প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / ঘৃণিত গোনাহে লিপ্ত এক ব্যক্তির আলোর পথে ফিরে আসা এবং তওবা প্রসঙ্গ

ঘৃণিত গোনাহে লিপ্ত এক ব্যক্তির আলোর পথে ফিরে আসা এবং তওবা প্রসঙ্গ

প্রশ্ন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক,

বিষয়ঃ দুনিয়ায় করা ঘৃণিত পাপাচারের জটিলতা থেকে সমাধান চেয়ে মাসআলা!

আমি অনেক জঘন্য ও বড় কিছু পাপ করেছি জীবনে, তার বৃত্তান্ত কাউকে বলতে পারছি না লজ্জায়। কী করব কিছুই ভেবে কুলিয়ে উঠতে পারছি না আবার পাপের বোঝা বইতেও পারছি না। সর্বদা ভীষন মানসিক পীড়ায় আছি। কিন্তু কিছুদিন আগে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে করতে আহলে হক মিডিয়া নামক মিডিয়া সার্ভিস এর সন্ধান পাই, এইখানে নানা ধরণের জটিল সমস্যার ইসলামিক বিধান অনুযায়ী সহীহ সমাধান দেয়া হচ্ছে দেখে নিঃশ্বাস বন্ধ হবার সময়ে মনে হলো খানিক যেন অক্সিজেন এর ছোয়া পেলাম। মনে হলো এইখানে আমার জটিল সমস্যা শেয়ার করলে সঠিক সমাধান পাওয়া যাবে সেই আশায় লিখলাম এবং মুফতি লুতফর রহমান ফরায়েজী সাহেব কেও চিনতে পারি। আমি উনার মাদরাসায় পড়ুয়াকালের পরিচিত এক ছোট ভাইয়ের বন্ধু। তাই নাম পরিচয় প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। দয়া করে আমাকে আমার সম্পূর্ণ বিবরণ পড়ে আমার মুক্তির সঠিক পথ বাতলে দিলে চির উপকৃত হতাম।
আমি কখনই মাদরাসায় পড়ি নাই। তবে ৫ পাস করার পর ইচ্ছা ছিল মাদরাসায় পড়াশুনা করার। আমাদের পরিবার সম্পূর্ণ ইসলামিক মাইন্ডেড পরিবার। আমরা ৫ ভাই (আমি সবার ছোট) ১ বোন (বোন সবার বড়, বিয়ে হয়ে গেছে)। আমার বাবা একজন আলেম ছিলেন কিন্তু আমার জন্মের সময় উনি মারা যান। পরিবারের হাল ধরেন আম্মু আর ভাইয়েরা আর আমার নানা। নানা শরশিনা পীর সাহেবের মুরিদ ছিলেন। আব্বা সব ভাইকে মাদরাসায় পড়িয়েছিলেন কিন্তু আব্বা মারা যাবার পর আমি চাওয়ার পরেও আমাকে ভাইয়েরা মাদরাসায় ভর্তি করান নাই। পরে উনারা মাদ্রাসা ছেড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরাশুনা করে বর্তমানে ৩ জনই ব্যাংক এ চাকরি করেন। এইভাবে যখন আমি ৯ম শ্রেনিতে উঠলাম তখন আমি খারাপ সঙ্গীদের সাথে জড়িয়ে পড়ি। তাদের সাথে পতিতালয়ে গিয়ে ৪/৫ বার বিভিন্ন মেয়েদের সাথে বিছানাতেও গিয়েছিলাম। তখন তেমন নামাজ পড়তাম না। পরে যখন এইভাবে অনার্স এ ভর্তি হলাম তখন আমার দ্বিতীয় বড় ভাইয়ের বিয়ে। উনার বিয়ের ১৫/১৬ দ্বীনের মাথায় ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে আমার ভাব হয় এবং শারীরিক সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্ক ৩/৪ মাস বিদ্যমান থাকে। আগেই বলে নেই আমাদের পরিবার আমাদের এলাকার মধ্যে খুব সম্মানিত একটা পরিবার। পরে ভাই যখন বুঝতে পারে তখন বাসায় সবাই জানতে পারে এবং পারিবারিক সম্মানের কথা বিবেচনা করে ভাই উনার স্ত্রীকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তালাক দেন নাই। কিন্তু বিষয়টা কাউকে বলতেও পারেন নাই। আমার সাথে এখন ঐ ভাবীর কোন প্রকার যোগাযোগ নাই। কিন্তু সর্বদা এই কাজের জন্য নিজের মনে নিজেকে খুব খারাপ মনে হয় এবং খুব ভয় হয় আল্লাহ কী করবেন তা ভেবে। বেশি ভয় পাবার আরেকটা ভয় হলো আমার ঐ ভাই খুব আমলদার ব্যাক্তি এবং উনি কখনই নামাজ ছারেন না। উনার মনে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি আমি। উনি আমার সাথে লজ্জায় এ ব্যাপারে কিছুই বলেন নাই। উনি এখনো আমার সাথে স্বাভাবিক কথা বলেন কিন্তু উনার চোখের দিকে তাকালে আমাকে ঘিরে উনার বিষাক্ত বেদনা উনার চোখে দেখতে পাই। এই ঘটনাটিও শেষ হয়ে গেছে আজ ৩/৪ বছর হতে চলল।
আর এখন এই ঘটনাটি আমার বর্তমান মানসিক পীড়ার কারণ নয়। যে ঘটনা সবচাইতে বড় মানসিক পীড়ার কারন তা নিচে উল্লেখ করছি। দয়া করে ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ ঘটনাটি পড়ে এর একটা উপযুক্ত সমাধান দিয়ে আমাকে গোনাহ এর অভিশাপ থেকে চির মুক্তি দেয়ার একটা ব্যাবস্থা দিয়ে আমাকে মুক্ত হবার রাস্তা দেখিয়ে চির উপকৃত করবেন। বর্তমান এই ঘটনায় আমার কলিজা জলে পুড়ে ছারখার হবার মত অবস্থা হয়েছে। আমার শুধুই মনে হয় আমার আজকের এই অবস্থা আমার বড় ভাইকে মানসিক কষ্ট দেয়ার ফসল। এটা শুধুই মাথায় কাজ করছে, বার বার কোন মতেই নিজেকে মানসিক মুক্তি দিতে পারছি না নিজেকে।
আমি বর্তমানে গনিত বিভাগে একটা সরকারি কলেজে অনার্স শেষ করেছি। যখন আমি ২য় বর্ষে ছিলাম তখন নিজেই নিজের এলাকাতে একটা কোচিং খুলি। কোচিং এ একটা ম্যাডাম নেই। যে ছিল আমার স্কুলর স্যারের ছোট বোন। আর মেয়েটি ছিলো ডিভোর্সি। ততদিনে আমার বাসার ভাবীর সাথে কুকর্ম করার ২বছর পেরিয়ে গেছে। কোচিং এ মেয়েকে ম্যাডাম হিসাবে নিব শুনে মেয়ের মা (আমার স্যারের মা) রাজী হয়ে গেলো। উনি বলতে গেলে অনেকটা নিজে নিজে সেধে সেধেই আমার কোচিংয়ে উনার মেয়েকে দিয়ে যায়। আমার কোচিং এর রুম পর্যন্ত উনি ঠিক করে দেয়। আমরা আমাদের এলাকাতে স্থায়ী ভাবে আছি আর আমার স্যার আমার এলাকাতে অনেক বছর যাবত ভাড়া বাসায় থাকেন, অর্থাৎ উনারা ভাড়াটিয়া। মেয়েকে কোচিং এ আনার পর ওর সাথে আমার প্রেম হয় শারীরিক সম্পর্ক হয়। এইসব মেয়ের পরিবার ইঙ্গিত পাবার পরেও মেয়ের পরিবার তেমন কোন উদ্যেগ গ্রহন করেনি। একদিন হঠাত আমার বড় আপু কোচিং এ এসে আমাদের দুজনকে একত্রে কোচিং এ দেখতে পায়। পরে আমার বাসায় গিয়ে এই কথা জানানো হলে বাসা থেকে ঐ স্যারের মায়ের কাছে ফোণ করে হুশিয়ার করে দেয়া হয়। কিন্তু ততদিনে মেয়ে আমাকে খুব ভালোবেসে ফেলে। আমাকে না পেলে তার জীবন যায় যায় অবস্থা। মেয়ে আমাকে অনেকবার বিয়ে করতে বলে কিন্তু আমি যত খারাপ কর্মকাণ্ডই করি না কেন ছোটবেলা থেকেই আমার ভিতর একটা ধর্মীয় দুরবলতা ছিল এবং এটাও আমাকে মানসিক ভাবে বাধা দিত অনেক সময় অনেক কিছু করতে। একেবারে ছোট বেলা থেকেই আল্লাহর কাছে মোনাজাত করে বলতাম “আল্লাহ আমি তোমাকে চাই, আমার দুনিয়া প্রয়োজন নেই” কিন্তু এই মোনাজাত করা সত্ত্বেও নানা শয়তানি প্রলোভনে পড়ে খুব খারাপ কাজ ও করে ফেলতাম। যখন পঞ্চম শ্রেনিতে পড়ে তখন থেকেই নিয়মিত হস্তমৈথুন করি আমি। প্রতি সপ্তাহে ৩/৪ বার এমনকি ৬/৭ বার ও হস্তমৈথুন করে বীর্য বের করতাম আর প্রচুর এডাল্ট ভিডিও দেখতাম। সর্বশেষ এই মেয়ের সাথে সম্পর্ক হবার আগে যত কিছুই করতাম না কেন, অন্তত ২/৩ ওয়াক্ত নামাজ ও পড়তাম। কিন্তু এই মেয়ের সাথে সম্পর্ক হবার পর পরই আমার নামাজ কালাম সব বন্ধ হয়ে যায়। যাই হোক মেয়ে আমাকে বার বার বিয়ে করতে বললে আমি জানতাম যে এই বিয়েতে আমার পরিবার রাজী হবে না। আবার আমাদের পরিবার এলাকার মধ্যে সম্ভ্রান্ত। কোন দুর্ঘটনায় আমার অসুস্থ আম্মু যে কোন সময় মারা যেতে পারে এই ভয় ও কাজ করত ভিতরে। তাই মেয়েকে প্রথমে বিয়ে করতে রাজি ছিলাম নাহ। মেয়েকে বিয়ে না করতে চাওয়ার পেছনে আমার যে চিন্তা কাজ করত তা হলো, আমার আম্মু রাজি না আর এই অবস্থায় বিয়ে করলে যদি অসুস্থ আম্মু মারা যায় তবে তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী হব আমি। আর মায়ের অসন্তুস্টি নিয়ে জান্নাতে যেতে পারব না এটা পরিষ্কার জানা ছিল আমার। তাই বাসায় আম্মুকেও খুশি রাখতাম আবার এই দিক দিয়ে মেয়েকেও খুশি রাখতে হতো। সব কিছু মিলিয়ে মানসিক অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছিল আর কোচিং অচলের দিকে যাচ্ছিলো। মেয়েকে বিয়ে করতে পারব না বললে মেয়ে কেঁদে কেটে এমন অবস্থা হতো তার যা দেখার মত আর সহ্য করার মত অবস্থা থাকত না আমার। মোট কথা আমি মেয়ের দুনিয়া ছিলাম। সে বলতো আমি নাকি তার অক্সিজেন। কয়েকবার মেয়ে আমার কোচিং এর ভিতরেই কান্না করতে করতে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো তাকে আমার বিয়ে করার অনাগ্রহ দেখে। দিন যতই যাচ্ছিল আমার অবস্থা আরো করুন থেকে করুন তর হচ্ছিলো, কী করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না। এই দিক দিয়ে বাসায় সব জানার পর কঠোর ভাবে মেয়ের পরিবারকে নিষেধ করার পর মেয়ের মা মেয়েকে কোচিং থেকে একেবারে নিয়ে যায় কিন্তু মেয়ের সাথে আমার যোগাযোগ বন্ধ করে দেন নাই উনি। উনি আমাকে উনার মেয়ের সাথে নির্জনে কথা বলার জন্য নিজের বাসায় ডেকেছিলেন ও। কিন্তু তা নিজের কাছে অপমানজনক লাগায় আমি নিজেই যাই নি। কিন্তু যোগাযোগ রেখেছিলাম, ইতিমধ্যেই মেয়ে আবার বাইরে বের হওয়া শুরু করল আবার সবার আরালে আমার কোচিং এ আসা শুরু করল। ঐ সময়তেও মেয়ের সাথে আমার শারীরিক মিলন হতো নিয়মিত। এর মধ্যে মেয়ে খুব কান্নাকাটি করত আমাকে বিয়ে করার জন্য। অনেক ভেবে চিনতে আমি এবার আমার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটলাম। আমি তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম। পরিবারের চিন্তা বাদ দিয়ে দিলাম। আর এর আগে যতই খারাপ কাজ করি নাই কেন একসাথে একাধিক সম্পর্ক আমি খুব অপছন্দ করতাম যেটা বর্তমান সমাজের অনেক ছেলে-মেয়েরাই করে থাকে। মাঝখান দিয়ে মেয়েকে ছেরেও দিয়েছিলাম ওর অন্য এক ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে দেখে। পরে আমার কাছে ভুল স্বীকার করে মাফ চাইলে আমি আবার তাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই গ্রহণ করি। যখন মেয়েকে বুঝালাম যে তাকে বিয়ে করব আমি রাজি আছি। তখন মেয়ের মায়ের সাথেও ব্যাপারটা শেয়ার করি। উনাকে সরাসরি বলেছিলাম যে আমি আপনার মেয়েকে খুব ভালোবাসি এবং বিয়ে করতে চাই। যখনি এই কথা উনার সাথে শেয়ার করি তখন থেকেই উনি নানান কথা বলতে থাকেন আমাকে। আমাকে এমন কথাও বলেন যে আমি উনার মেয়েকে বিয়ে করার যোগ্যও নাহ। প্রথম প্রথম উনার এইসব কথা পাত্তা দিতাম না। কিন্তু দিন যতই যেতে থাকল মেয়ের মায়ের প্রতাপ ততই এখন বাড়তে থাকলো। উনি মেয়েকে দিয়ে আমাকে বলান আমি যেন কোচিং বানিজ্য ছেড়ে একটা ভালো চাকরি নেই তবে উনি উনার মেয়েকে আমার কাছে বিয়ে দিবেন। কিন্তু আমার চাকরি করা আমার ইচ্ছা নয় আমার ব্যাবসা করার ইচ্ছা সেই ছোটবেলা থেকেই। এবার মেয়ের মা মেয়েকেও বাধ্য করাল যে আমার চাকরি হলে মেয়ে আমাকে বিয়ে করবে নয়তো আমাকে বিয়ে করবে না। সুযোগে মেয়ের মা আমার সাথে মেয়ের সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু মেয়ের ব্যবহার দেখলে মনে হয় মেয়ে আমার জন্য পাগল। আবার তার কাজকর্ম দেখলে মনে হইতো সে নিজেও কোন উদেশ্য নিয়ে আমাকে ঝুলিয়ে রাখছে। কিন্তু ওকে খুব ভালোবেসে ফেলাতে আমার কাছে এইসব বিষয় তেমন কোন প্রাধান্য পাচ্ছিল না। কিন্তু ওকে পাবার জন্য আমি কোচিং ছারতে রাজী ছিলাম না। যেহেতু আমার কোচিং দিয়ে চাকরি থেকেও ভালো আয় হত আমার। এখন মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চাইলেও মেয়ের মা রাজি না থাকায় মেয়ের উপর বাসায় নানা ধরণের অমানুষিক নির্যাতন শুরুহয়। শেষ অবধি আমি মেয়েকে বলি দেখ তোমাকে