প্রশ্ন
প্রশ্নকারীর নাম: আব্দুলাহ
ঠিকানা: Serpur
জেলা/শহর: Nokla
দেশ: Bangladesh
প্রশ্নের বিষয়: হামাস যোদ্ধা ও ইজরাইলের পণ্য সম্পর্কে
বিস্তারিত:
—————-
জনাব মুফতী সাহেব আপনার নিকট আমার আরজ এই যে বর্তমানে দখলদার ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী হামাস দলটি কি প্রকৃত মুজাহিদ? এবং ইসরাইলের তৈরি পন্য ব্যবহারের হুকুম কি?
কোরআন ও হাদিসের আলোকে জানিয়ে উপকৃত করবেন?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
হামাস যোদ্ধারা যেহেতু মুসলমান। আর ফিলিস্তিনে বহিরাগত দুশমনরা আক্রমণ করেছে। তাই সেখানকার সকলের জন্যই মুসলিম অধ্যুষিত ভূমি রক্ষা করার জিহাদে অংশগ্রহণ করা ফরজে আইন।
সেই ফরজে বিধান বাস্তবায়নকারী হামাস যোদ্ধারা অবশ্যই মুজাহিদ। তবে তাদের আদর্শ যদি ইসলাম কায়েম না হয়, তাহলে সেটাকে জুলুমের প্রতিবাদে মজলুমের প্রতিরোধ হিসেবেও সওয়াবের কাজ হিসেবে পরিগণিত। আর এটাও জিহাদের অন্তর্ভূক্ত বিষয়। সুতরাং এক্ষেত্রেও তারা মারা গেলে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।
আর যদি ইসলামী খিলাফাত কায়েমের নিয়তে করে থাকে, তাহলে এটি ইসলামের প্রকৃত জিহাদের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে তারা প্রকৃত মুজাহিদ হিসেবে গণ্য হবেন।
যেহেতু ইজরাইলী পণ্য ক্রয় করার দ্বারা তাদের এক প্রকার সহযোগিতা করা হয়। যার উপার্জিত অর্থ দিয়ে দ্বারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, গোলাবারুদ ইত্যাদিতে ব্যবহার করছে। তাই ইজরাইলী পণ্য বয়কট করা ঈমানের দাবী। সেই সাথে মুসলমানদের জন্য এটা আত্মমর্যাদার বিষয়।
সুতরাং ইজরাইলী পণ্য নির্দিষ্ট করে তা বয়কট করা প্রতিটি ঈমানদারদের জন্য জরুরী।
أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ [٢٢:٣٩]
যাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা হচ্ছে, তাদেরকে অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে (তারা নিজেদের প্রতিরক্ষার্থে যুদ্ধ করতে পারে)। যেহেতু তাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে জয়যুক্ত করতে পরিপূর্ণ সক্ষম। [সূরা হজ্জ-৩৯]
وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ [٢:١٩٠]
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ [٢:١٩١]
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। [সূরা বাকারা-১৯০-১৯১]
قال بعضهم: الجهاد قبل النفير تطوع وبعد النفير يصير فرض عين، وعامة الماشئخ رحمهم الله تعالى قالوا: الجهاد فرض على كل حال، غير أنه قبل النفير فرض كفاية، وبعد النفير فرض عين، هو الصحيح، ومعنى التفسير أن يخبر أهل مدينة ان العدو قد جاء يريد أنفسكم وذراريكم وأموالكم فإذا أخبروا على هذا الوجه افترض على كل من قدر على الجهاد من أهل تلك البلدة أن يخرج للجهاد (الفتاوى الهندية-2/188، جديد-2/205، رد المحتار، زكريا-6/199، كرتاشى-4/122)
عن سعيد بن زيد عن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال : « من قتل دون ماله فهو شهيد ومن قتل دون أهله أو دون دمه أو دون دينه فهو شهيد
হযরত সাঈদ বিন যায়েদ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-“যে ব্যক্তি নিজ সম্পত্তি রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ পরিবার রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। অথবা প্রাণ রক্ষায় কিংবা দ্বীন রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৭৭৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬৫২)
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। [সুরা মায়েদা-২]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com