প্রশ্ন
ﺍﻟْﺤُﺴْﻨَﻰ ﻭَﻻَ ﺗَﺠْﻬَﺮْ ﺑِﺼَﻼَﺗِﻚَ ﻭَﻻَ ﺗُﺨَﺎﻓِﺖْ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺍﺑْﺘَﻎِ ﺑَﻴْﻦَ ﺫَﻟِﻚَ
ﺳَﺒِﻴﻼً
বলুনঃ আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। আপনি নিজের নামায আদায়কালে স্বর উচ্চগ্রাসে নিয়ে গিয়ে পড়বেন না এবং নিঃশব্দেও পড়বেন না। এতদুভয়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন। -ইসরা-110
আসসালামুআলাইকুম-ভাই আমরা এই
আয়াতের বিপরীতে যোহর ও আসর সালাতে নিঃশব্দে কিরাত পাঠ করি কেন- জানালে উপকৃত হব ॥
উত্তর
وعليكم السلام ورحنة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
দু’টি জবাব দেয়া হল। যথা-
১
কুরআন আমরা রাসূল সাঃ এর মাধ্যমে পেয়েছি। কুরআনের আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য কী? এটি রাসূল সাঃ এর চেয়ে ভাল কেউ বলতে পারে না।
তাই রাসূল সাঃ এর পূর্ণ জীবনটাই হল পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা।
কুরআনে নামায পড়ার আদেশ এসেছে। কিন্তু পড়ার পদ্ধতি আসেনি। তেমনি হজ্ব করার আদেশ এসেছে, কিন্তু করার পদ্ধতি কুরআনে আসেনি।
এ সবই আমরা জানতে পেরেছি রাসূল সাঃ এর আমল দ্বারা। আর রাসূল সাঃ সেভাবেই আমল করেছেন যেভাবে আল্লাহ তাআলা আমল করাতে চেয়েছেন। কুরআনে যা বর্ণিত হয়েছে, সেসব আয়াতের ব্যাখ্যা ও তাফসীরের নামই হল রাসূল সাঃ এর আমল।
আমাদের কাছে দলীল শুধু কুরআন নয়। হাদীসও।
তাই উক্ত আয়াতের দ্বারা উদ্দেশ্য কী? তা রাসূল সাঃ এর আমল দ্বারাই নির্ণিত হবে। আর রাসূল সাঃ যোহর ও আসর নামাযে আস্তে কিরাত পড়তেন। তাই আমরাও যোহর ও আসর নামাযে আস্তে কিরাত পড়ি।
عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»
হযরত আবু মামার রহঃ হযরত খাব্বাব রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, রাসুল সাঃ যোহর ও আসরে কিরাত পড়তেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তেন। আবু মামার পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিভাবে বুঝা যেত? তিনি উত্তরে বলেন, রাসুল সাঃ এর দাড়ি নড়াচড়া দেখে বুঝা যেত। {বুখারী, হাদীস নং-৭৬০}
২
এ আয়াত মূলত নামাযের কিরাতের ক্ষেত্রে নাজিলই হয়নি বরং উক্ত আয়াতে নামাযের ভিতরে যদি কেউ দুআ করে, তাহলে সে কিভাবে দুআ করবে? সে পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ কেউ যদি নামাযের ভিতরে দুআ করে, যেমন নফল নামাযে দুআ করা হয়, কুনুতে নাজেলার সময় দুআ পড়া হয়, তখন দুআ কিভাবে পড়বে? এর বিধান উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে। নামাযে কিভাবে কিরাত পড়বে? এ বিষয়ে এ আয়াতে কোন নির্দেশনাই নেই।
তাই যোহর আসর নামাযে আস্তে কিরাত পড়ার দ্বারা উক্ত আয়াতের কোন বিরোধীতাই করা হচ্ছে না। কারণ উক্ত আয়াতে এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনাই নেই।
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ قَالَ: ” إِنَّمَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا، وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلًا} [الإسراء: 110]، فِي الدُّعَاءِ “
হিশাম বিন উরওয়া তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, “ওয়ালা তাযহার বিছলাতিকা” ইসরা ১১০ নং আয়াতটি নাজিল হয়েছে দুআ বিষয়ে। [মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৯]
এ বিষয়ে আরেকটি প্রশ্নোত্তর পড়ে নিতে পারেন
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।