প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের মৌখিক স্বীকারোক্তি ছাড়া কি বিয়ে হয়?

প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের মৌখিক স্বীকারোক্তি ছাড়া কি বিয়ে হয়?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম

দয়া করে আমার প্রশ্নের উত্তরটি দেবেন অনেক বিপদে পড়ে প্রশ্নটি করছি।

নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চাইছি, দয়া করে উত্তর দেবেন প্লিজ।

১৪, ১৫ বছর বয়সে মানুষের প্ররোচনায় এসে এক মেয়ে অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে ফেলে, বিয়ের পরেই মেয়ে আর ছেলে আলাদা থাকে ( বৈবাহিক কোনো সম্পর্ক হয়নি, ২,৩ ঘন্টার জন্যও তারা একা একসাথে ছিলো না) মেয়ে বিয়ের বিষয়ে অবুঝ ছিলো, বিয়ে আদৌ হয়েছে কিনা জানতো না। ছেলেকে অনেক বার জিজ্ঞেস করার পরও ছেলে বলেছে বিয়ে হয়নি। ( কেননা বিয়ের সময় মেয়ে কবুল বলেনি, তার অভিভাবকও ছিলো না,  নকল কাগজ দিয়ে বিয়ে করা হয়। সেজন্যই মেয়ে বিয়ে হয়েছে কিনা বুঝতে পারেনি। তেমন জ্ঞান ছিলো না।

ছেলেকে জিজ্ঞেস করার পরও বার বার বিয়ে অস্বীকার করে এবং সে আরেকটা বিয়েও করে ( মেয়ে এটা অনেক পরে জানতে পারে।

মেয়ে ওর কথা বিশ্বাস করে,  বিয়ে হয়নি মেনে নেয়।

৪-৫ বছর পর বিয়ে হয়নি এটা ভেবে সেই মেয়ে পারিবারিকভাবে অন্য জায়গায় বিয়ে করে। পড়ে মনে আগের বিয়ে নিয়ে সন্দেহ থাকায় আবার প্রথম স্বামীকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে বিয়ে হয়েছে। ( প্রথম স্বামীর সাথে মেয়ের ৪-৫ বছর কোনো যোগাযোগ বা দেখা সাক্ষাৎ ছিলোনা) তারপর সেই স্বামীর কাছে মেয়ে তালাক চায় এবং সে তালাক দিতে রাজি হয় ( সে বলে তোমাকে তালাক দিবো, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নিও। বার বার এমনটাই বলে) কিন্তু তালাক দিতে টাকা খরচ হবে বা দেনমোহর দিতে হতে পারে বলে সে আগাতে চায়নি ( মুখে সম্মতি দিয়েছে তালাকের জন্য এবং বলেছে তুমি তালাক দাও ) পরে মেয়ে ছেলের কাছে তালাকের চিঠি পাঠায় এবং ছেলে সেটা গ্রহণ করে। ( কাজী অফিসের মাধ্যমে তালাক করানো হয়।

মেয়ের তালাকের আগে অজান্তে যে বিয়ে হয়েছে পারিবারিক ভাবে সেটার জন্য তওবা করে এবং তালাকের ৩-৪ দিন পর বাবা মা সহ মসজিদে গিয়ে দ্বিতীয় স্বামীকে আবার বিয়ে করে।

আমার প্রশ্ন: তালাক টা কি সঠিক হয়েছে? কেননা প্রথম স্বামীর সম্মতি ছিলো। তালাকের কাগজ পেয়ে বরং খুশি হয়েছিল।

আর মেয়ে তালাকের পর যে দ্বিতীয় বিবাহ করলো তা কি জায়েজ বা বৈধ ইসলামে?

(প্রথম স্বামী হারাম পথে রোজগার করে, অন্য মেয়েদের সাথে মেলামেশা, অনেক হারাম কাজে লিপ্ত এজন্যই দিনি কথা ভেবে মেয়ে ওমন পরিবেশে থাকতে চায়নি। বিয়ের ৪,৫ বছরে প্রথম স্বামী মেয়ের কোনো খোঁজ খবর নেয়নি, ভোরন পোশন দেয়নি যদিও মেয়ে কোথায় থাকে জানতো, মেয়ের বাবার ঠিকানাও জানতো। একই শহরে বসবাস বলতে গেলে মেয়ের বাবার কর্মস্থান একই এলাকায়। ছেলেটা মেয়েটাকে ফাদে ফেলে নিজের সর্থের জন্য বিয়ে করে এসব জানতে পেরে মেয়ে দূরে সরে যায়)

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে প্রথমত প্রথম বিয়েটাই সম্পন্ন হয়নি। যেহেতু মেয়েটা কবুল বলেনি।

তারপরও যদি প্রথম কথিত স্বামীর কথা সত্য হয় যে, বিয়ে হয়েছিল, তারপরও যেহেতু তালাকের অধিকার প্রদান করা হয়েছে, সেই অধিকার বলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করে নেয়ার দ্বারা তালাক হয়ে গেছে। তারপর আবার দ্বিতীয় স্বামীকে বিয়ে করার দ্বারা বিয়েটা সম্পন্ন হয়ে গেছে।

সুতরাং এ বিষয়ে আর কোন প্রকার সন্দেহ সংশয় রাখা যাবে না। কথিত প্রথম স্বামীর সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করা উক্ত মহিলার জন্য জায়েজ হবে না।

 

عن ابن عباس، ان النبى صلى الله عليه وسلم قال: الأيم أحق بنفسها من وليها، والبكر تستأذن فى نفسها (صحيح مسلم، كتاب النكاح، باب استيذان الثيب فى النكاح بالنطق والبكر بالسكوت، النسخة الهندية-1/455، بيت الأفكار، رقم-1421)

عن ابن عباس أن جارية بكرا أتت النبى صلى الله عليه وسلم، فذكرت أن أباها زوجها وهى كارهة، فخيرها النبى صلى الله عليه وسلم (سنن ابى داود، كتاب النكاح، باب فى البكر زوجها أوبها ولا يستئامرها، النسخة الهندية-1/284، دار السلام، رقم-2096)

لا ينفذ عقد الولى بغير رضاها عندنا (البحر الرائق، كتاب النكاح، باب الأولياء والاكفاء، زكريا-3/194، كويته-3/110)

يال ينفظ عقد الولى بغير استئمار….توقف على رضاها (رد المحتار، زكريا-4/159، كرتاشى-3/58) 

إن الذى يملك الطلاق إنما هو الزوج…. ولا تلملكه الزوجة إلا بتوكيل من الزوج أو تفويض منه  (الفقه الأسلامى وأدلته-7/347، 355)


وفي رد المحتار- وأنواعه ثلاثة : تفويض ، وتوكيل ، ورسالة وألفاظ التفويض ثلاثة : تخيير وأمر بيد ، ومشيئة .(قال لها اختاري أو أمرك بيدك ينوي ) تفويض ( الطلاق ) لأنها كناية فلا يعملان بلا نية ( أو طلقي نفسك فلها أن تطلق في مجلس علمها به ) مشافهة أو إخبارا …….( إلا إذا زاد ) في قوله طلقي نفسك وأخواته ( متى شئت أو متى ما شئت أو إذا شئت أو إذا ما شئت ) فلا يتقيد بالمجلس ( ولم يصح رجوعه ) لما مر (رد المحتار-كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-4/452)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

ঘুম থেকে উঠে কাপড়ে মজি দেখলে হুকুম কী?

প্রশ্ন আমি অনেক সময় ফজরে ঘুম থেকে উঠে দেখি হালকা তরল পদার্থ ( রঙ পানির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস