প্রচ্ছদ / ক্রয়-বিক্রয় / ওকীল মুয়াক্কিলের টাকা দিয়ে নিজের নামে জমি কিনলে হুকুম কী?

ওকীল মুয়াক্কিলের টাকা দিয়ে নিজের নামে জমি কিনলে হুকুম কী?

প্রশ্ন

From: M M S Hossain
বিষয়ঃ ক্রয়-বিক্রয়
আচ্ছালামু আলাইকুম

জনাব আমার থেকে এক ব্যক্তি নয় লক্ষ টাকা এ কথা বলে নিয়েছে যে সে আমাকে অর্ধ কাঠা জায়গা দিবে। এবং পরবর্তীতে জমীন রেজিস্ট্রারির জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু সে আমার নামে জমীন রেজিস্ট্রারী করে নাই। বরং তার নিজের নামেই করেছে। কিছু দিন পরে সে আমাকে জমীন বিক্রি না করেই জমীনের আনুমানিক দাম ধরে এগার লক্ষ টাকা প্রদান করে। অথচ সে আমার থেকে মোট সাড়ে নয় লক্ষ টাকা নিয়েছিল।
এমতাবস্থায় আমার জন্য কি আমার দেয়া সাড়ে নয় লক্ষ টাকার অতিরিক্ত (দেড় লক্ষ) টাকা নেয়া হারাম হয়েছে?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উত্তরটি বুঝার জন্য দু’টি পারিভাষিক শব্দ বুঝে নিন।

প্রশ্নোক্ত বিষয়ের মাঝে টাকা প্রদানকারী ব্যক্তি আপনি হলেন “মুয়াক্কিল”। আর যাকে জমি ক্রয়ের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেছেন, তিনি হলেন আপনার “উকীল”।

নয় লাখ টাকার বিনিময়ে আধা কাঠা জমি ক্রয়ের জন্য যাকে ওকীল বানানো হয়েছে, তিনি যখন মুয়াক্কিলের টাকায়ই জমিটি ক্রয় করেছে। তখন জমিটি মুয়াক্কিলের জন্য হয়ে গেছে।

নিজের নামে উক্ত জমির রেজিষ্ট্রারী করা উকীলের জন্য জায়েজ হয়নি।

তাই টাকা নয়, আধা কাঠা জমি মুয়াক্কিলকে ফেরত দেয়া আবশ্যক।

হ্যাঁ, জমিটি বুঝে পাবার পর যদি মুয়াক্কিল উক্ত জমিটি উকীলের কাছে বিক্রি করে ক্রয় করা টাকার চেয়ে বেশি মূল্যে তাহলে তা ক্রয় করে নেয়া উকীলের জন্য বৈধ হবে।

যেমন প্রশ্নে উল্লেখিত সূরতে নয় লাখ টাকায় ক্রয় করা জমিটি এগার লাখ টাকায় উকীল ক্রয় করে নিলে উক্ত ক্রয় বিক্রয় বিশুদ্ধ হবে। সেই হিসেবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ মুয়াক্কিলের জন্য জায়েজ হবে।

কিন্তু উপরোক্ত পদ্ধতি ব্যতীত নয় লাখ টাকা প্রদান করে পরবর্তীতে এগার লাখ টাকা গ্রহণ করা সুদ হবে। যা গ্রহণ করা বৈধ হবে না।

তাই আপনার উচিত উকীলের কাছে থেকে প্রথমে জমি বুঝে নেয়া, তারপর ইচ্ছে হলে জমিটি তার কাছে এগার বা তার চেয়ে কমবেশি মূল্যে বিক্রি করে টাকা গ্রহণ করা।

المال الذى قبضه الوكيل بالبيع والشراء وإيفاء الدين واستفائه، والما الذى قبضه الوكيل بقبض العين بحسب وكالته، هو فى حكم الوديعة بيد الوكيل (شرح المجلة لسليم رستم باز-784، رقم المادة-1463

وإن بشراء شيء بغير عينه فاشراء للوكيل إلا إذا نواه للمؤكل وقت الشراء، أو شراه بماله أى بمال المؤكل (الدر المختار، كتاب الوكالة، باب الوكالة بالبيع والشراء-8/252

وليس للمودع حق التصرف والاسترباح فى الوديعة (المبسوط للسرخسى، كتاب الوديعة-11/122

لا يجوز التصرف فى مال غيره بلا إذنه، ولا ولايته (الدر المختار مع الشامى-9/291

وليس للوكيل بشراء عين شراؤه لنفسه ولا لمؤكل آخر، لأنه يؤدى إلى تغرير الآمر من حيث أنه اعتمد عليه (مجمع الأنهر فى شرح ملتقى الأبحر، باب الوكالة بالبيع والشراء-3/319، البحر الرائق-7/268

الوكيل بالبيع لا يملك شرءه لنفسه، لأن الواحد لا يكون مشتريا وبائعا، فيبيعه من غيره ثم يشتريه منه، وإن أمره المؤكل أن يبيعه من نفسه وولده الصغير، أو ممن لا تقبل شهادته فباع منهم جاز (رد المحتار-8/257

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামিয়া ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

অগ্রীম বাসা ভাড়ার উপর বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত কে দিবে?

প্রশ্নঃ মুহতারাম, অমি প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে বাড়ি ভাড়া নেই। ভাড়া নেওয়ার …

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস