প্রশ্ন
ভাই আসলে বিষয়টা হলো –
আমি একদিন মসজিদে নামায পড়তে গেলাম তো আমি শেষ এক রাকাত পেলাম। ইমাম সাহেব নামাযে হয়তো প্রথম বা দ্বিতীয় রাকাতে ভুল করেছে। ইমাম সাহু সিজদা দিল সে সাথে আমি সাহু সিজদা দিলাম। তারপর আমার নামায শেষ হবার আগে একজন লোক হাসতেছে আর বলতেছে না জানলে সমস্যা নেই। আমি জিজ্ঞেস করিনি যে আপনি কেনো হাসলেন…..
নিজেই বুঝতে পারছি যে ওনি আহলে হাদিস
এখন আমার কথা হল ইমমা সাহেবকে অনুসরণ করলাম আমি কোথায় ভুল করলাম।
সহীহ হাদিস দিয়ে উত্তর আশা করি।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনি ঠিক কোথায় ভুল করেছেন, তা আপনার বক্তব্য থেকে পরিস্কার নয়। মাসবূক ব্যক্তি তথা যে ইমামের সাথে এক বা ততোধিক রাকাত না পায়, সে ইমামের দু দিকে সালাম ফিরানোর পর দাঁড়িয়ে বাকি নামায পূর্ণ করবে। আর ইমাম যদি শেষ বৈঠকে সাহু সেজদা দিয়ে থাকে, তাহলেও মাসবূক ব্যক্তিও তার সাথে সাহু সেজদা দিবে কিন্তু তার সাথে সাহু সেজদার সালাম ফিরাবে না। তারপর ইমাম সালাম ফিরালে বাকি নামায পূর্ণ করবে।
যদি আপনি উক্ত তরীকায়ই নামায পূর্ণ করে থাকেন, তাহলে আপনার নামাযের কোন ত্রুটি হয়নি। নামায শুদ্ধ হয়ে গেছে। যে হেসে আপনার নামায ভুল সাব্যস্ত করতে চেয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসা করুন সে কেন আপনার নামাযকে ভুল মনে করছে।
বাকি যদি আপনি ইমামের সাথে সাহু সেজদার সালাম ইচ্ছেকৃত ফিরিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার নামায শুদ্ধ হয়নি। যদি ভুলক্রমে করে থাকেন, তাহলে আপনার নামায হয়ে গেছে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: «السَّهْوُ أَنْ يَقُومَ فِي قُعُودٍ , أَوْ يَقْعُدَ فِي قِيَامٍ , أَوْ يُسَلِّمَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ , فَإِنَّهُ يُسَلِّمُ , ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيِ السَّهْوِ , وَيَتَشَهَّدُ , وَيُسَلِّمُ»
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ভুল হল এই যে, নামাযী ব্যক্তি বসার বদলে দাঁড়িয়ে যাওয়া। অথবা দাঁড়ানোর বদলে বসে যাওয়া, বা [তিন বার চার রাকাতওয়ালা নামাযে] দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেয়া। তাহলে এমন ব্যক্তি সালাম ফিরানোর পর দুই সেজদা করবে,তারপর তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরাবে। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-২৫৬৫}
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ ছাড়াও হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ, হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ, হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ, হযরত সাদ বিন আবী ওয়াক্কাস রাঃ প্রমূখ সাহাবাগণ থেকে সালাম ফিরানোর পর সাহু সেজদা করা প্রমানিত। {শরহু মাআনিল আসার, হাদীস নং-২৫৬৪}
وَإِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ، فَلْيَتَحَرَّ الصَّوَابَ فَلْيُتِمَّ عَلَيْهِ، ثُمَّ لِيُسَلِّمْ، ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ»
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের মাঝে যখন কারো নামাযের ব্যাপারে সন্দেহ হয়ে যাবে, তখন তার জন্য উচিত এ ব্যাপারে চিন্তা ফিকির করা, তারপর নামায পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে তারপর দুই সিজদা করবে। {সহীহ বুখারী-১/৫৮, হাদীস নং-৪০১, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৭২}
(قوله والمسبوق يسجد مع امامه) قيد باسجود لانه لا يتابعه فى السلام بل يسجد معه ويتشهد فاذا سلم الامام قام الى القضاء فان سلم كان عامدا فسدت والا لا (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب سجود السهو-2/546، الفتاوى الهندية-1/91)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।