বিয়ে করলে আমার পরিবার আমাকে তাজ্য করবে আর তুমি যদি তোমার পরিবার ছেড়ে আমাকে বিয়ে করতে পার তবেই আমাকে বিয়ে কইরো। প্রথম কয়েক মাস মেয়ে রাজী ছিল এই প্রস্তাবে। কিন্তু মেয়ের পরিবার এইসব পরিকল্পনা জানতে পারে মেয়ের মাধ্যমেই। ওর পরিবার আরো ক্ষেপে যায়। ও নিজেও আমাকে কথা দেয় পরিবার ছেড়ে চলে আসবে আর আমরা দুজন নিজে নিজে কাজী অফিসে গিয়েই বিয়ে করে নিব। মেয়ের সাথে আমার খুব কম ই যোগাযোগ হইতো, বাসায় এসে লুকিয়ে চিঠি দিয়ে যেতাম ওকে। এর মাঝেই বিয়ের তারিখ ও ঠিক হয়ে গেছে এই বছরেই আর এই দিক দিয়ে আমি বিয়ের সরঞ্জাম ও কেনাকাটাও শেশ করে রেখেছি। ওর বাসায় কীভাবে যেন জেনে যায় আমরা পালিয়ে বিয়ে করব। ওর মা ওকে ঠিক করতে না পেরে কিছুদিনের মধ্যে ওকে গ্রামে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যায় (যেটা আমার ধারণা)। গ্রাম থেকে আসার পর পরেই ও আমাকে একটা চিঠি দিয়ে আমার প্রতি ওর অনেক ঘৃণা প্রকাশ করে আর সরাসরি আমাকে জানিয়ে দেয় যে আমাকে বিয়ে করতে পারবে নাহ। ওর এই কথায় আমি যেন মাঝ দরিয়ার মাঝে ডুবে গেলাম এই অবসথা। এতদিন ও আমাকে বিয়ে করার জন্য হাতে পায়ে ধরেছে এইবার আমি চিঠিতে ওর হাতে পায়ে ধরলাম কিন্তু কোন কাজ হলো না। মেয়ে ওর মায়ের কথাই বলছে আপনি একটা চাকরি নেন তারপর আপনার পরিবার যদি প্রস্তাব নিয়ে আসে তবে আপনাকে বিয়ে করব আমি। ওর শর্ত পুরন করে ওকে বিয়ে করা আমার পক্ষে এখন অসম্ভব ই বলা চলে। আমি অনেকটা নিশ্চিত যে মেয়েকে তাবিজ করেছে এবং বর্তমানে মেয়ের সাথে আমার কোন প্রকার যোগাযোগ নেই। কিন্তু কিছুদিন আগে দেখতে পেলাম মেয়ে সেই আগের যে ছেলের সাথে যোগাযোগ ছিল সেই ছেলের সাথে যোগাযোগ করেছে। নিজেকে আর মানাতে পারলাম না নিজের প্রেয়সিকে অন্যজনের কাছে দেখে অনেক কষ্টে তা সামলিয়েছিলাম।
ঘটনার ইতি হয়েছে মাত্র মাস তিনেক হয়েছে। ৩ মাস আগে মেয়ের সাথে একটা ফোণ আলাপ হয় সে ফোনে আমার নানা খারাপ দিক তুলে ধরতে থাকে যে কাজ সে আগে কখনই করে নাই, বরং উল্টো আমাকে পাবার জন্য পাগলপারা ছিলো।
এখন মেয়েকে কিছুতেই মন থেকে ভুলতে পারছি না। আবার এই দিক দিয়েও আমার পরিবার খুশি মেয়ে ফিরে গেছে বলে। মেয়েকে ফিরাতে আমার পরিবারও অনেক গোপন ষরযন্ত্র করেছিল। এই বছর রমজান মাসে আমি কাওমি মাদরাসার আর দারুল উলুম দেওবন্দ এর কিছু হুজুরের বয়ান ইউটিউব এ দেখি এবং নিজেকে সম্পূর্ণ ঈমান আর আমল এর উপর রেখেছি। কিন্তু নিজের জীবনের এইসব জটিল কর্মকান্ড নিয়ে চিন্তা করে মাঝে মাঝে আল্লাহর কাছে অঝোরে কেঁদে মাফ চাই। পাশাপাশি মুফতি লুতফর রহমান ফরায়েজী সাহেবের মাদরাসার ছোট ভাই (আমার বন্ধু) আমাকে কিছু আমল শিখিয়ে দেয় এইসব করার পর থেকে নিজেকে এখন কিছুটা হালকা অনুভুত হচ্ছে। কিন্তু মন থেকে কিছুই পরিষ্কার করতে পারছি না কিছুতেই।
এখন ওর থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন আছি। আল্লাহর কাছে গভীর ভাবে তওবা করেছি অনেকবার। অনেকবার অঝোরে কেঁদেছিও নিজের কাজের জন্য আল্লাহর কাছে। আল্লাহর কাছে এটাও চাইছি যে আল্লাহ যেন আমার অন্তরের কষ্ট টা কমিয়ে দিক। কিন্তু কিছুতেই এ নিদারুন কষ্ট থেকে নিস্তার পাচ্ছি নাহ। আলহামদুলিল্লাহ এখন নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরছি + তাহাজ্জুতও পরছি + নিয়মিত তওবা করছি পাশাপাশি একজন ভালো আলেম এর সোহবত নিব ভেবে রেখেছি। কিন্তু নিজের এই অবস্থা কিছুতেই পরিবর্তন করতে পারছি না। এমন অবস্থায় আমার কী করনিয় একটা পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি আমার প্রশ্ন গুলির জবাব দিয়ে আমাকে বাধিত করবেনঃ

{{ আমার বর্তমান হালত হচ্ছে, আমি এখন আল্লাহর ইচ্ছায় সমস্ত খারাবিয়ত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা আছি এবং নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যা প্রচুর আমল ও করছি। হস্তমৈথুন একসময় প্রচুর করলেও আল্লাহর বিশেষ ফজলে তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে চলে এসেছে, গত ১ মাসে একবারো তেমন চিন্তা আসেনি মাথায়, বিভিন্ন ইসলামি বই পড়ছি + নিজেকে নিজের কাজে ব্যাস্ত রাখছি। তাহাজ্জুত নামাজ পড়ে একাকী বসে জিকির করছি এবং আল্লাহর কাছে কান্না কাটি করছি। নামাজ পড়তে দাড়ালে কেয়ামতে আমার অবস্থা কী হবে তা ভেবে ভয়ে কান্না চলে আসে। মাঝে মাঝে ওই মেয়ের কথা মনে হলেও অনর্গল কান্না আসে। তাহাজ্জজুত নামাজ পড়ে জিকির শুরু করলে চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পরতে থাকে। আল্লাহ আমাকে কী হেদায়েত দিবেন না?? এইসব কথা বলে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করি শুধু এখন। এসব মিনতি করে অনর্গল চোখের পানি পড়তে থাকে আল্লাহর কাছে। নিজের ঈমানএর হেফাজত চেয়ে কাঁদি শুধু আল্লাহর কাছে। সর্বদা গুনাহ মাফের আমল ও গুনাহ থেকে বাঁচার তোউফিক যেন আল্লাহ মিলিয়ে দেন সে দোয়া করতে থাকি। এইসব আমল ও এই অনুযায়ী কাজ আপনার মাদরাসার ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে শিখতে পেরেছি। উনি এরপাশাপাশি আমাকে কিছু বইও দেন তা পড়ে আরো জানতে পারি। মোটকথা আমি এখন গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারছি, যতই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারছি ততই আমল করার সুযোগ মিলছে আমার তা বুঝতে পারছি। উনি আমাকে বলেছে রাস্তা দিয়ে হাটার সময় কোন নারীর দিকে না তাকাতে + কোচিং এ পারলে মেয়ে ছাত্রী না পরাতে (এটা পরিকল্পনা নিয়েছি একসময় বাদ দিয়ে দিগব) + সর্বদা ওযুর সহিত থাকতে + মিসওয়াক ব্যবহার করতে + বিসমিল্লাহ বলে যে কোণ কাজ শুরু করতে + সর্বদা ডানদিক থেকে যে কোণ কাজ শুরু করতে , আল্লাহর অশেষ রহমতে সবগুলির উপরেই এখন আমল চলছে আজ ৩ মাস যাবত, অনেকটা শান্তি তে থাকলেও নিজের বিগত জীবনের কথা স্মরণ হলেই বুকে চাপ ব্যাথা অনুভুত হয় (আগে বমি হইতো এখন এটা ভালো আছে) খুব ভয় হয় আর ঐ মেয়েটার জন্য খুব কষ্ট লাগে যদিও মেয়েটা আমাকে এখন দেখতে পারে না তবে আমার শুধুই মনেহয় এর পিছনে মেয়ের মা দায়ী নয়তো মেয়েকে আমি বিয়ে করতে পারতাম। এখন নিজেকে শুধু বুঝ দেই এটা ভেবেই যে সবকিছুই আল্লাহ পাকের এরাদা। আলাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই হয় না। আল্লাহ হয়তো এটাতেই আমার মঙ্গল রেখেছেন তাই হয়তো এমন করেছেন। বাসা থেকে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার জন্য প্রেশার দিচ্ছে কিন্তু আমি এখন মনে প্রাণে চাচ্ছি এই মেয়েকে বিয়ে করতে আবার মনে মনে মেয়েদের উপর প্রচন্ড ঘৃণা ও জন্ম নিচ্ছে। যে মেয়েরা একবার এক কথা বলে কিন্ত নিজের বলা কথাই উল্টিয়ে ফেলে। আবার প্রচন্ড ইচ্ছাও করছে বিজ্ঞ কোন আলেম এর সোহবতে গিয়ে নিজের আমল আখলাক ঠিক করার পর উনার পছন্দ মত কোন মেয়েকে বিয়ে করে সম্পূর্ণ ইসলামিক নিয়ম কানুন মোতাবেক পরিয়ার পরিচালনা করতে। সর্বদা চেষ্টা করছি আল্লাহ কে খুশি রেখে কাজ করে যেতে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এই জন্য আল্লাহর কাছে প্রচুর কান্নাকাটিও করি যেন আল্লাহ আমার ধৈর্য, ঈমানি শক্তি, নফস কে নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি দয়া করে বাড়িয়ে দেন, কিন্তু মাঝে মাঝে খুব হতাশ ও লাগা শুরু হয়েছে কিছুদিন ধরে। এখনো কোন ভালো আলেম এর সোহবতে যাই নাই। বাসা থেকে মেয়ে দেখে বিয়ে করিয়ে দেয়ার কথা বল্লেও আসলে কোন মেয়ের উপর এখন আর তেমন ভক্তি আস্তে চায় না মন থেকে। মনে হয় সব মেয়েরাই ধোকাবাজ। শুধু একটা ক্ষেত্রেই এটা একটু কম মনে হয় তা হলো “যে মেয়ের মনে আল্লাহর ভয় আছে সে মেয়ে আমাকে ঠকাতে পারবে না” তাই আমার প্রবল ইচ্ছাও জাগে এখন কারো সোহবতে থেকে তার পছন্দ অনুযায়ী কোণ মেয়ে বিয়ে করে নেয়া। বাসার সবাই একসময় ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী চল্লেও এখন ভাইয়েরা ব্যাংকে জব করার পর থেকে তাদের মধ্যে আগের ন্যায় তেমন ধর্মীয় অনুভুতি নেই। আবার তারা তাদের স্ত্রী দের বাইরে বের করার সময় পর্দা করালেও এখন দেখছি ঘরের ভিতরে তাদের পরদার মধ্যে রাখছেন না। কিন্তু আমি নানান পর্যায়ে থেকে ধোঁকা খাওয়ার পর আমার ভিতর এই বুঝ পয়দা হয়েছে যে সমস্ত দুনিয়াটাই একটা ধোঁকা। তাই দুনিয়ার পিছনে সময় ব্যায় করাটা বর্তমানে আমার সবচাইতে বড় অপছন্দের বিষয়। তাই বাসার লোকজনের পছন্দে মেয়ে বিয়ে করতে চাচ্ছি না। কারণ তারা যেমন মেয়ে দেখবে হয়তো সে আল্লাহ ভীরু হবে না, যেমন্টা আমি চাইছি। কিন্তু ভালো বিজ্ঞ আলেমএর সোহবতে থাকলে উনি যে মেয়ে চয়েস করে দিবেন সে মেয়ে আল্লাহ ভীরু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই আমি চাইছি সেইভাবেই বিয়েটা করতে। এ ব্যপারে আপনাদের মতামত কী আমাকে জানাবেন দয়াকরে। }}

