প্রশ্ন
নাম: হাবিব
দেশঃ বাংলাদেশ
বিষয়ঃ নামায ভেঙ্গে যাবার একটি কারণ প্রসঙ্গ
আস সালামু আলাইকুম
ছোটবেলায় নামায ভঙ্গের কারণ গুলো পড়েছিলাম, তার একটি ছিল নামাযের মধ্যে কোন দুনিয়াবি দুআ করলে নামায ভেঙ্গে যাবে , আমি যখন নামায পড়ি তখন অনেক সময় একদমই অনিচ্ছাকৃতভাবে দুনিয়াবি চিন্তা আসে এবং কোনটা প্রার্থনার পর্যায়ে চলে যায়, আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে সেটা আটকানোর , কিন্তু ঈমানের দুর্বলতার কারণে সবসময় পেরে ওঠা হয় না, প্রশ্ন হল এই ধরণের দুনিয়াবি দুআ নামাযের মধ্যে মাথায় চলে আসলে সে ক্ষেত্রে আমার করণীয় কি হবে ? নতুন ভাবে নামায শুরু করতে হবে কি ? দয়া করে জানাবেন।
ধন্যবাদ
উত্তর
وعليكم السلام ورحنة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মনের মধ্যে দুনিয়াবী কথা আসলেই নামায ভেঙ্গে যাবে এমনটি নয়। বরং আপনি নিশ্চয় পড়েছেন নামাযে দুনিয়াবী বিষয়ের দুআ করলে নামায ভেঙ্গে যায়। এক হল দুআ করা, আরেক হল মনের মাঝে দুআ আসা। দুটি কিন্তু এক জিনিস নয়।
মনের উপর মানুষের কন্ট্রোল কম। কিন্তু মুখে বলার উপর মানুষের পূর্ণ কন্ট্রোল থাকে।
তাই মনে আসলেই নামায ভেঙ্গে যাবে না। তবে মুখ দিয়ে দুনিয়াবী বিষয়ের দুআ মুখে উচ্চারণ করলে নামায ভেঙ্গে যাবে।
সেজদার মাঝেই কেবল হাদীসে ও কুরআনে বর্ণিত দুআ, কিংবা আখেরাতে কল্যাণের জন্য দুআ করা যাবে।
আর নামাযের ভিতরে দুনিয়াবী বিষয়ের কথা মনে হলে আল্লাহ তাআলার দিকে রুজু হবে। আল্লাহ তাআলা আমাকে দেখতে পাচ্ছেন। আমি আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে আছি। এমন মানসিকতা তৈরী করতে পারলে মনের মাঝে ওয়াসওয়াসা আসবে না ইনশাআল্লাহ।
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন
إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»
নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের মনে যা আসে সে ব্যপারে তাদের [পাকরাও করা থেকে] মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ না উক্ত কাজটি সে করে বা বলে ফেলে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫২৬৯]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।