প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / পিতা মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করলে তা কি শুদ্ধ হয় না?

পিতা মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করলে তা কি শুদ্ধ হয় না?

প্রশ্ন

আচ্ছালামু আলাইকুম,
আমি [নামটি গোপন রাখা হল]। আমি ঢাকার খিলগাঁও থানায় বসবাস করি।

আমি University of Asia Pacific এ Computer Science and Engineering a 2nd year এ পরাশুনা করছি।  আমি প্রায় তিন বছর আগে একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলি। তখন আমি দ্বীনের উপর ছিলাম না। দ্বীন সম্পর্কে গাফেল ছিলাম। আমি যে মেয়ের সাথে সম্পর্ক করি সেও ছিল না। কিন্তু প্রায় ১ বছর ধরে  আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি এবং ঐ মেয়েটি দ্বীনের পথে চলা শুরু করি । যখন দ্বীনের পথে চলে আসি তখন জানতে এবং  বুঝতে পারি যে আমাদের এই সম্পর্কটি ইসলামে সম্পূর্ণ নাজায়েজ। এখন আমরা এক অপরকেও ছাড়তে পারতেছি না। এখন আমরা গোনাহ থেকে বাঁচার জন্য, এই সম্পর্ক হালাল করতে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করতেছি।
এখন আমরা আপাতত বাবা-মাকে জানানো ছাড়া বিয়ে করতে চাচ্ছি । কারণ, বাবা-মাকে জানানোর মত অবস্থা নেই। আমি আমার ইউনিভারসিটি শেষ করার পর ইন-শা-আল্লাহ জানাব। এবং এখন বিয়ে করে দুইজনই দুইজনের নিজস্ব বাসায় অবস্থান করতে চাচ্ছি, অর্থাৎ, আমি আমার বাসায়, ঐ মেয়ে তার বাসায় থাকবে।

এখন, এই অবস্থানে আমাদের বিয়ে করাটা কি জায়েজ হবে? অনুগ্রহ করে জানাবেন কি?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনারা উভয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে আপনাদের জন্য বিবাহ করা জায়েজ আছে। এ বিয়ে শরয়ী মূলনীতি অনুপাতে শুদ্ধও হয়ে যাবে। বাকি পিতা-মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করা ভাল নয়। তারা জানতে পারলে কষ্ট পাবেন। আর পিতা-মাতাকে কষ্ট দেয়া জায়েজ নয়।

তবে পিতা-মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করার দ্বারাও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়।

আর বিয়েটা রেজিষ্ট্রি করিয়ে নিবেন। যাতে করে পরবর্তীতে কেউ অস্বিকার করলে প্রমাণ বাকি থাকে।

عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: ” إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ، لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ، قَالَ: فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ: قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের [চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫}

ওলী বা অভিভাবক ছাড়া বিবাহ শুদ্ধ হয় কি না? জানতে হলে ক্লিক করুন

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

No comments

  1. এরকম সমস্যায় অনেকেই অাছেন, হারাম প্রেম এর চেয়ে বিয়ে অনেক ভালো বলে মনে হয়।
    আল্লাহ্‌ সবাইকে সঠিক পথ এর দিশা দান করুক।
    আমীন…

Leave a Reply to mun pia Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *