প্রচ্ছদ / অজু/গোসল/পবিত্রতা/হায়েজ/নেফাস / ফরজ গোসলে কি গড়গড়া করা ও নাকের গভীরে নরম স্থানে পানি পৌঁছানো ফরজ?

ফরজ গোসলে কি গড়গড়া করা ও নাকের গভীরে নরম স্থানে পানি পৌঁছানো ফরজ?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।

আপনার প্রশ্নোত্তর বিভাগ হতে জানতে পারলাম যে, গোসলের মধ্য গড়গড়া কুলি করা এবং নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌছানো গোসলের ফরজ নয়, বরং সুন্নাত।

কিন্তু আমরা এত দিন জেনে এসেছি যে, এগুলো ফরজ গোসলের ফরজ আহকাম। আবার আশরাফুল হেদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা থেকে অনুবাদকৃত , ১ম খন্ডের ১১৯ পাতায় এই দলীল টি এভাবে দেয়া হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বানী, কুলি করা ও নাকে পানি দেয়া উভয়টি জানাবাতের গোসলে ফরজ এবং অজুতে সুন্নাত ।

যদিও দলীলটির রেফারেন্স উল্লেখ করা নেই। আবার উক্ত বইয়ের ১১৯ পাতার শেষ দুই লাইনে উক্ত হাদিসকে হযরত ইবনে আব্বাস রাদিঃ এবং হযরত জাবির রাদিঃ কর্তৃক বর্নিত বলা হয়েছে ।

এই বিষয়টা নিয়ে বেশ দ্বিধাদ্বন্দে আছি। যেহেতু বিধানটি ফরজ হওয়ার মত গুরুত্বের দাবী রাখে।

তাই যত দ্রুত সম্ভব উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন! আর বিশেষভাবে অনুরোধ থাকবে, আশরাফুল হেদায়া’র উক্ত হাদিসে’র রেফারেন্সটা দেয়ার জন্য।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

হেদায়া কিতাবে বর্ণিত মাসআলা এবং আমাদের লিখিত মাসআলা দু’টিই সঠিক। আপনি বুঝতে ভুল করেছেন।

এক হলো নাকে ও মুখে পানি প্রবেশ করানো। আরেকটি হলো গড়গড়া করে মুখের গভীরে এবং নাকের গভীরে নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।

গোসলের ফরজ হলো, মুখে এবং নাকে পানি পৌঁছানো।

সুন্নাত হলো গড়গড়া করে মুখের গভীরে এবং নাকের গভীর নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।

আশা করি এবার বুঝতে পেরেছেন আপনি কোন বিষয়টি গুলিয়ে ফেলার কারণে প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে।

আর হেদায়ায় বর্ণিত উক্ত শব্দে হাদীস পাওয়া যায় না। বাকি এমন সমার্থক হাদীস বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।  

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ فِي فَرَائِضِهِ وَهِيَ ثَلَاثَةٌ: الْمَضْمَضَةُ، وَالِاسْتِنْشَاقُ، وَغَسْلُ جَمِيعِ الْبَدَنِ عَلَى مَا فِي الْمُتُونِ (الفتاوى الهندية-1/13، الفتاوى التاتارخانية-1/276)

قوله: غسل الفم والأنف أي بدون مبالغة فيهما فإنها سنة فيه على المعتمد ) طحطاوى على مراقى الفلاح، كتاب الطهارة، فصل بيان فرائض الغسل–102)

ومنها المبالغة فى المضمضة والاستنشاق إلا فى حال الصوم فيرفق، لأن المبالغة فيهما من باب التكميل فى التطهير فكانت مسنونة إلا فى حال الصوم لما فيها من تعريض الصوم للفساد (بدائع الصنائع-1/112، الفتاوى التاتارخانية-1/276، رقم-377)

المراد من كونهما سنتين في الوضوء م: بدليل قوله – عَلَيْهِ السَّلَامُ – إنهما فرضان في الجنابة سنتان في الوضوء» ش: لم يذكر أحد من الشراح أصل هذا الحديث، وإنما قال الأترازي وتبعه الأكمل بدليل ما روي عن ابن عباس وجابر بن عبد الله – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ – عن النبي  صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أنه قال: «إنهما فرضان في الجنابة نفلان في الوضوء

ولفظ الأكملسنتان في الوضوء

وقال السروجيوأما قول صاحب ” الهداية “: (بدليل قوله – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: «إنهما فرضان في الجنابة سنتان في الوضوء فلا يعرف (البانية شرح الهداية، كتاب الطهارة، فصل فى الغسل، فرائض الغسل-1/317)

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

“খানা খাইলে শুকরের গোস্ত খাই” বললে কি উক্ত খানা খাওয়া হারাম হয়ে যায়?

প্রশ্ন এক ব্যক্তি নিজের সন্তানের সাথে রাগ করে বললো যে, “যদি আমার তোর বাড়িতে খানা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *