প্রশ্ন:
ইমরান ,ব্রাক্ষণবাড়িয়া
আসসালামু আলাইকুম ,
১-ভাই বায়হাকী শরীফে রফিয়দাইন সংক্রান্ত এমন কোন হাদীস আছে কি যা দ্বারা প্রমাণ করা যায় রাসূল সাঃ মূত্যু পর্যন্ত রফিয়দাইন করেছেন?
২-একটি হাদীসের তাহকীক জানতে চাই ,হাদীসটি হল
ইমাম বায়হাকী খিলফিয়াত গ্রন্থে আর যায়লাঈ রঃ নাসবুর রায়া গ্রন্থে লিখেন ,
হযরত ইবন উমর রাঃ বলেন ,নবী সাঃ জীবনের প্রথমদিকে দিকে রফিয়াদাইন করতেন যা পরবর্তীতে ছেড়ে দেন ।
৩-রফিয়াদাইন না করা নিয়ে কবজির ভেতরে পুতুল রাখা নিয়ে যে কাহিনী আমাদের সমাজে প্রচলিত তা কতটুকু সঠিক দয়া করে জানাবেন
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১ নং এর উত্তর
এ রকম কোন হাদীস ইমাম বায়হাকী তার রচিত কোন কিতাবে আনেন নি। এটি রফয়ে ইয়াদাইন দাবিদারদের একটি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।
বরং ইমাম বায়হাকী রহঃ এর কিতাব “মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার” নামক কিতাবে التكبير للركوع وغيره তথা “রুকু অন্যান্য রুকনে তাক্ববীর বলা” অনুচ্ছেদের অধীনে নিম্ন বর্ণিত শব্দে হাদীসটি এনেছেন-
عن علي بن حسين قال : « كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يكبر كلما خفض ورفع ، فما زالت تلك صلاته حتى لقي الله عز وجل
অনুবাদ-হযরত আলী বিন হুসাইন বলেন-রাসূল সাঃ প্রত্যেকবার নিম্নগামী হতে ও উঠতে তাক্ববীর বলতেন। আর তিনি এভাবেই নামায পড়তেন মৃত্যু পর্যন্ত। {মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-৮১৩}
এ হাদীসটি তাক্ববীর সংক্রান্ত। রফয়ে ইয়াদাইন সংক্রান্ত নয়। যা হাদীসের শব্দ থেকেই স্পষ্ট। সেই সাথে ইমাম বায়হাকী রহঃ এর শিরোনাম দ্বারাও স্পষ্ট। তিনি হাদীসটি এনেছেন রুকু সেজদায় যেতে উঠতে তাকবীর বলা প্রমাণ করার জন্য। রফয়ে ইয়াদাইন প্রমাণ করার জন্য নয়। আর রফয়ে ইয়াদাইন প্রমাণ করার এ হাদীস তিনি আনবেনই বা কেন? এ হাদীসের সাথে রফয়ে ইয়াদাইনের ন্যুনতম কোন সম্পর্কইতো নেই।
২ নং এর উত্তর
এ হাদীসটি আল্লামা যায়লায়ী রহঃ রফয়ে ইয়াদাইনের আলোচনাকল্পে এনেছেন নসবুর রায়াহ গ্রন্থে। এ হাদীসটির ব্যাপারে তিনি নিজেই মন্তব্য করেছেন-হাদীসটি গরীব। শায়েখ ইবনুল যাওজী রহঃ ও হাদীসটিকে অপরিচিত বলে মন্তব্য করেছেন। {নসবুর রায়াহ-১/৩৯২}
৩ নং এর উত্তর
এ ব্যাপারে কোন সহীহ বর্ণনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি।সাহাবায়ে কেরাম ইসলাম গ্রহণের পর
বগলের নিচে মূর্তি নিয়ে মসজিদে নামায পড়তে আসবেন বিষয়টি একটি আজগুবি গল্প বলেই প্রতীয়মান
হচ্ছে। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন এ ব্যাপারে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।