প্রশ্ন ১ – আমি এই মেয়েকে বিয়ে করার জণ্য একজন হিন্দু মহিলা কবিরাজের শরণাপন্ন ও হয়েছিলাম পরে বুঝত পারি যে আমি শিরক করেছি। তাই উনার সমস্ত তদবির বাতিল করে আল্লাহর কাছে খাছ দিলে তওবা করে নিয়েছি। কিন্তু এখন আমি ওকে বিয়ে করতে চাই আবার এই দিকে আমার আম্মুর কথা ভাবলে বিয়ে করতে ভয় ও করে। আবার এই মেয়ের পরিবার দেখলাম মাজারে দান খয়রাত করে এই উদ্দশ্যে যে তাদের মঙ্গল হবে। অনেকটা ভান্ডারি টাইপের পরিবার তাদের। মেয়ে নিজেই ১ বার আমাকে এই কথা বলার পর যখন আমি রাগ করেছি তখন থেকে আর এই বিষয়ে আলাপ করতেই চায় নাই আমার সাথে। ওর মুখ দিয়ে কিছুই বাহির করতে পারি নাই এই ব্যাপারে, শুধু এইটুকুই বলেছে যে এই দান করার মাধ্যমে তাদের মঙ্গল আসবে তাই তারা দান করে মাজারে।
আমি ওকে এখন বিয়ে করতে চাইলে ওকে যেমন কবিরাজ দেখিয়ে ওর মানসিক অবস্থা আমার বিরুদ্ধে রেখে দিয়েছে আমি কি এখন কোন কবিরাজ দেখিয়ে ওকে ফিরাবার চেষ্টা করতে পারি??? এতে কী আমার মঙ্গল হবে?? আর মায়ের অমতে গিয়ে এই মেয়েকে বিয়ে করাটা কতটুকু সঠিক হবে বা এই ক্ষেত্রে মাসআলা আছে কী??? এই অবস্থায় আমার কী করা উচিত?? যেহেতু আমি নিজেকেও মানসিকভাবে ঠিক রাখতে পারছি না।

প্রশ্ন ২ – আমি যে আমার আপন বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে যেনা করেছি এটা আল্লাহ আমাকে মাফ করবেন তো। এই পাপ থেকে হাশরের ময়দানে সম্পূর্ণ ভাবে মুক্তি পেতে হলে আমাকে কী করতে হবে??

প্রশ্ন ৩ – নামাজে ঐ মেয়ের কথা মনে করে যে কান্না আসে তা কী নামাজের কোন ক্ষতির কারণ হতে পারে??

প্রশ্ন ৪ – আসলে আমার এখন কী করা উচিৎ?? নিজে নিজে সিদ্ধান্ত ও নিতে পারছি না আবার কাউকে এই ব্যাপারে বলতেও পারছি না। অনেক আমল, জিকির করলেও আল্লাহর নিকট কান্নাকাটি ও রোনাজারি করলেও মানসিক ভাবে খুবি খারাপ অবস্থায় আছি এখন। দয়া করে জনাব আমার সমস্যাটির স্থায়ী সমাধান দিবেন।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

আমরা ধৈর্য ধরে আপনার পুরো বিবরণই পড়লাম। উপরোক্ত অবস্থা শুধু আপনার একার নয়। এটি পুরো বাংলাদেশের চিত্র। অসংখ্য যুবক এভাবে মারাত্মক সব গোনাহে জড়িয়ে পড়ছে। বেপর্দা জীবন। সহশিক্ষার কুপ্রভাব। ইন্টারনেটের ভয়াল পর্ণ জগত কোমলমতি মানুষকে করে তুলছে হায়েনা। খোলসওয়ালা ইনসান। উপরে মানুষের চামড়া। কিন্তু ভিতরে নিকৃষ্ট পশু।

