প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম।
এক ওয়াজে শুনেছি যে, মা বাবা অসন্তুষ্ট থাকলে উক্ত ব্যক্তির নামায রোযা কোন কিছুই কবুল হয় না। যদি কবুল নাই হয়, তাহলে এমন ব্যক্তি নামায রোযা করে লাভ কী? তাহলে মা বাবা যতোদিন সন্তুষ্ট করতে না করতে পারে ততোদিন কি নামায রোযা না করেই থাকবে? যদি কবুল না হয়, তাহলে পড়েই বা লাভ কী?
বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। দয়া করে পরিস্কার করে জানালে কৃতার্থ হবো।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামায রোযার যিম্মাদারী আদায় করা এবং আদায়ের পর সেটি কবুল হওয়া দু’টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়।
সুতরাং মা বাবা অসন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় নামায রোযা আদায় করলে ব্যক্তির যিম্মা থেকে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। কিন্তু মা বাবা অসন্তুষ্ট থাকার কারণে তা কবুল হবে না। অর্থাৎ নামায পড়লে নামাযের ফরজিয়্যাত আদায় থেকে ব্যক্তি দায়িত্বমুক্ত হবে। রোযা আদায় করলে রোযার ফরজ দায়িত্ব থেকে সে মুক্ত হয়ে যাবে।
আর উক্ত ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যেহেতু ভিন্ন বিষয়, তাই উক্ত ব্যক্তি উপরোক্ত ইবাদতের সওয়াব পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকবে মা বাবা অসন্তুষ্ট থাকার কারণে।
সুতরাং বুঝা গেল যে, মা বাবা অসন্তুষ্ট থাকলেও নামায রোযাসহ সকল ইবাদত আপন স্থানে ব্যক্তির উপর ফরজ থাকে। তাই তা আদায় না করার কোন সুযোগ নেই। পড়া ও আদায় করা আবশ্যক। তবে পড়লে সওয়াব পাবে না, কিন্তু না পড়ার আযাব থেকে বেঁচে যাবে।
এমন ব্যক্তি ইবাদতগুলো আদায়ের সাথে মা বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট করার পূর্ণ চেষ্টা বাকি রাখবে। দুআ করতে থাকবে। কিন্তু কোন ফরজ ইবাদত তরক বা বর্জন করা যাবে না।
عن ثوبان عن النبى صلى الله عليه وسلم قال: ثلاثة لا ينفع معهن عمل الشرك بالله وعقوق الوالدين والفرار من الزحف (المعجم الكبير للطبرانى-2/95، رقم-1420)
عن ابى أمامة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ثلاثة لا يقبل منهم يوم القيامة صرف ولا عدل، عاق ومنان ومكذوب بقدر(المعجم الكبير للطبرانى-8/119، رقم-7547)
قوله صرفا ولا عدلا: اختلف فى تفسيرها، فعند الجمهور الصرف الفريضة والعدل النافلة، قال عياض: معناه لا يقبل قبول رضا وإن قبل قبول جزاء إلى ما قال وأنه لا يلزم من نفى القبول نفى الصحة وهذا كالصلاة فى الدار المغصوبة فإنها صحيحة أى مجزئه غيرمقبولة أى لا ثواب عليها فى القول الصحيح فلا يلزم من نفى القبول نفى الصحة (فتح الملهم، اشرفية-3/403-404)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com