প্রশ্ন
গতকাল এক আহলে হাদিস ভাইয়ের সাথে কথা হল। তারা নাকি এতেকাফ করে না বা মানেনা। সে এক প্রকার রাগ করেই বলল যে আপনারাতো শুধু হানিফার ….. …. [শব্দটি অশ্লীল হওয়ায় কেটে দেয়া হয়েছে: সম্পাদক] পড়ে থাকেন। এখন প্রশ্ন হল তারা যে এতেকাফের বিরোধীতা করে তা কিসের ভিত্তিতে এবং তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত।
প্রশ্নকর্তা-আব্দুল আলিম
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
ইতিকাফ কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত একটি বিষয়। কোন জ্ঞানী ও বিবেক সম্পন্ন মুসলমানই তা অস্বিকার করতে পারে না। যাকে আপনাকে আহলে হাদীস বলে পরিচয় দিচ্ছেন। হয়তো তিনি এ বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ। কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে তার ন্যুনতম জ্ঞানও নেই। নইলে এমন অজ্ঞতাসূচক বক্তব্য তিনি প্রদান করতে পারতেন না।
এতিকাফ সংক্রান্ত বিধিবিধান কুরআনেও বর্ণিত। যেমন ইরশাদ হচ্ছেঃ
وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ [٢:١٨٧]
আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য,যাতে তারা বাঁচতে পারে। [সূরা বাকারা-১৮৭]
অসংখ্য হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইতিকাফ সংক্রান্ত বর্ণনা এসেছেন। যেমনঃ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ»
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। [বুখারী, হাদীস নং-২০২৫]
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، – زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ،
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমজানের শেষ দশকে মৃত্যু পর্যন্ত ইতিকাফ করেছেন। [বুখারী, হাদীস নং-২০২৫]
কুরআন ও হাদীসে পরিস্কারভাবে ইতিকাফের বর্ণনা এসেছে। খোদ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজীবন রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। এরপরও এ ইতিকাফ অস্বিকার করা ও গালি দেয়া কুফরীর শামিল। তাই উক্ত ভাইয়ের তওবা করা আবশ্যক।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]