পশুত্বের গড্ডালিকায় ভাসিয়ে দেয়া রঙ্গীন দুনিয়া থেকে সঠিক পথে ফিরে আসা সবার ভাগ্যে জুটে না। যাদের ফিরে আসার ভাগ্য হয়, বুঝতে হবে, তিনি ভাগ্যবান। তার প্রতি মহান মালিক একান্ত রহমাত বর্ষণ করছেন।

মালিকের অবারিত রহমাতের চাদর তাকে ঢেকে নিয়েছে। এ কারণেই পাপের সাগরে ডুবন্ত মানুষটা ফিরে এসেছে জান্নাতী রাজপথে। এতো পরম সৌভাগ্য। মালিকের রাহে কোটি সেজদা দিয়ে এর শুকরিয়া আদায় শেষ করা যাবে না।

আপনার ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ!

আপনি অতি দ্রুত বিয়ে করে ফেলুন। পারিবারিকভাবে সবাইকে রাজী করিয়ে ভাল পরিবারে বিয়ে করে ফেলুন।

মাথা থেকে কোচিং সেন্টারের সেই মেয়ের কথা ঝেড়ে ফেলুন। আপনার আত্মমর্যাদাবোধ থাকা উচিত। যে মেয়ে আপনার সাথে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় আরেক ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়ায় তাকে নিয়ে ব্যথিত হওয়া আত্মমর্যাদাশীল ব্যক্তির জন্য সাজে না। তাই ভুলে যান তাকে। অতীতের সকল নাজায়েজ সম্পর্ককে মাথা থেকে দূরে সরিয়ে দিন।

সাচ্চা দিলে যেহেতু তওবা করেছেন। তাই আপনার ভয়ের কোন কারণ নেই। দয়ালু রব আপনার তওবাকে অবশ্যই কবুল করবেন। তিনি আপনার সাচ্চা দিলে করা তওবাকে গ্রহণ করে অতীত সমস্ত গোনাহকে মাফ করে দিয়েছেন ইনশাআল্লাহ।

তাই নিয়মিত ইবাদতে মগ্ন হোন। দৈনন্দিন কাজগুগুলো নিষ্ঠার সাথে করুন।

কোচিং সেন্টারে নারী শিক্ষার্থীদের পড়ানো বন্ধ করে দিন। শুধু ছেলেদের পড়ান। নারী শিক্ষিকা রাখা থেকে বিরত থাকুন।

কিংবা ভাল কোন চাকুরী বা ব্যবসা শুরু করুন।

তাবলীগ জামাতে সময় দিন। কিংবা  চরমোনাই তরীকার মেহনতে শরীক হোন। দৈনন্দিন যাপিত জীবনের সাথে এমন ধর্মীয় কোন কার্যক্রমের সাথে ওতপ্রোত সম্পর্ক থাকলে অনেক সময় পাপকার্জ থেকে বিরত থাকা সহজ হয়।

 

আমরা আপনার কল্যাণের জন্য দুআ করি। আপনিও আপনার দুআয় আমাদের শরীক রাখবেন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে হিদায়াতের উপর আমরণ প্রতিষ্ঠিত রাখুন। সকল পাপকাজ থেকে বিরত রেখে রবের প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল করুন। আমীন।

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [বাকারা-২২২]

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِّمَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَىٰ [٢٠:٨٢]

আর যে তওবা করে,ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে,আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল। [সূরা ত্বহা-৮২]

وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনগণ,তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর,যাতে তোমরা সফলকাম হও। [সূরা নূর-৩১]

হযরত উবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ

التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ

গোনাহ থেকে তওবাকারী এমন,যেন সে গোনাহ করেইনি। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০]

 

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

فَإِنَّ العَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ ثُمَّ تَابَ، تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ

বান্দা গোনাহ স্বীকার করে মাফ চাইলে আল্লাহ পাক তা কবুল করেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৪১৪১]

عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَصَرَّ مَنِ اسْتَغْفَرَ، وَإِنْ عَادَ فِي الْيَوْمِ سَبْعِينَ مَرَّةٍ

হযরত আবু বকর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কেউ ক্ষমা প্রার্থনা করে, তবে সে দৈনিক সত্তর বার গোনাহ করলেও সে যেন আসলে গোনাহই করেনি। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫১৪]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ক্ষমতা পাবার মুয়াবিয়া রাঃ কেন হযরত উসমান রাঃ এর হত্যাকারীদের বিচার করেননি?

প্রশ্ন মুয়াবিয়া রাঃ হযরত ওসমান রাঃ এর হত্যার বিচার দাবি করে পুরো ইসলামি রাষ্ট্রের বারটা …