প্রশ্নঃ
আমি একজন অনার্সে পড়ি। আমার কিছু মেয়ে স্টুডেন্ট রয়েছে যারা ক্লাস টেনে পড়ে আমি কি তাদের পড়াতে পারবো বা পড়ানোর সময় তারা কি চেহার খোলা রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে আমার করনীয় কি?
প্রশ্নকর্তা:
মেহরাজ সিদ্দিকি
ফরীদগঞ্জ।
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا ومصليا و مسلما
উত্তরঃ
গায়রে মাহরাম শিক্ষকের সাথে প্রাপ্ত বয়স্ক বা নিকটবর্তী প্রাপ্ত বয়স্ক স্টুডেন্ট পর্দা করা ফরজ। সুতরাং চেহারা খোলা রেখে উক্ত শিক্ষকের কাছে পড়া কোনভাবেই বৈধ নয়।
এক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে, মেয়েদের শিক্ষা-দীক্ষার জন্য উত্তম চরিত্রের অধিকারী কোন মহিলা শিক্ষিকার কাছে পড়বে। যদি এমন অভিজ্ঞ ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী কোন মহিলা শিক্ষিকা না পাওয়া যায়, তাহলে পূর্ণ শরঈ পর্দার সাথে উত্তম চরিত্রের অধিকারী কোন পুরুষ শিক্ষকের কাছে পড়তে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও একজন গার্ডিয়ানের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন জরুরী। যাতে করে পরবর্তীতে অপ্রীতিকর কোন ঘটনার সম্মুখীন না হতে হয়।
প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই! আপনার উচিত কোন ছেলে স্টুডেন্ট বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে পড়ানো। হাদীসের মধ্যে আসছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّهُ: سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ، وَلاَ تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ»
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন পুরুষ যেন অপর কোন মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান না করে, কোন স্ত্রীলোক যেন কোন মাহরাম সঙ্গী ব্যতীত সফর না করে। (সহীহুল বুখারী, নং ২৭৯৮)
একান্ত উপায় না থাকলে, আল্লাহর ভয় অন্তরে রেখে পর্দার হুকুম মেনে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে পড়াতে পারবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِہِمۡ وَیَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَہُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَزۡکٰی لَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ
وَقُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنٰتِ یَغۡضُضۡنَ مِنۡ اَبۡصَارِہِنَّ وَیَحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَہُنَّ وَلَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَہُنَّ اِلَّا مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَلۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِہِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِہِنَّ ۪ وَلَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَہُنَّ اِلَّا لِبُعُوۡلَتِہِنَّ اَوۡ اٰبَآئِہِنَّ اَوۡ اٰبَآءِ بُعُوۡلَتِہِنَّ اَوۡ اَبۡنَآئِہِنَّ اَوۡ اَبۡنَآءِ بُعُوۡلَتِہِنَّ اَوۡ اِخۡوَانِہِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اِخۡوَانِہِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اَخَوٰتِہِنَّ اَوۡ نِسَآئِہِنَّ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُنَّ اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡہَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَلَا یَضۡرِبۡنَ بِاَرۡجُلِہِنَّ لِیُعۡلَمَ مَا یُخۡفِیۡنَ مِنۡ زِیۡنَتِہِنَّ ؕ وَتُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ جَمِیۡعًا اَیُّہَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
মুমিন পুরুষদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য শুদ্ধতর। তারা যা-কিছু করে আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত।
এবং মুমিন নারীদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং নিজেদের ভূষণ অন্যদের কাছে প্রকাশ না করে, যা আপনিই প্রকাশ পায় তা ছাড়া এবং তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল নিজ বক্ষদেশে নামিয়ে দেয় এবং নিজেদের ভূষণ যেন স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাতিজা, ভাগিনেয়, আপন নারীগণ, যারা নিজ মালিকানাধীন, যৌনকামনা নেই এমন পুরুষ খেদমতগার এবং নারীদের গোপনীয় অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া আর কারও সামনে প্রকাশ না করে। মুসলিম নারীদের উচিত ভূমিতে এভাবে পদক্ষেপ না করা, যাতে তাদের গুপ্ত সাজ জানা হয়ে যায়। হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর।
সূরা নূর ২৪ঃ ৩১- ৩০,
أحکام القرآن للجصاص: (النور)
“قال الجصاص: تحت قوله: “ولا یضربن بأرجلهن لیعلم ما یخفین من زینتهن” الآیة: وفیه دلالة علی أن المرأة منهیة عن رفع صوتها بالکلام بحیث یسمع ذلک الأجانب، إذ کان صوتها أقرب إلی الفتنة عن صوت خلخالها”.
حجة الله البالغة: (ذکر العورات، 328/2)
“اعلم أنه لما کان الرجال یهیّجهم النظر إلی النساء علی عشقهن والتوجه بهن، ویفعل بالنساء مثل ذلک، وکان کثیرًا ما یکون ذلک سببًا؛ لأن یبتغي قضاء الشهوۃ منهن علی غیر السنة الراشدة، کاتباع من ہي في عصمة غیرہ، أو بلا نکاح، أو غیر اعتبار کفاءۃ، والذي شوهد من هذا الباب یغني عما سطر في الدفاتر، اقتضت الحکمة أن یسد هذا الباب”.
الأشباہ و النظائر: (147/1)
“درأ المفاسد أولي من جلب المصالح، فإذا تعارضت مفسدة ومصلحة قدم دفع المفسدة غالباً”.
الدر المختار: (مطلب في ستر العورۃ، 79/2)
“وتمنع المرأة الشابة من کشف الوجه بین الرجال لا لأنه عورۃ؛ بل لخوف الفتنة”.
رد المحتار: (617/1، ط: دار الفكر- بيروت)
“ومفهومه: جوازه على العجوز، بل صرحوا بجواز مصافحتها عند أمن الشهوة”.
و فيه أيضًا: (368/6، ط: دار الفكر- بيروت)
“في الشفاء عن الكرميني: العجوز الشوهاء والشيخ الذي لايجامع مثله بمنزلة المحارم”.
و فیه ایضاً: (مطلب في ستر العورة: 1/ 406، ط: دار الفکر- بیروت)
وأقره البرهان الحلبي في شرح المنية الكبير ، وكذا في الإمداد ؛ ثم نقل عن خط العلامة المقدسي : ذكر الإمام أبو العباس القرطبي في كتابه في السماع : ولا يظن من لا فطنة عنده أنا إذا قلنا صوت المرأة عورة أنا نريد بذلك كلامها ، لأن ذلك ليس بصحيح ، فإذا نجيز الكلام مع النساء للأجانب ومحاورتهن عند الحاجة إلى ذلك ، ولا نجيز لهن رفع أصواتهن ولا تمطيطها ولا تليينها وتقطيعها لما في ذلك من استمالة الرجال إليهن وتحريك الشهوات منهم ، ومن هذا لم يجز أن تؤذن المرأة .ا ه .قلت : ويشير إلى هذا تعبير النوازل بالنغمة”.
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুহা. শাহাদাত হুসাইন , ছাগলনাইয়া, ফেনী।
সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী হাফি.
পরিচালক– তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।
প্রধান মুফতী: জামিয়াতুস সুন্নাহ লালবাগ, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী