প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে পার্থক্য কি?

হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে পার্থক্য কি?

প্রশ্ন

হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে পার্থক্য কি? একটু খোলাসা করে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যথা-

হাদীস হল রাসূল সাঃ এর কথা, কাজ ও দেখে চুপ থাকা আমল আর ফিক্বহ হল এসবের মাঝে নিহিত রাসূল সাঃ এর মূল উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট করে দেয়ার নাম।

হাদীসের মাঝে নাসিখ তথা রহিতকারী এবং মানসুখ তথা রহিত বিষয় রয়েছে। আর ফিক্বহের কিতাবে শুধু নাসিখ বিষয়গুলো আনা হয়, মানসুখগুলো আনা হয় না।

হাদীসের মাঝে কোন আমলের হুকুম বর্ণিত নেই, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে প্রতিটি আমলের হুকুম বলা হয়েছে।

হাদীসের মাঝে কোন বিধানের সংজ্ঞা বলা হয়নি, ফিক্বহের মাঝে সকল বিধানের সংজ্ঞা বিদ্যমান।

হাদীসের মাঝে আমল জায়েজ ও আমল হারাম উভয় প্রকার হাদীস বিদ্যমান আর ফিক্বহের মাঝে শুধু জায়েজ আমলের বর্ণনা বিধৃত হয়েছে।

হাদীসের মাঝে রাসূল সাঃ এর জন্য খাস এমন আমলের কথাও উদ্ধৃত হয়েছে, আর ফিক্বহের কিতাবে যা রাসূল সাঃ এর সাথে সাথে উম্মতীদের জন্য আবশ্যক সেসব আমলই কেবল উদ্ধৃত করা হয়েছে।

কোন একটি হাদীস গ্রন্থেও পূর্ণাঙ্গ নামাযের বিবরণ পাওয়া যাবে না, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে একই সাথে নামাযের পূর্ণ বিবরণ বিদ্যমান।

হাদীসের মাঝে নব উদ্ভুত মাসআলার উসুল বিদ্যমান কিন্তু পরিস্কার সমাধান বিদ্যমান নেই, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে নতুন উদ্ভুত মাসআলার পরিস্কার হুকুম ফুকাহায়ে কেরাম কুরআন ও সুন্নাহের উসুল অনুপাতে লিখে দিয়েছেন।

হাদীসের মাঝে পরস্পর বিরোধী হাদীস বিদ্যমান, কিন্তু এক মাযহাবের ফিক্বহের কিতাবে মুফতাবিহী কওল বলে একটি মতই উদ্ধৃত করে দেয়া হয়।

১০

হাদীসের কিতাবের অনুবাদ দেখে সাধারণ মুসলমানদের শরয়ী মাসআলার সুনির্দিষ্ট সমাধান জানা কষ্টকর, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবের অনুবাদ পড়ে শরয়ী মাসআলা জানা সহজতর।

 

এছাড়া আরো অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাই সাধারণ মুসলমানদের হাদীস বরকতের জন্য পড়া উচিত। কিন্তু হাদীস দেখে দেখে মাসআলা বলা শুরু করা বা ফাতওয়া দেয়া শুরু করা হাস্যকর ও বিভ্রান্তিকর অবস্থা সৃষ্টি ছাড়া আর কিছু হবে না।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

 

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

No comments

  1. মোঃ ফায়সাল

    জাঝাকাল্লাহ খাইর।

  2. নাজমুল

    এই কথাটি বুঝি নাইঃ “ফিক্বহের মাঝে শুধু জায়েজ আমলের বর্ণনা বিধৃত হয়েছে”।

    • যেমন মদ খাবার কথা হাদীসে এসেছে। আবার মদ ছেড়ে দেবার কথাও এসেছে। কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে শুধু মদ ছেড়ে দিতে হবে। তা খাওয়া যাবে না একথাই বিধৃত হয়েছে। মদ যে এক সময় জায়েজ ছিল একথা লিখা হয় না।

      এভাবে যত বিষয় এক সময় জায়েজ ছিল কিন্তু পরে তা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। এসব ক্ষেত্রে হাদীসে জায়েজ এবং নাজায়েজ উভয় বর্ণণা এলেও ফিক্বহের কিতাবে শুধু জায়েজ অবস্থার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। নাজায়েজ বিষয়ের উল্লেখই হয়নি। যাতে করে মানুষ বিভ্রান্ত না হতে পারে।

      এই হল উপরোক্ত বক্তব্যরে অর্থ।

Leave a Reply to নাজমুল Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *