প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / উচ্চারণ করে ‘তাল’ ও মনে মনে ‘আক’ বললে কি তালাক হয়?

উচ্চারণ করে ‘তাল’ ও মনে মনে ‘আক’ বললে কি তালাক হয়?

প্রশ্ন

নাম :রিমন ইসলাম  ঠিকানা :দিনাজপুর আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমি অনেক দিন ধরে খুব পেরেশানিতে আছি তালাকের ওয়াসওয়াসা জন্য।আমার বিয়ের আগে পাক নাপাকির ওয়াসওয়াসা ছিল আর বিয়ের পর তালাক ও হুরমতে মুসাহারাত নিয়ে ওয়াসওয়াসা শুরু হয়। আমি মঝে মাঝে পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমার আগে দিধাদন্দ কাজ করতো মনে মনে বল্লাম না মুখে উচ্চারন করলাম তারপর জানতে পারি এভাবে তালাক হয় না। তারপর নতুন সমস্যা হয়েছে। ১)একদিন মনের অজান্তে ঠোঁট না খুলে শুধু জিহবা নাড়িয়ে তাল বলি আর আক বলি মনে মনে। আর ওইভাবে তালাক বলার পর আমার স্ত্রী চেহারা আমার কল্পনাতে আসে। আমি নিসবত করিনি শুধু কল্পনাতে আসে। তারপর তালাক বলার সময় কল্পনায় আসলো না পরে কল্পনায় আসলো তা বুঝার জন্য ঠোঁট না খুলে শুধু জিহবা নাড়িয়ে তালাক বলি ফেলি। কোন শব্দ হয়নি। আর ঠোঁট না খুলে জিহবা নাড়িয়ে তালাক বলার সময় আমার স্ত্রী চেহারা আমার কল্পনাতে আসে এতে কি কোনো তালাক হবে? আমি তালাক দেওয়ার উদ্দেশ্য বলিনি আগে কিভাবে বলছিলাম তা বুঝার জন্য বলি।আর কল্পনায় চেহারা ভাসাটাকে কি নিসবত হিসেবে ধরা হবে না ধরা হবে না?? এতে কি কোনো তালাক হবে?? ২)একদিন আমি আর আমার স্ত্রী ঘরে শুয়ে আছি। তারপর একটু রাগ করে আমি বলি আমি কি এখন এখান থেকে চলে যাবো।স্ত্রী বলে তুমি কেন যাবা আমি চলে যাবো। তখন আমি খুব আস্তে মজা করে বলি তে যাও স্ত্রী শুনতে পাই নাই। আর আমরা দুজনেই পাশের রুমের বা ঘরের কথা বুঝাইছি এতে কি কোনো তালাক হবে? ৩)আমাদের এইদিক একটা গালি প্রচলিত আছে যেমন হারামজাদা বা হারামি।তো একদিন স্ত্রী কে বলি তুমি হারামি আছো। মানে হলো শয়তান আছো।তারপর একদিন হারামজাদা বলার নিয়তে হারাম বলে চুপ হয়ে যাই আর জাদা টা বলি না এতে কি কোনো তালাক হবে??  আমি অন্য কোন উদ্দেশ্য বলিনি।মজা করে গালি হিসেবে বলছি। ৪)একদিন স্ত্রী বলতেছে আমি তোমার বাড়িতে থাকবো না। আমি জানি যে এটা তালাক সংক্রান্ত আলোচনা তাই খুব সাবধানে আছি। কিন্তু স্ত্রী যখন বলে আমি আর তোমার বাড়ি থাকবো না তখন খুব সতর্ক থাকার পরেও মুখ থেকে ওটাই তো বেরিয়ে গেছে। তার ২ সেকেন্ড পর বলি কেন তুমি চলে যাবে। ওটাই তো এটা উদ্দেশ্যহীন ভাবে ভুলে মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে কোন উদ্দেশ্য নেইনি।এতে কি কোনো তালাক হবে?? ৫)আমার সবসময় সন্দেহ হয় যে তালাক হয়ে গেল নাকি। তো একদিন খুব সন্দেহ হচ্ছে যে ১ তালাক হয়ে গেল নাকি। তাই আমি বলি যে আমি আমার স্ত্রী কে ফিরিয়ে নিলাম। পরে মাসআলা নিয়ে জানতে পারি আমার কোন তালাক হয়নি। তো তালাক না হওয়ার পরেও যে আমি আমার স্ত্রী কে ফিরিয়ে নিলাম বলছি এতে কি কোনো তালাক হবে?? আমার স্ত্রী কে নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমরা সুখে শান্তিতে আছি। কিন্তু তালাকের ওয়াসওয়াসা আমাকে শেষ করে দিচ্ছে।আমি নামাজে কান্না করি আর বলি আল্লাহ আমার স্ত্রী যদি তালাক হয়ে যায় তাহলে তুমি স্ত্রী কাছে যাওয়ার আগে আমাকে শহীদ মরন দেও কিন্ত আমি মরি না। আমি জাহান্নামের ভয়ে কুঁকড়ে গেছি। আমি কিছু মুফতি সাহেবের কাছে মাসআলাও নেই তারা বলে সমস্যা নেই কিন্তু তবুও আমার টেনশন যায় না  আমি কি করবো দয়া করে আমাকে একটু পরামর্শ দেন। দয়া করে একটু উত্তর টা দিবেন।

উত্তর

وعليكم السلام ورحة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে আপনার স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হয়নি। তাই পেরেশান হবার কিছু নেই। কোন বিষয়ে প্রশ্ন করার আগে সাইটে উক্ত বিষয়ে সার্চ করে দেখে নিবেন এমন প্রশ্নের উত্তর আগেই প্রকাশিত হয়েছে কি না? প্রকাশিত থাকলে একই ধরণের প্রশ্ন বারবার করবেন না।

আপনার প্রশ্নের মতো একাধিক প্রশ্নের উত্তর সাইটে একাধিক প্রকাশিত আছে। তাই এমন প্রশ্ন বারবার করা ঠিক নয়। এতে আমাদের সময় অপচয় হয়।

আর সমস্যা মূলত মাসআলাগত নয়, বরং মানসিক।

তাই আমাদের পরামর্শ হলো:

আজ থেকে তালাকের কোন প্রকার মাসআলা পড়বেন না।

যত ওয়াসওয়াসাই আসুক কাউকে তালাক সংক্রান্ত মাসআলা জিজ্ঞাসা করবেন না। তালাক বিষয়ক আলোচনাও কারো সাথে করবেন না। মনকে দৃঢ় রাখবেন আপনার কোন তালাক হয়নি,বা হবেও না।

তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলে মনকে দৃঢ় করে ফেলবেন যে, আমার দ্বারা কোন তালাক হয়নি। এটা শয়তান আপনাকে কষ্ট দিতে মনে করিয়ে দিচ্ছে। কারণ, শয়তান মুমিনকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায়।

তালাকের ওয়াসওয়াসা আসতে শুরু করলে, স্ত্রীর সাথে বা কাছের বন্ধুদের সাথে খোশগল্পে মেতে উঠার চেষ্টা করবেন। বিষয়বস্তু পরিবর্তন করে ফেলবেন।

একা থাকবেন না। যখনি ওয়াসওয়াসা শুরু হবে, তখনি স্ত্রীর সাথে বা কাছের কোন আত্মীয় বা বন্ধুর সাথে অন্য কোন বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন।

বেশি বেশি ইস্তিগফার এবং সূরা ফালাক ও সূরা নাস এর আমল করবেন।

একজন বিশেষজ্ঞ মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।  

 

منها شك هل طلق أم لا لم يقع (الأشباه-108، جديد-196)

عدم الشك من الزوج فى الطلاق وهو شرط الحكم بوقوع الطلاق حتى لو شك فيه لا يحكم بوقوعه (بدائعل الصنائع، كتاب الطلاق، فصل فى الرسالة-3\126، جديد-3\199)

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)

لو كرر مسائل الطلاق بحضرة زوجته ويقول: أنت طالق ولا ينوى طلاقا لا تطلق، (فتح القدير، كتاب الطلاق، باب ايقاع الطلاق-4/4)

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *