়াক্তিয়া নামাজ ও জুমার নামাজ পড়া আসলে কতটুকু জায়েজ? বিশেষত, জুমার নামাজ কি হবে?
আমার আরেকটি প্রশ্ন, কেউ মসজিদে না গিয়ে নিজের ঘরে জামাত করে নামাজ পড়লে কি জায়েজ হবে?
দয়া করে উত্তর দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

জামাতের সাথে মসজিদে নামায পড়ার দ্বারা একটি মাকসাদ হল, ইসলামের এ শাআয়ের তথা প্রতীককে জীবিত রাখা। যার মাধ্যমে মুসলমানদের বড় সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে ইসলামের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়।

কিন্তু এর বরখেলাফ ছোট ছোট মহল্লায় আলাদা মসজিদ নির্মাণ করে জুমআর নামাযও আদায় করা মসজিদে জামাতে নামাযের যে মাকসাদ ছিল সেটাই নষ্ট করে ফেলা হয়।

যদি পারস্পরিক বিরোধের জের ধরে কাছাকাছি মসজিদটির মুসল্লি কমানোর জন্য পাশেই আরেক মসজিদ নির্মাণ করা হয়ে থাকে, তাহলে তা অবশ্যই নাজায়েজ।

সুতরাং এভাবে মসজিদ নির্মাণ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

সবার উচিত পাড়ার মসজিদগুলোকে পাঞ্জেগানা মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করে, একটি বড় মসজিদকে জুমআর মসজিদ হিসেবে সকলে একসাথে জুমআ আদায় করা।

এটাই সর্বোত্তম তরীকা।

আর এক মসজিদ রেখে অন্য মসজিদে নামায পড়তে যাওয়াকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা দ্বীনে শরীয়ত সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচায়ক।

যখন যেখানে সুযোগ হয়, সে মসজিদেই নামায পড়ে নেয়া উচিত।

বাকি প্রশ্নোক্ত মসজিদগুলোতে জামাত পড়লে যেমন জুমআ আদায় হবে। তেমনি ওয়াক্তিয়া নামাযও আদায় হয়ে যাবে।

আর পাশে মসজিদ রেখে ঘরে নামায পড়া কিছুতেই কাম্য নয়। মসজিদ রেখে ঘরে জামাতে নামায পড়লে জামাতের সওয়াব পেলেও মসজিদের সওয়াব পাওয়া যাবে না।

وإن صلى أحد فى بيته بالجماعة لم ينالوا فضل الجماعة التى تكون فى المسجد لزيادة فضيلة المسجد وتكثير جماعته وإظهار شعائر الإسلام وهكذا فى المكتوبات أى الفرائض لو صلى جماعة فى البيت على هيئة الجماعة فى المسجد نالوا فضيلة الجماعة وهى المضاعفة بسبع وعشرين درجة لكن لم ينالوا فضيلة الجماعة الكائنة فى المسجد، فالحاصل أن كل ما شرع فيه الجماعة فالمسجد فيه أفضل لما اشتمل عليه من شرف المكان وإظهار الشعائر وتكثير سواد المسلمين وائتلاف قلوبهم (كبيرى-402)
عن أنس بن مالك قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: صلاة الرجل فى بيته بصلاة، وصلاته فى مسجد القبائل بخمس وعشرين صلاة (ابن ماجه-102، رقم-1413)

وروى عن عطاء لمفاتح الله الأمصار على عمر رضى الله عنه أمر المسلمين أن يبنوا المساجد، وأن لا يتخذوا فى مدينة مسجدين يضر أحدهما صاحبه (روح المعانى، زكريا-7/31، تحت رقم الآيات-108، من سورة التوبة)

إذا كان هذا مباهاة ورياء او سمعة فهو أيضا مكروه، بل بناء المساجد بهذه النية الفاسدة يكون مكروها أيضا الخ (بذل المجهود، كتاب الصلاة، باب فى بناء المسجد-1/259، 3/158، 3/278

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *